ঢাকা ০৫:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে অবৈধ গ্যাস লাইন দিয়ে লাভবান ঠিকাদার:ভোগান্তিতে গ্রাহক

মুরাদনগর বার্তা ডেস্কঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের ভূবনঘর থেকে দড়িকান্দি পর্যন্ত ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে প্রায় ১৬শ’ ফুট অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা বাখরাবাদ গ্যাস কতৃপক্ষ। এতে বাসা-বাড়িতে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দেয়া প্রায় ৩শ’ পরিবারের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। এ সময় স্থানীয় জনগন কাঙ্খিত এ অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে মুরাদনগর উপজেলার সকল স্থানে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য ভ্রাম্যমান আদালতের নিকট দাবি করেন। তবে রহস্যজনক কারনে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উক্ত অবৈধ গ্যাস লাইন নির্মানে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনানুগ ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাখরাবাদ গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর লিমিটেডের অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করান অভিযান পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও মুরাদনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার সুমাইয়া মমিন। এতে বাখরাবাদের প্রায় ৩০ জন শ্রমিক অংশগ্রহণ করেছে।

দড়িকান্দি গ্রামের গ্রাহক কফিল উদ্দিন ও সহিদ মিয়াসহ ১০/১২ জন বলেন, ২০১৫ সালে আমরা ৮১ হাজার থেকে শুরু করে লক্ষাধিক টাকা দিয়ে প্রতিটি রাইজার সংগ্রহ করেছেন এলাকার প্রভাবশালী ব্যাক্তি ঠিকাদার হারুন অর রশিদ। গ্যাস কতৃপক্ষ অবৈধ ভাবে যারা গ্যাস সংযোগ দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে শুধু লাইন বিচ্ছিন করে গ্রাহকদের হয়রানি করা হচ্ছে। লাইন তারা অবিলম্বে অবৈধ গ্যাস সংযোগকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুল শিক্ষকসহ একাধীক ব্যাক্তি অভিযোগ করে বলেন, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও দালাল চক্র বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন দেবিদ্বার জোনাল অফিস ও জেলা অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজোসে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট উপজেলার ভূবনঘর, দড়িকান্দি, দুলারামপুর ১১হাজার ফুট, বোরারচর জাহাপুর ৩০হাজার ফুট, দড়িকান্দি ১ কিলোমিটার, করকটিয়া, সোনাপুর ২কিলোমিটার, সুবিলারচর ২কিলোমিটার, কোম্পানীগঞ্জ ৩কিলোমিটার, রানীমুহুরী, বড়ইয়াকুড়ি, বোরারচর ৬কিলোমিটার, নোয়াকান্দি ৯শ’ ফুট, ধামঘর ৩৫০ ফুট, পালাসুতা ৬০০০ফুট, পায়ব ২কিলোমিটার, শুশুন্ডা ৩কিলোমিটার, কুলুবাড়ি, বাখরনগর ৫কিলোমিটার, মধ্যনগর, করিমপুর ৩কিলোমিটার, নবীপুর ৩কিলোমিটার, নগরপাড় দেড় কিলোমিটার, গুঞ্জর ৩কিলোমিটার, পৈয়াপাথর দেড় কিলোমিটার ও নহল, রামনগর, ধামঘর ৩৬০০ফুট গ্যাস লাইনের মাধ্যমে অবৈধভাবে গ্যাসের আবাসিক সংযোগ দিয়ে সাধারন নিরিহ গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। অবৈধ গ্যাস সংযোগের একটি তালিকাসহ একটি অভিযোগ বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন, পেট্রোবাংলাসহ সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরে অভিযোগ দেওয়া হয়। যার পরিপেক্ষিতে বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন ও পেট্রোবাংলার প্রধান কার্যালয় থেকে পৃথক দুইটি তদন্ত দল সরেজমিনে তদন্ত করে সত্যতা পায় এবং সংশ্লিষ্ঠ দফতরে রির্পোট প্রধান করা হলেও অভিযোক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও অবৈধ গ্যাস লাইন গুলোর বিষয়ে কোন প্রকার প্রদক্ষে না নেওয়ায় জনগনের মধ্যে সংশ্লিষ্ঠদের প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরী হয়েছে।

অভিযুক্ত ঠিকাদার আরুন অর রশিদ বলেন, আমি কোন ঠিকাদার নই। আমার নামে কোন লাইসেন্স নেই। ভূবনঘর থেকে দড়িকান্দি পর্য়ন্ত গ্যাস লাইনটি আজিজুর রহমান রনির স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান মের্সাস মতি এন্টার প্রাইজ করেছে। আমি শুধু মধ্যস্থতা হিসেবে কাজ করেছি।

বাখরাবাদ গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর লিমিটেডের কুমিল্লা দপ্তরের ভিজিলেন্স শাখা জানান, দুইজন উপ-মহাব্যবস্থাপকের উপস্থিতিতে অভিযানে ১৩টি রাইজার ও এক হাজার ফুট পাইপ জব্ধ করা হয়েছে। আরো প্রায় অর্ধশতাধিক রাইজার ছিল। অভিযানের খবর পেয়ে গ্রাহকরা সরিয়ে ফেলে। সব অবৈধ গ্যাস লাইন পর্যায়ক্রমে বিচ্ছিন্ন করা হবে। নিয়মিত এ অভিযান চলবে। সংযোগ যারা দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির ১৭ বছর পর বিজয় দিবস উদযাপন

