ঢাকা ০১:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরের যাত্রাপুর ইউপিতে এক পাসওয়াডের্র ভোগান্তিতে আট মাস, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন বন্ধ!

শামীম আহম্মেদ, মুরাদনগরঃ

এক পাসওয়ার্ডের জন্য শত শত মানুষ ভোগান্তিতে আট মাস। এ চিত্র কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের। সার্ভার সমস্যা ও পাসওয়ার্ড ভূলে যাওয়ায় গত ৮ মাস ধরে উক্ত ইউনিয়নে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন হচ্ছে না। ফলে চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন শত শত লোকজন। এর ফলে সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছেন।

মোচাগড়া (দড়িপাড়া) গ্রামের মৃত হাজী রুক্কু মুন্সী খন্দকারের ছেলে ভূক্তভোগি খাইরুল আমিন খন্দকার বলেন, আমার মেয়ের জন্ম নিবন্ধন বাংলাতে আছে। ইংরেজিতে রূপান্তরিত করতে মার্চ মাসের শেষের দিকে যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব তাজুল ইসলাম ভান্ডারীর কাছে যাই। তিনি আমাকে আগামী সপ্তাহে আসতে বলেন। আমি তার দেওয়া তারিখ অনুযায়ী বার বার হাজির হলেও আমাকে সে জন্ম নিবন্ধন দিতে পারেনি। এ ভাবে দেম দিচ্ছি বলে সে আমাকে আড়াই মাস ঘুরিয়েছে। পরে জানতে পারি গত ডিসেম্বরেই তারা অনলাইন পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন। নিজেদের খামখেয়ালিপনার কারণে উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের কাছ থেকে পাসওয়ার্ডটি সংগ্রহ করে আনে নাই। আমাকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ভোগান্তিতে ফালানোর কারণে আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিষেক দাশকে গত জুন মাসে বিষয়টি অবহিত করি। তিনি আমাকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়ার দুই মাস অতিবাহিত হলেও আমার সমস্যা থেকেই গেল। সব কাগজপত্র ঠিক থাকার পরও ইংরেজি জন্ম নিবন্ধনের জন্য আমার মেয়ে এখন বিদেশে তার স্বামীর কাছে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

ডিসেম্বরে দায়িত্বে থাকা ইউপি সচিব কৃঞ্চ দেবনাথ বলেন, গত ডিসেম্বরে আমাদের সার্ভারে সমস্যা দেখা দেয়। সমস্যা শেষ হওয়ার পর পূর্বের পাসওয়ার্ড দিয়ে সার্ভার খোলা যাচ্ছে না। বিষয়টি ইউএনও স্যারের মাধ্যমে বেশ কয়েকবার পাসওয়ার্ড উদ্ধারের চেষ্টা করি। আমার বদলী হওয়ায় ৫ মার্চ কামাল্লা ইউনিয়নে চলে আসি।

বর্তমানে দায়িত্বে থাকা ইউপি সচিব তাজুল ইসলাম ভান্ডারী বলেন, আমি ৯ মার্চ যোগদানের পর পূর্বের সচিব কৃঞ্চ দেবনাথ থেকে জানতে পারি আমাদের সার্ভার সমস্যা পাসওয়ার্ডে কাজ হচ্ছে না। এলাকার লোকজন জন্ম নিবন্ধনের জন্য বিরক্ত করায় আমি ইউএনও স্যারের কাছে গিয়ে পাসওয়ার্ড উদ্ধারের চেষ্টা করি। সর্বশেষ আবারো গত ৩০ জুন ইউএনও স্যারের পরামর্শ অনুযায়ী একটি ফরম পূরণ করে আবেদন করি। আশা করি অচিরেই ফলাফল পাব।

যাত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ বিষয়ে ইউএনও স্যারের সাথে একাধিকবার দেখা করে কথা বলেছি, ফরম পূরণ করে আবেদন জমা দিয়েছি। পাসওয়ার্ড পাওয়া না যাওয়ায় জন্ম নিবন্ধন প্রাপ্তিদের সামাল দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ বলেন, সহসাই নতুন পাসওয়ার্ড পাওয়া যাবে। পাসওয়ার্ডটি পেলেই আগের মতো জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের কাজ করতে পারবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে ৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান মেলার পুরস্কার বিতরন অনুষ্ঠিত

মুরাদনগরের যাত্রাপুর ইউপিতে এক পাসওয়াডের্র ভোগান্তিতে আট মাস, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন বন্ধ!

