শামীম আহাম্মদ :
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়নের বাখরাবাদ গ্রামের চতুর্থ শ্রেনীতে পড়ুয়া শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ধৃত আলোচিত সেই ধর্ষক ছিদ্দিকুর রহমানকে শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মীয়-স্বজনরা হোমনা উপজেলার রামপুর গ্রাম থেকে ধরে এনে বৃহস্পতিবার রাতে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। সে ওই গ্রামের দুধ মিয়ার ছেলে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ছিদ্দিকুর রহমান (৬৫) নামে লম্পট মাতব্বর একই গ্রামের এক শিশুকে (১১) নানা ছলে, কৌশলে এবং বিশ টাকা দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বাড়ীর পাশের একটি জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষন করে। তবে কে বা কাহারা ঘটনাটি দেখে অজ্ঞাত স্থান থেকে ধর্ষনের ভিডিও চিত্র ধারণ করে। এ ভিডিও দেখিয়ে ধর্ষকের কাছ থেকে ইউপি সদস্য জীবন মিয়ার যোগশাজসে গ্রামের মাতব্বরগণ ধর্ষক ছিদ্দিকুর রহমানের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয় বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। তবে ওই টাকা থেকে ধর্ষিতার পরিবারকে এক টাকাও দেয়া হয়নি।
গত ৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার এ ঘটনা ঘটলেও স্থানীয় মাতব্বরগণ তা ধামাচাপা দিয়ে রাখে। গত বুধবার ওই শিশুকে ধর্ষনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়ে। ফেসবুকে এ ভিডিও দেখে ধর্ষক ছিদ্দিকুর রহমান গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। এতে এলাকায় বেশ বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃস্টি হয়। উক্ত ঘটনায় বুধবার ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে বাঙ্গরা বাজার থানায় একটি মামলা করে। বৃহস্পতিবার পুলিশ ওই গ্রামে গিয়ে ধর্ষিতাকে উদ্ধার করে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য কুমেক হাসপাতালে পাঠায়। ধর্ষিতার এক ভাই জানায়, ঘটনার পর মাতব্বরগণ আমাদের কিছু টাকা দিতে চেয়েছিল কিন্তু আমরা তা গ্রহন করিনি। আমরা ধর্ষকের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন পত্রিকা ও টেলিভিশনে প্রচার হলে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করার জন্য হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে। পলাতক ধর্ষক ছিদ্দিকুর রহমানকে বের করে দেওয়ার জন্য পুলিশ ধর্ষকের পরিবার ও তাদের আত্মীয়-স্বজনদের চাপ সৃষ্টি করে। নিরুপায় হয়ে আত্মীয়-স্বজনরা হোমনা উপজেলার চান্দেরচর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ধর্ষক ছিদ্দিকুর রহমানকে ধরে এনে বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ৮টায় রামচন্দ্রপুর কলেজের সামনে থাকা পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
এসআই নুরে আলমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তাকে ধৃত করে থানায় নিয়ে আসে।
বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা শিকার করে সাংবাদিকদের জানান, খবর পেয়ে অভিযোগ ছাড়াই আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার করে থানায় এনে অভিযোগ গ্রহন করেছি।