মুরাদনগরে অবৈধ গ্যাস লাইন দিয়ে লাভবান ঠিকাদার:ভোগান্তিতে গ্রাহক

আপডেট সময় ০৩:৫২:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ ২০২২

মুরাদনগর বার্তা ডেস্কঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের ভূবনঘর থেকে দড়িকান্দি পর্যন্ত ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে প্রায় ১৬শ’ ফুট অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা বাখরাবাদ গ্যাস কতৃপক্ষ। এতে বাসা-বাড়িতে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দেয়া প্রায় ৩শ’ পরিবারের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। এ সময় স্থানীয় জনগন কাঙ্খিত এ অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে মুরাদনগর উপজেলার সকল স্থানে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য ভ্রাম্যমান আদালতের নিকট দাবি করেন। তবে রহস্যজনক কারনে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উক্ত অবৈধ গ্যাস লাইন নির্মানে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনানুগ ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাখরাবাদ গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর লিমিটেডের অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করান অভিযান পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও মুরাদনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার সুমাইয়া মমিন। এতে বাখরাবাদের প্রায় ৩০ জন শ্রমিক অংশগ্রহণ করেছে।

দড়িকান্দি গ্রামের গ্রাহক কফিল উদ্দিন ও সহিদ মিয়াসহ ১০/১২ জন বলেন, ২০১৫ সালে আমরা ৮১ হাজার থেকে শুরু করে লক্ষাধিক টাকা দিয়ে প্রতিটি রাইজার সংগ্রহ করেছেন এলাকার প্রভাবশালী ব্যাক্তি ঠিকাদার হারুন অর রশিদ। গ্যাস কতৃপক্ষ অবৈধ ভাবে যারা গ্যাস সংযোগ দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে শুধু লাইন বিচ্ছিন করে গ্রাহকদের হয়রানি করা হচ্ছে। লাইন তারা অবিলম্বে অবৈধ গ্যাস সংযোগকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুল শিক্ষকসহ একাধীক ব্যাক্তি অভিযোগ করে বলেন, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও দালাল চক্র বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন দেবিদ্বার জোনাল অফিস ও জেলা অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজোসে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট উপজেলার ভূবনঘর, দড়িকান্দি, দুলারামপুর ১১হাজার ফুট, বোরারচর জাহাপুর ৩০হাজার ফুট, দড়িকান্দি ১ কিলোমিটার, করকটিয়া, সোনাপুর ২কিলোমিটার, সুবিলারচর ২কিলোমিটার, কোম্পানীগঞ্জ ৩কিলোমিটার, রানীমুহুরী, বড়ইয়াকুড়ি, বোরারচর ৬কিলোমিটার, নোয়াকান্দি ৯শ’ ফুট, ধামঘর ৩৫০ ফুট, পালাসুতা ৬০০০ফুট, পায়ব ২কিলোমিটার, শুশুন্ডা ৩কিলোমিটার, কুলুবাড়ি, বাখরনগর ৫কিলোমিটার, মধ্যনগর, করিমপুর ৩কিলোমিটার, নবীপুর ৩কিলোমিটার, নগরপাড় দেড় কিলোমিটার, গুঞ্জর ৩কিলোমিটার, পৈয়াপাথর দেড় কিলোমিটার ও নহল, রামনগর, ধামঘর ৩৬০০ফুট গ্যাস লাইনের মাধ্যমে অবৈধভাবে গ্যাসের আবাসিক সংযোগ দিয়ে সাধারন নিরিহ গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। অবৈধ গ্যাস সংযোগের একটি তালিকাসহ একটি অভিযোগ বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন, পেট্রোবাংলাসহ সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরে অভিযোগ দেওয়া হয়। যার পরিপেক্ষিতে বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন ও পেট্রোবাংলার প্রধান কার্যালয় থেকে পৃথক দুইটি তদন্ত দল সরেজমিনে তদন্ত করে সত্যতা পায় এবং সংশ্লিষ্ঠ দফতরে রির্পোট প্রধান করা হলেও অভিযোক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও অবৈধ গ্যাস লাইন গুলোর বিষয়ে কোন প্রকার প্রদক্ষে না নেওয়ায় জনগনের মধ্যে সংশ্লিষ্ঠদের প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরী হয়েছে।

অভিযুক্ত ঠিকাদার আরুন অর রশিদ বলেন, আমি কোন ঠিকাদার নই। আমার নামে কোন লাইসেন্স নেই। ভূবনঘর থেকে দড়িকান্দি পর্য়ন্ত গ্যাস লাইনটি আজিজুর রহমান রনির স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান মের্সাস মতি এন্টার প্রাইজ করেছে। আমি শুধু মধ্যস্থতা হিসেবে কাজ করেছি।

বাখরাবাদ গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর লিমিটেডের কুমিল্লা দপ্তরের ভিজিলেন্স শাখা জানান, দুইজন উপ-মহাব্যবস্থাপকের উপস্থিতিতে অভিযানে ১৩টি রাইজার ও এক হাজার ফুট পাইপ জব্ধ করা হয়েছে। আরো প্রায় অর্ধশতাধিক রাইজার ছিল। অভিযানের খবর পেয়ে গ্রাহকরা সরিয়ে ফেলে। সব অবৈধ গ্যাস লাইন পর্যায়ক্রমে বিচ্ছিন্ন করা হবে। নিয়মিত এ অভিযান চলবে। সংযোগ যারা দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।