ঢাকা ০৪:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরের হাট-বাজার গুলোতে নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব

মো: মোশাররফ হোসেন মনির:

প্রশাসনের নাকের ডগায় নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন শপিং ব্যাগে সয়লাব হয়ে গেছে কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার হাট-বাজারে। আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবাধে ব্যবহ্নিত হচ্ছে নিষিদ্ধ এই পলিব্যাগ। ফলে পলিথিন ও প্লাস্টিক জীববৈচিত্র্যের জন্যও মারাত্মক ক্ষতি ছাড়াও জনজীবন ও জনস্বাস্থের ক্ষতিকর প্রভাবসহ পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় ঘটাছে।

পলিথিন শপিং ব্যাগের ক্ষতিকারক বিষয়সমূহ বিবেচনা করে ২০০২ সালে সরকার সকল প্রকার পলিথিন শপিং ব্যাগ উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রয়, বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শন, মজুদ, বিতরণ, বাণিজ্যিক উদ্দেশে পরিবহন ও ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। এই প্রজ্ঞাপন জারির পর কিছুদিন পলিব্যাগ ব্যবহার থমকে পড়লেও সম্প্রতি আবার বিভিন্ন পন্থায় বাজারে চলে এসেছে এসব পলি ব্যাগ। ব্যবহারে নিষিদ্ধ হলেও আইন বাস্তবায়নে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ পরিলক্ষিত না হওয়ায় উপজেলায় সর্বত্র যত্রতত্রভাবে এখন পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এ নিষিদ্ধ পলিব্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে। মাছ, মাংস থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পণ্য সামগ্রীর সাথে এই ব্যাগ ফ্রি দেওয়া হচ্ছে।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ ও রামচন্দ্রপুর বাজারের কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী নিষিদ্ধ এই পলিব্যাগ মজুদ করে গোটা উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারের ব্যবসায়ীদের নিকট পাইকারী দরে বিক্রি করছে। পলিব্যাগ ব্যবহারের ফলে রাস্তাঘাট, নদী, নালা, ড্রেন ও মাটির গর্তে আবর্জনায় ছড়িয়ে পড়ছে। উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ছাড়াও রাস্তার পাশে ও পাড়া-মহল্লায় গড়ে ওঠা দোকানে পণ্যসামগ্রীর সাথে বিভিন্নরূপে পলিব্যাগের ব্যবহার দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাঝে-মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে দুই-একজন তথাকথিত নিষিদ্ধ এই পলিব্যাগ মজুদ ব্যবসায়ীকে জরিমানা করলেও আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় এর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে।

গত ৩০ই মে উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাজারে কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক তালুকদার অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় বিপুল পরিমানে পলিথিন মজুদ ও বিক্রির অভিযোগে মাহবুব স্টোর নামের দোকানটি সিলগালা করেন। সিলগালা করার কয়েকদিন পর দোকানের মালিক মাহবুব সিলগালা করা তালা ভেঙ্গে নিষিদ্ধ এই পলিথিন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রশাসনের সিলগালা ভেঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ায় জনমনে ক্ষোভ এবং উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। সচেতন মহল অভিযোগ আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় প্রকাশ্যে এভাবে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার হচ্ছে।

এ ব্যাপারে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিষেক দাশ বলেন, আমি এ উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে বিছোদিন আগে যোগদান করেছি। যারা পলিথিন ব্যাগ মজুদ করে বিক্রি করছে খুব শিঘ্রই চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক তালুকদার বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন শপিং ব্যাগের বিরোদ্ধে জেলা প্রশাসকের পক্ষ্য থেকে আমরা অভিযান চালিয়ে যাব। মুরাদনগর উপজেলায় সিলগালা করা দোকান ঘর খোলার বিষয়ে তিনি বলেন গত ৩০ই মে পরিবেশ আইনে আমরা ঐই দোকারে অভিযান পরিচালনা করেছি। তার দোকানে আমরা বিপুল পরিমানে পলিথিন মজুদ পেয়েছি। তবে দোকানে কাউকে পাওয়া যায়নি তখন দোকানটিকে সিলগালা করি। আমি শুনেছি বর্তমানে ওই ব্যবসায়ী দোকান খুলে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। আমরা শিগ্রই এই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়ায় মুরাদনগরে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ

