ঢাকা ১০:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মঙ্গলে না গেলে বিলুপ্ত হবে মানবজাতি

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্কঃ

শৈশবেই তিনি তৈরী করেছিলেন এটম স্ম্যাশার। পরে তিনি হন স্ট্রিং থিওরি প্রণেতাদের একজন। বর্তমান বিজ্ঞানীদের মধ্যে অন্যতম পরিচিত মুখ মিচিও কে কু। তিনি বিজ্ঞানের উপর অনেকগুলো ‘বেস্টসেলিং’ বই লিখেছেন। আর বিবিসি, ডিসকভারি ইত্যাদির মতো বিখ্যাত সব টিভি চ্যানেলে বক্তা হিসাবে হাজির হয়েছেন। সম্প্রতি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ম্যাগাজিনের সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছেন, এই পৃথিবী একদিন মানুষের বসবাসের জন্য একেবারেই অযোগ্য হয়ে যাবে। তাই বিলুপ্তির হাত থেকে মানবজাতিকে বাঁচাতে হলে অবশ্যই মঙ্গলে বসতি গড়ার চিন্তা করতে হবে।

তার এই বক্তব্য কতটুকু বাস্তবসম্মত তা নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। তারপরেও নিজের দাবিতে অনড় আছেন এই বিজ্ঞানী। তার মতে, এখন যতই তর্ক করা হোক না কেন, এটাই একদিন সত্য বলে প্রমাণিত হবে। তার সাড়া জাগানো ‘দ্য ফরচুন অব হিউম্যানিটি’ গ্রন্থে তিনি স্পষ্ট ভাষায় লিখেছেন, মানুষের ভবিষ্যত পৃথিবীতে নয়—মঙ্গলে। এমন মন্তব্য তিনি কেন করলেন সে ব্যাপারে বলেন, বিষয়টির গুরুত্ব বুঝেই কিন্তু বর্তমানের মাল্টি বিলিয়নাররা মহাকাশ পর্যটনের দিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। এলন মাস্ক স্পেস পর্যটনের ঘোষণা দিয়েছেন আরো আগেই। হয়তো আগামীতে মঙ্গল গ্রহেই ব্যালে ড্যান্সের আসর বসবে।

পৃথিবীতে বসবাসের আশা ত্যাগ করার সময় আসলেই এসেছে কি না এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত অসংখ্য প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে বিভিন্ন কারণে। সবাইকে মনে রাখতে হবে মানুষও একটি প্রাণী—অক্ষয় জীবন পাওয়া কোনো বিশেষ সৃষ্টি নয়। অন্য প্রাণী বিলুপ্ত হলে মানুষের ক্ষেত্রেও সেটা ঘটতে পারে। পরিবেশ প্রতিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে না পারলে বিলুপ্তি থেকে রেহাই নেই। বহু বছর আগে বিশাল বিশাল ডাইনোসররাও যখন বিলুপ্তির হুমকিতে পড়েছিল তখন তারাও বাঁচার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পারেনি। পৃথিবী ছেড়ে তাদের কোথাও যাবার যায়গা যদি থাকতো তবে এখনো হয়তো তাদের দেখা মিলতো।

জিওগ্রাফিককে মিচিও বলেন, ডাইনোসরদের যুগে তাদের বিলুপ্তির পেছনে একাধিক কারণ ছিল। ভবিষ্যতে পৃথিবী থেকে মানব জাতির বিলুপ্তির জন্য বড় ভূমিকা পালন করবে গ্লোবাল ওয়ার্মিং, পরমাণু শক্তির লড়াই এবং জিনগত পরিবর্তন লাভ করা জীবানু। এ জাতীয় জীবানু একসময় এতই শক্তিশালী হবে যে কোনো এন্টিবায়োটিকও তাদের কাবু করতে পারবে না। তখন কারো শরীরে একবার আক্রমণ করলেই তাকে না মেরে ক্ষান্ত হবে না। বর্তমানে পৃথিবী থেকে বহু প্রাণের বিলুপ্তির ‘চক্র’ চলছে। একদিন মানুষেরও এই চক্রে পড়ার পালা আসবে। তাই ‘ব্যাকআপ প্ল্যান’ হিসাবে মানব জাতিকে মঙ্গলে স্থানান্তরের চিন্তা করতে হবে।

তবে মঙ্গলে বসবাসের কিছু অসুবিধাও হবে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। শ্বাসপ্রশ্বাস জনিত সমস্যা ছাড়াও  সেখানকার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পৃথিবীর মাত্র ৩০ শতাংশ। তাই পৃথিবীতে যেখানে কষ্টেসৃষ্টে শূন্যে একবার ডিগবাজি খেতে গেলে ঘাম ছুটে যায় সেখানে মঙ্গলে শূণ্যে ছয় সাত পাক দেয়া যাবে! তিনি বলেছেন, তার কথাগুলো আজ অনেকে হেসে উড়িয়ে দিলেও একদিন তাকে ধন্যবাদ জানাবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির ১৭ বছর পর বিজয় দিবস উদযাপন

