ঢাকা ০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নতুন বছরে খোলার আশা

জাতীয় :

প্রায় দেড় বছরের কাছাকাছি সময় ধরে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ রয়েছে। আশা করা হচ্ছিল চলতি বছরই খুলে যাবে সেটি। বছরের এ শেষ সময়ে আর খোলার সম্ভাবনা নেই বাংলাদেশের অন্যতম বৈদেশিক শ্রমবাজারটি। তবে খুব শিগগির সেটি খুলবে বলে আশা করছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।

মূলত দেশটিতে কর্মী পাঠানোর আশার আলো দুই দেশের টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠকের বৃত্তেই আটকে আছে। সেই বৃত্ত চলতি বছরের বাকি সময়ের মধ্যে ভাঙছে না। কেননা এ সময়ে আর কোনো বৈঠকের সম্ভাবনা নেই।

এ বিষয়ে প্রবাসী মন্ত্রী ইমরান আহমদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সমস্যাটা আমাদের না, মালেশিয়ার। ওই শ্রমবাজারের চাবি আমাদের হাতে নেই। থাকলে খুলে দিতাম। মালয়েশিয়ার বাজার শিগগিরই খুলবে, তবে আমি এখনই টাইমলাইন দিতে পারছি না।’

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ভাষ্যও মন্ত্রীর মতোই। তারা আরও  বলছেন, চলতি বছর আর বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য খুলছে না মালয়েশিয়ার বাজার। নতুন বছরের শুরুর দিকে বাজার খোলার সম্ভাবনা দেখছেন তারা।

বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য দ্রুততম সময়ে বাজার খোলার বিষয়ে ঐকমত্যের মধ্য দিয়ে গত ৬ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শেষ হয়। ওই বৈঠকে নভেম্বরের ২৪ ও ২৫ তারিখ ঢাকায় জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির পরের দফা আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

বৈঠকের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও শেষ সময়ে অভ্যন্তরীণ সমস্যা দেখিয়ে বৈঠক স্থগিত করে মালয়েশিয়া। পরে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বললে এখন পর্যন্ত কোনো আভাস দেয়নি দেশটি।

কুয়ালালামপুরের সঙ্গে ঢাকার জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক নিয়ে অপেক্ষা করতে আপত্তি নেই বাংলাদেশের। কারণ এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে পুনরায় মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর পথ খোলার আশা করা হচ্ছে। এ ছাড়াও আরও কয়েকটি কারণে এই বৈঠককে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে ঢাকা।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আহমেদ মুনিরুস সালেহীন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ঢাকা-কুয়ালালামপুরের জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক এ মাসে আর হচ্ছে না। নতুন বছরের আগে এই বৈঠকের সম্ভাবনা দেখছি না। তবে আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। আশা করি খুব দ্রুত মালয়েশিয়ার বাজার বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য খুলে যাবে।’

গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের কর্মী পাঠানো বন্ধ রয়েছে। মূলত বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার একটি সংঘবদ্ধ চক্রের একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণ আর অনৈতিক ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগে কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয় মালয়েশিয়া।

এরপর বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ কূটনৈতিক উপায়ে দেশটিতে শ্রম-বাজার উন্মুুক্ত করতে কয়েক দফা মালয়েশিয়া সফর করেন এবং গঠন করে দেন জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল। মালয়েশিয়া সরকারের মানবসম্পদ মন্ত্রী কুলাসেগারান বিভিন্ন সময় দেয়া তার বিবৃতিতে বারবার মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু বাংলাদেশি শ্রমিকদের অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয়ের কথা উল্লেখ করেন।

তারই ধারাবাহিকতায় গত ৩ নভেম্বর দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুরে দুই দেশের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মন্ত্রী ইমরান আহমদ বাংলাদেশের সাত-সদস্যের এবং মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম কুলাসেগারান তার দেশের আট-সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

মন্ত্রী পর্যায়ের ওই বৈঠকে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে ন্যূনতম অভিবাসন ব্যয় নিশ্চিত করা, কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়ায় দুই দেশের বেশিসংখ্যক রিক্রুটিং এজেন্সিকে যুক্ত করা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, কর্মীর সামাজিক ও আর্থিক সুরক্ষা এবং তথ্যভান্ডারের পরিসংখ্যান বিনিময়ের বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।

শুধু তাই নয়, কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিড়ম্বনা দূর করতে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যাত্রার আগে মাত্র একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার বিষয়ে দুই পক্ষ রাজি হয়েছে।

ওই সফরে দেশটির শ্রমবাজারে বাংলাদেশি কর্মীদের কর্মসংস্থান নিয়ে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ইমরান আহমদ। সাক্ষাতে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে বাংলাদেশের কর্মীদের বিভিন্ন খাতে নিয়োগের বিষয়ে মাহাথিরের সহযোগিতা কামনা করেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে কৃষক ও উদ্যোক্তাদের দিনব্যাপী কর্মশালা