মুরাদনগরের হাট-বাজার গুলোতে নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব

আপডেট সময় ০১:১১:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০১৯
মো: মোশাররফ হোসেন মনির:

প্রশাসনের নাকের ডগায় নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন শপিং ব্যাগে সয়লাব হয়ে গেছে কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার হাট-বাজারে। আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবাধে ব্যবহ্নিত হচ্ছে নিষিদ্ধ এই পলিব্যাগ। ফলে পলিথিন ও প্লাস্টিক জীববৈচিত্র্যের জন্যও মারাত্মক ক্ষতি ছাড়াও জনজীবন ও জনস্বাস্থের ক্ষতিকর প্রভাবসহ পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় ঘটাছে।

পলিথিন শপিং ব্যাগের ক্ষতিকারক বিষয়সমূহ বিবেচনা করে ২০০২ সালে সরকার সকল প্রকার পলিথিন শপিং ব্যাগ উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রয়, বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শন, মজুদ, বিতরণ, বাণিজ্যিক উদ্দেশে পরিবহন ও ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। এই প্রজ্ঞাপন জারির পর কিছুদিন পলিব্যাগ ব্যবহার থমকে পড়লেও সম্প্রতি আবার বিভিন্ন পন্থায় বাজারে চলে এসেছে এসব পলি ব্যাগ। ব্যবহারে নিষিদ্ধ হলেও আইন বাস্তবায়নে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ পরিলক্ষিত না হওয়ায় উপজেলায় সর্বত্র যত্রতত্রভাবে এখন পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এ নিষিদ্ধ পলিব্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে। মাছ, মাংস থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পণ্য সামগ্রীর সাথে এই ব্যাগ ফ্রি দেওয়া হচ্ছে।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ ও রামচন্দ্রপুর বাজারের কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী নিষিদ্ধ এই পলিব্যাগ মজুদ করে গোটা উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারের ব্যবসায়ীদের নিকট পাইকারী দরে বিক্রি করছে। পলিব্যাগ ব্যবহারের ফলে রাস্তাঘাট, নদী, নালা, ড্রেন ও মাটির গর্তে আবর্জনায় ছড়িয়ে পড়ছে। উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ছাড়াও রাস্তার পাশে ও পাড়া-মহল্লায় গড়ে ওঠা দোকানে পণ্যসামগ্রীর সাথে বিভিন্নরূপে পলিব্যাগের ব্যবহার দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাঝে-মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে দুই-একজন তথাকথিত নিষিদ্ধ এই পলিব্যাগ মজুদ ব্যবসায়ীকে জরিমানা করলেও আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় এর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে।

গত ৩০ই মে উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাজারে কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক তালুকদার অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় বিপুল পরিমানে পলিথিন মজুদ ও বিক্রির অভিযোগে মাহবুব স্টোর নামের দোকানটি সিলগালা করেন। সিলগালা করার কয়েকদিন পর দোকানের মালিক মাহবুব সিলগালা করা তালা ভেঙ্গে নিষিদ্ধ এই পলিথিন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রশাসনের সিলগালা ভেঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ায় জনমনে ক্ষোভ এবং উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। সচেতন মহল অভিযোগ আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় প্রকাশ্যে এভাবে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার হচ্ছে।

এ ব্যাপারে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিষেক দাশ বলেন, আমি এ উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে বিছোদিন আগে যোগদান করেছি। যারা পলিথিন ব্যাগ মজুদ করে বিক্রি করছে খুব শিঘ্রই চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক তালুকদার বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন শপিং ব্যাগের বিরোদ্ধে জেলা প্রশাসকের পক্ষ্য থেকে আমরা অভিযান চালিয়ে যাব। মুরাদনগর উপজেলায় সিলগালা করা দোকান ঘর খোলার বিষয়ে তিনি বলেন গত ৩০ই মে পরিবেশ আইনে আমরা ঐই দোকারে অভিযান পরিচালনা করেছি। তার দোকানে আমরা বিপুল পরিমানে পলিথিন মজুদ পেয়েছি। তবে দোকানে কাউকে পাওয়া যায়নি তখন দোকানটিকে সিলগালা করি। আমি শুনেছি বর্তমানে ওই ব্যবসায়ী দোকান খুলে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। আমরা শিগ্রই এই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।