মঙ্গলে না গেলে বিলুপ্ত হবে মানবজাতি

আপডেট সময় ০২:২৯:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মার্চ ২০১৮
তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্কঃ

শৈশবেই তিনি তৈরী করেছিলেন এটম স্ম্যাশার। পরে তিনি হন স্ট্রিং থিওরি প্রণেতাদের একজন। বর্তমান বিজ্ঞানীদের মধ্যে অন্যতম পরিচিত মুখ মিচিও কে কু। তিনি বিজ্ঞানের উপর অনেকগুলো ‘বেস্টসেলিং’ বই লিখেছেন। আর বিবিসি, ডিসকভারি ইত্যাদির মতো বিখ্যাত সব টিভি চ্যানেলে বক্তা হিসাবে হাজির হয়েছেন। সম্প্রতি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ম্যাগাজিনের সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছেন, এই পৃথিবী একদিন মানুষের বসবাসের জন্য একেবারেই অযোগ্য হয়ে যাবে। তাই বিলুপ্তির হাত থেকে মানবজাতিকে বাঁচাতে হলে অবশ্যই মঙ্গলে বসতি গড়ার চিন্তা করতে হবে।

তার এই বক্তব্য কতটুকু বাস্তবসম্মত তা নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। তারপরেও নিজের দাবিতে অনড় আছেন এই বিজ্ঞানী। তার মতে, এখন যতই তর্ক করা হোক না কেন, এটাই একদিন সত্য বলে প্রমাণিত হবে। তার সাড়া জাগানো ‘দ্য ফরচুন অব হিউম্যানিটি’ গ্রন্থে তিনি স্পষ্ট ভাষায় লিখেছেন, মানুষের ভবিষ্যত পৃথিবীতে নয়—মঙ্গলে। এমন মন্তব্য তিনি কেন করলেন সে ব্যাপারে বলেন, বিষয়টির গুরুত্ব বুঝেই কিন্তু বর্তমানের মাল্টি বিলিয়নাররা মহাকাশ পর্যটনের দিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। এলন মাস্ক স্পেস পর্যটনের ঘোষণা দিয়েছেন আরো আগেই। হয়তো আগামীতে মঙ্গল গ্রহেই ব্যালে ড্যান্সের আসর বসবে।

পৃথিবীতে বসবাসের আশা ত্যাগ করার সময় আসলেই এসেছে কি না এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত অসংখ্য প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে বিভিন্ন কারণে। সবাইকে মনে রাখতে হবে মানুষও একটি প্রাণী—অক্ষয় জীবন পাওয়া কোনো বিশেষ সৃষ্টি নয়। অন্য প্রাণী বিলুপ্ত হলে মানুষের ক্ষেত্রেও সেটা ঘটতে পারে। পরিবেশ প্রতিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে না পারলে বিলুপ্তি থেকে রেহাই নেই। বহু বছর আগে বিশাল বিশাল ডাইনোসররাও যখন বিলুপ্তির হুমকিতে পড়েছিল তখন তারাও বাঁচার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পারেনি। পৃথিবী ছেড়ে তাদের কোথাও যাবার যায়গা যদি থাকতো তবে এখনো হয়তো তাদের দেখা মিলতো।

জিওগ্রাফিককে মিচিও বলেন, ডাইনোসরদের যুগে তাদের বিলুপ্তির পেছনে একাধিক কারণ ছিল। ভবিষ্যতে পৃথিবী থেকে মানব জাতির বিলুপ্তির জন্য বড় ভূমিকা পালন করবে গ্লোবাল ওয়ার্মিং, পরমাণু শক্তির লড়াই এবং জিনগত পরিবর্তন লাভ করা জীবানু। এ জাতীয় জীবানু একসময় এতই শক্তিশালী হবে যে কোনো এন্টিবায়োটিকও তাদের কাবু করতে পারবে না। তখন কারো শরীরে একবার আক্রমণ করলেই তাকে না মেরে ক্ষান্ত হবে না। বর্তমানে পৃথিবী থেকে বহু প্রাণের বিলুপ্তির ‘চক্র’ চলছে। একদিন মানুষেরও এই চক্রে পড়ার পালা আসবে। তাই ‘ব্যাকআপ প্ল্যান’ হিসাবে মানব জাতিকে মঙ্গলে স্থানান্তরের চিন্তা করতে হবে।

তবে মঙ্গলে বসবাসের কিছু অসুবিধাও হবে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। শ্বাসপ্রশ্বাস জনিত সমস্যা ছাড়াও  সেখানকার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পৃথিবীর মাত্র ৩০ শতাংশ। তাই পৃথিবীতে যেখানে কষ্টেসৃষ্টে শূন্যে একবার ডিগবাজি খেতে গেলে ঘাম ছুটে যায় সেখানে মঙ্গলে শূণ্যে ছয় সাত পাক দেয়া যাবে! তিনি বলেছেন, তার কথাগুলো আজ অনেকে হেসে উড়িয়ে দিলেও একদিন তাকে ধন্যবাদ জানাবে।