আপডেট সময় ০৪:৪৬:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ অগাস্ট ২০২০

শামীম আহম্মেদ, মুরাদনগরঃ

এক পাসওয়ার্ডের জন্য শত শত মানুষ ভোগান্তিতে আট মাস। এ চিত্র কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের। সার্ভার সমস্যা ও পাসওয়ার্ড ভূলে যাওয়ায় গত ৮ মাস ধরে উক্ত ইউনিয়নে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন হচ্ছে না। ফলে চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন শত শত লোকজন। এর ফলে সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছেন।

মোচাগড়া (দড়িপাড়া) গ্রামের মৃত হাজী রুক্কু মুন্সী খন্দকারের ছেলে ভূক্তভোগি খাইরুল আমিন খন্দকার বলেন, আমার মেয়ের জন্ম নিবন্ধন বাংলাতে আছে। ইংরেজিতে রূপান্তরিত করতে মার্চ মাসের শেষের দিকে যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব তাজুল ইসলাম ভান্ডারীর কাছে যাই। তিনি আমাকে আগামী সপ্তাহে আসতে বলেন। আমি তার দেওয়া তারিখ অনুযায়ী বার বার হাজির হলেও আমাকে সে জন্ম নিবন্ধন দিতে পারেনি। এ ভাবে দেম দিচ্ছি বলে সে আমাকে আড়াই মাস ঘুরিয়েছে। পরে জানতে পারি গত ডিসেম্বরেই তারা অনলাইন পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন। নিজেদের খামখেয়ালিপনার কারণে উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের কাছ থেকে পাসওয়ার্ডটি সংগ্রহ করে আনে নাই। আমাকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ভোগান্তিতে ফালানোর কারণে আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিষেক দাশকে গত জুন মাসে বিষয়টি অবহিত করি। তিনি আমাকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়ার দুই মাস অতিবাহিত হলেও আমার সমস্যা থেকেই গেল। সব কাগজপত্র ঠিক থাকার পরও ইংরেজি জন্ম নিবন্ধনের জন্য আমার মেয়ে এখন বিদেশে তার স্বামীর কাছে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

ডিসেম্বরে দায়িত্বে থাকা ইউপি সচিব কৃঞ্চ দেবনাথ বলেন, গত ডিসেম্বরে আমাদের সার্ভারে সমস্যা দেখা দেয়। সমস্যা শেষ হওয়ার পর পূর্বের পাসওয়ার্ড দিয়ে সার্ভার খোলা যাচ্ছে না। বিষয়টি ইউএনও স্যারের মাধ্যমে বেশ কয়েকবার পাসওয়ার্ড উদ্ধারের চেষ্টা করি। আমার বদলী হওয়ায় ৫ মার্চ কামাল্লা ইউনিয়নে চলে আসি।

বর্তমানে দায়িত্বে থাকা ইউপি সচিব তাজুল ইসলাম ভান্ডারী বলেন, আমি ৯ মার্চ যোগদানের পর পূর্বের সচিব কৃঞ্চ দেবনাথ থেকে জানতে পারি আমাদের সার্ভার সমস্যা পাসওয়ার্ডে কাজ হচ্ছে না। এলাকার লোকজন জন্ম নিবন্ধনের জন্য বিরক্ত করায় আমি ইউএনও স্যারের কাছে গিয়ে পাসওয়ার্ড উদ্ধারের চেষ্টা করি। সর্বশেষ আবারো গত ৩০ জুন ইউএনও স্যারের পরামর্শ অনুযায়ী একটি ফরম পূরণ করে আবেদন করি। আশা করি অচিরেই ফলাফল পাব।

যাত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ বিষয়ে ইউএনও স্যারের সাথে একাধিকবার দেখা করে কথা বলেছি, ফরম পূরণ করে আবেদন জমা দিয়েছি। পাসওয়ার্ড পাওয়া না যাওয়ায় জন্ম নিবন্ধন প্রাপ্তিদের সামাল দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ বলেন, সহসাই নতুন পাসওয়ার্ড পাওয়া যাবে। পাসওয়ার্ডটি পেলেই আগের মতো জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের কাজ করতে পারবে।