মো. শরিফুল আলম চৌধুরী:
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কাজিয়াতল (দ.) পাড়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি এত দিন হাজিরা খাতায় লেখা হতো। এখন থেকে বায়োমেট্রিক যন্ত্রে আঙুলের ছাপে উপস্থিতি গ্রহণ করা হবে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসায় প্রবেশ ও বের হওয়ার তথ্য তাৎক্ষণিক চলে যাবে তার অভিভাবকের মুঠোফোনে।
সোমবার বিকেলে এই ডিজিটাল হাজিরা পদ্ধতি উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে দারোরা ইউপির চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বিএসসি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসায় প্রবেশ ও বের হওয়ার মুহূর্তে অভিভাবকদের কাছে খুদে বার্তা চলে যাবে। এর ফলে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা কমবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দৈনিক ও সারা বছরের গড় উপস্থিতিও জানা যাবে। পর্যায়ক্রমে উপজেলার অন্য মাদ্রাসা ও বিদ্যালয়গুলোকেও ডিজিটাল হাজিরা পদ্ধতির আওতায় আনা হবে।
মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সাংবাদিক শরিফুল আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউপি সদস্য রমিজ উদ্দিন, মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মো. ইউনুস মিয়া সরকার, আওয়ামীলীগ নেতা খোরশেদ আলম, আনোয়ার হোসেন মাষ্টার, যুবলীগ নেতা আরিফুল ইসলাম শাহেদ ও মহি উদ্দিন সরকার প্রমূখ।
মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্রী ফাবিয়া তানজিনা আঙুলে ছাপ গ্রহণের মাধ্যমে মাদ্রাসাটিতে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা গ্রহণ শুরু হয়। সে বলে, উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কাজিয়াতল (দ.) পাড়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায়ই প্রথম এই পদ্ধতি চালু করা হলো। প্রথম তার আঙুলের ছাপ নেওয়া হলো। এতে সে গর্বিত।
মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, কাজিয়াতল ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় বর্তমানে ৫৪৭ জন পড়াশোনা করে। মাদ্রাসায় ১২ জন শিক্ষক-কর্মচারী আছেন। বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চলতি বছরের প্রথম থেকেই ডেটাবেইস তৈরির কাজ শুরু হয়। ডেটাবেইস তৈরি চলাকালে লাইব্রেরী কক্ষে বায়োমেট্রিক যন্ত্র স্থাপন করা হয়। যন্ত্র সরবরাহসহ কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে ঢাকার ওয়ান জিরো বিডি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সফিউল আলম তালুকদার বলেন, এই পদ্ধতি ব্যবহারে শ্রেণিশিক্ষকের কাজ কমে যাবে। ছাত্রীদের হাজিরার জন্য আর রোল নম্বর ধরে ডাকা লাগবে না। আর বায়োমেট্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে অভিভাবকেরা সন্তানদের গতিবিধি জানতে পারায় মাদ্রাসা স্কুল ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা আর থাকবে না।
মাদ্রাসাটিতে মোট দু’টি যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। কারিগরি সহায়তাদানকারী প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে উপজেলা সদর থেকে এসব যন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদি বিক্রয়োত্তর সেবা দেওয়া হবে। দারোরা ইউনিয়নে পুরো প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে।
মাদ্রাসার সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এই ব্যয় মেটানো হচ্ছে। তিনি বলেন, বায়োমেট্রিক পদ্ধতি পুরোপুরি চালু হলে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অনুপস্থিতির বিষয়টি খুব সহজে শনাক্ত করা যাবে। এ বিষয়ে খুদে বার্তার মাধ্যমে অভিভাবকদের মুঠোফোনে তথ্য চলে যাবে। বিশেষ করে অভিভাবকেরা সন্তানের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি দিতে পারবেন। সর্বোপরি শিক্ষার মানোন্নয়নে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।