মাহবুব আলম আরিফঃ
সকাল ১০টা ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতেই কিছু ভোটারের ভিড় চোখে পরলো ভোট গ্রহণ হচ্ছে ভেবে কাছে গিয়ে দেখা গেলো, না এখানে কোন ভোট গ্রহণ হচ্ছে না। নিদ্রিষ্ট ভোট কেন্দ্রেই চলছে ভোট গ্রহণ। এখানে প্রার্থী ভোটারদের কাছ থেকে ভোট ক্রয়ের চেস্টা করছে। পাশ কাটিয়ে একটু এগিয়ে দেখা গেলো আরো একটি ভিড়, না এখানে কেউ ভোট ক্রয়ের চেস্টা করছে না। এখানে চলছে কিভাবে জাল ভোট দেয়া যায় সেই প্রস্তুতি। এটি কোন জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিংবা কোন ইউপি নির্বাচনের কথা না। এটি মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্টুডেন্টস কাউন্সিল ২০১৮ এর কথা।
গত শনিবার সকাল ১০টায় সারা দেশের মতো কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায়ও প্রতিটি মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে স্টুডেন্টস কাউন্সিল ২০১৮।
কয়েকটি বিদ্যালয় ঘুড়ে প্রার্থীদের সাথে কথা বলে ভোট ক্রয় ও ভোট জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া যায়।
অবশ্য ভোট ক্রয় করতে লক্ষ লক্ষ টাকা দিতে হয়নি ভোটরদের শুধু একটু দামি চকলেট যে দিতে পেরেছে তাকেই ভোট দিয়েছে ভোটাররা। আর ন¤্র-ভদ্র ও মেধাবী ছাত্র/ছাত্রী হয়েও বিজয়ী হতে পারেনি অনেকেই। কারণ তারা ভোটারদের দামি চকলেট কিনে দিতে পারেনি। কিছু কিছু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেলো ভিন্ন রুপ তারা শুধু ভোটারদের দামি চকলেট দিয়েই সন্তুষ্ট নয় কিভাবে জাল ভোট দেয়া যায় সেই পরিকল্পনার ছকও আকছে।
এদিকে এই কাউন্সিলকে ঘিরে অভিবাবকরা বলছে ভিন্ন কথা, তাদের দাবি এই স্টুডেন্টস কাউন্সিলের মাধ্যমে বাচ্চাদের ভালো দিক রয়েছে তবে ভালো দিকের চাইতে খারাপ দিকই বেশি। এই কাউন্সিলের মাধ্যমে একটা বাচ্চা ১০-১২ বছরের মধ্যেই শিখছে কিভাবে গণতান্ত্রীক ভাবে ভোট দিতে হয় আবার অনেক বাচ্চারাই নির্বাচন কমিশনারের অংশ হিসেবে কাজ করেছে এটা অবশ্যই ভালো দিক। কিন্তু একটা ১০-১২ বছরের বাচ্চা যখন দামি চকলেটের বিনিময়ে ভোট কেনার মতো জঘন্য কাজে লিপ্ত হয়। তখন ভোটারও শিখছে প্রার্থী ভালো হোক কিংবা মন্দ যে ভালো চকলেট দিবে বিবেক বিচার ভূলে গিয়ে তাকেই ভোট দিবো।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছে, যে সারা দেশে যেহেতু এই স্টুডেন্টস কাউন্সিল চলছে তাই আমরাও করছি। আর এতে করে আমাদের বাচ্চারা শিখার সুযোগ পাচ্ছে কিভাবে গণতান্ত্রীক ভাবে ভোট দিতে হয়। দামি চকলেটের বিনিময়ে ভোট ক্রয়ের কথার জবাবে তারা বলেন আসলো আমাদের সমাজের প্রভাব এটা, কারণ একটা বাচ্চা ছোট থেকেই দেখছে বাংলাদেশের প্রতিটি নির্বাচনে তার পরিবারের লোকজন ভোট দেয়ার জন্য প্রার্থীরা তাদের বাসায় গিয়ে কিছু না কিছু দিয়ে আসছে। তাই সে সেখান থেকেই শিখেছে, যে আমাকেও বিজয়ী হতে হলে কিছু না কিছু দিতে হবে।
এটা এখন আমাদের সমাজের একটা মরণ ব্যাধি। এর সমাধাণ যানতে চাইলে, বলেন আমরা অবশ্যই বাচ্চাদের পাঠদানের পাশা-পাশি শিক্ষা দিতে হবে প্রকৃত ভালো মানুষকে ভোট দিলে আমাদের সমাজের কি উপকার হবে এবং সামান্য কিছু টাকার বিনিময়ে মন্দ মানুষকে ভোট দিলে সমাজের কতবড় ক্ষতি হবে।