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নতুন বছরে খোলার আশা

আপডেট সময় ১২:৪৭:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৯

জাতীয় :

প্রায় দেড় বছরের কাছাকাছি সময় ধরে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ রয়েছে। আশা করা হচ্ছিল চলতি বছরই খুলে যাবে সেটি। বছরের এ শেষ সময়ে আর খোলার সম্ভাবনা নেই বাংলাদেশের অন্যতম বৈদেশিক শ্রমবাজারটি। তবে খুব শিগগির সেটি খুলবে বলে আশা করছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।

মূলত দেশটিতে কর্মী পাঠানোর আশার আলো দুই দেশের টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠকের বৃত্তেই আটকে আছে। সেই বৃত্ত চলতি বছরের বাকি সময়ের মধ্যে ভাঙছে না। কেননা এ সময়ে আর কোনো বৈঠকের সম্ভাবনা নেই।

এ বিষয়ে প্রবাসী মন্ত্রী ইমরান আহমদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সমস্যাটা আমাদের না, মালেশিয়ার। ওই শ্রমবাজারের চাবি আমাদের হাতে নেই। থাকলে খুলে দিতাম। মালয়েশিয়ার বাজার শিগগিরই খুলবে, তবে আমি এখনই টাইমলাইন দিতে পারছি না।’

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ভাষ্যও মন্ত্রীর মতোই। তারা আরও  বলছেন, চলতি বছর আর বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য খুলছে না মালয়েশিয়ার বাজার। নতুন বছরের শুরুর দিকে বাজার খোলার সম্ভাবনা দেখছেন তারা।

বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য দ্রুততম সময়ে বাজার খোলার বিষয়ে ঐকমত্যের মধ্য দিয়ে গত ৬ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শেষ হয়। ওই বৈঠকে নভেম্বরের ২৪ ও ২৫ তারিখ ঢাকায় জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির পরের দফা আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

বৈঠকের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও শেষ সময়ে অভ্যন্তরীণ সমস্যা দেখিয়ে বৈঠক স্থগিত করে মালয়েশিয়া। পরে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বললে এখন পর্যন্ত কোনো আভাস দেয়নি দেশটি।

কুয়ালালামপুরের সঙ্গে ঢাকার জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক নিয়ে অপেক্ষা করতে আপত্তি নেই বাংলাদেশের। কারণ এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে পুনরায় মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর পথ খোলার আশা করা হচ্ছে। এ ছাড়াও আরও কয়েকটি কারণে এই বৈঠককে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে ঢাকা।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আহমেদ মুনিরুস সালেহীন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ঢাকা-কুয়ালালামপুরের জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক এ মাসে আর হচ্ছে না। নতুন বছরের আগে এই বৈঠকের সম্ভাবনা দেখছি না। তবে আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। আশা করি খুব দ্রুত মালয়েশিয়ার বাজার বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য খুলে যাবে।’

গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের কর্মী পাঠানো বন্ধ রয়েছে। মূলত বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার একটি সংঘবদ্ধ চক্রের একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণ আর অনৈতিক ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগে কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয় মালয়েশিয়া।

এরপর বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ কূটনৈতিক উপায়ে দেশটিতে শ্রম-বাজার উন্মুুক্ত করতে কয়েক দফা মালয়েশিয়া সফর করেন এবং গঠন করে দেন জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল। মালয়েশিয়া সরকারের মানবসম্পদ মন্ত্রী কুলাসেগারান বিভিন্ন সময় দেয়া তার বিবৃতিতে বারবার মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু বাংলাদেশি শ্রমিকদের অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয়ের কথা উল্লেখ করেন।

তারই ধারাবাহিকতায় গত ৩ নভেম্বর দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুরে দুই দেশের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মন্ত্রী ইমরান আহমদ বাংলাদেশের সাত-সদস্যের এবং মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম কুলাসেগারান তার দেশের আট-সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

মন্ত্রী পর্যায়ের ওই বৈঠকে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে ন্যূনতম অভিবাসন ব্যয় নিশ্চিত করা, কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়ায় দুই দেশের বেশিসংখ্যক রিক্রুটিং এজেন্সিকে যুক্ত করা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, কর্মীর সামাজিক ও আর্থিক সুরক্ষা এবং তথ্যভান্ডারের পরিসংখ্যান বিনিময়ের বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।

শুধু তাই নয়, কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিড়ম্বনা দূর করতে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যাত্রার আগে মাত্র একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার বিষয়ে দুই পক্ষ রাজি হয়েছে।

ওই সফরে দেশটির শ্রমবাজারে বাংলাদেশি কর্মীদের কর্মসংস্থান নিয়ে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ইমরান আহমদ। সাক্ষাতে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে বাংলাদেশের কর্মীদের বিভিন্ন খাতে নিয়োগের বিষয়ে মাহাথিরের সহযোগিতা কামনা করেন।