ঢাকা ১০:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে আর্সি নদীতে বাঁধ নির্মাণ করে কৃষিজমির মাটি নিচ্ছে ইটভাটায়

মোঃ মোশাররফ হোসেন মনির:

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকবপুর ইউনিয়নের ঘোড়াশাল গ্রামের মেটংঘর-শ্রীকাইল সড়কের পুরাতন ব্রিজের পাশের আর্সি নদীতে বাঁধ নির্মাণ করে ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাঁধ নির্মানের ফলে চড়ম আকারে ব্যাহত হচ্ছে কৃষি জমিতে সেচ কাজ। ফসলি জমিতে ভেকু মেশিন বসিয়ে ২৫ থেকে ৩০ ফুট গর্ত করে মাটি কেটে নিচ্ছে ওই ক্ষমতাধর প্রভাবশালী মহলটি। এতে করে হুমকিতে পড়েঠে ঐ ইউনিয়নসহ আশে পাশের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের অধিকাংশ ফসলি জমি। এতো নদীতে বাঁধ নির্মাণ করে নদীর স্বাভাবিক গতি পথ বন্ধ করে দেওয়ায় উদ্বিগ্ন সচেতন মহল।

জানা যায়, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বঞাচলে বি-বাড়িয়া ও কুমিল্লা জেলার একটি নদী আর্সি নদী। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড পরিচিতি নাম্বার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল নদী নং ১। এটি বুড়ি নদীর একটি শাখা। যার নাম আর্সি নদী। এক সময় এ নদী দিয়ে যাত্রী ও মালবাহী শত শত নৌকা এবং ট্রলার চলাচল করতো। বর্তমানে একটি মাটিখেকোর সিন্ডিকেট নদীর মাঝে বাঁধ নির্মাণ করে। বাঁধের উপর দিয়ে প্রতিদিন ৮/১০টি ট্রাক্টর কৃষি জমির মাটি কেটে স্থানীয় সততা ব্রিকসের মাটি জোগান দিচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেটংঘর-শ্রীকাইল সড়কের পুরাতন ব্রিজের পাশের সততা বিক্র ফিল্ড নামক একটি ইটভাটা রয়েছে। সেই ইটভাটার মাটির জোগান দিতে নদীটির মাঝখান দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করে কেটে নিচ্ছেন সোনাকান্দা-ঘোড়াশাল বিলের শত শত হেক্টর কৃষি জমি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কৃষক জানায়, কৃষি কাজই আমাদের প্রধান পেশা। এ কাজ করেই আমরা জীবীকা নির্বাহ করি। কিন্তু ভূমিখেকো ইটভাটার মালিকরা আমাদের এ রুটি রুজিতে আঘাত করছে। এরা যে ভাবে কৃষি জমি নষ্ট করছে, তাতে কিছুদিন পর আমরা আর জমি খোঁজে পাবো না। প্রশাসন যদি এখনই কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তাহলে আমাদের ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে সততা ইটভাটা মালিক সহিদ মিয়া বলেন, আর্সি নদীতে মধ্যে বাধঁ প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে দিয়েছে কি না আমি জানিনা। আমরা শুধু কাজী আলম থেকে মাটি ক্রয় করি। আর্সি নদীতে বাধঁ দেওয়ার বিষয়টি কাজী আলমই বিস্তারিত বলতে পারবে।

ইট ভাটায় মাটি দেওয়ার মালিক কাজী আলম বলেন, এই বাধঁটি কয়েক বছর থেকেই চলে আসছে। সততা ইটভাটা আমি মাটি দিতাম কিন্তু ২ দিন থেকে মাটি দেওয়া বন্ধ রয়েছে। বাধঁ দেওয়া বিষয়টি অপরাধ, না অপরাদ বুঝিনা! বাধঁ দিয়ে ইটভাটায় মাটি দেই সেটাই বলতে পারব।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পাবেল খান পাপ্পু বলেন, এ ভাবে কৃষি জমি কেটে বিনষ্ট করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। ফসলি জমি রক্ষার্থে প্রশাসনকে আরো কঠোর হতে হবে। সম্মিলিত ভাবে সকলে এগিয়ে আসার পাশাপাশি সচেতন হতে হবে। অন্যথায় আগামী ১৫/২০ বছর পর কৃষি কাজ করার জন্য অনেক মাঠে জমি পাওয়া যাবে না।

এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দিন বলেন, বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি খুবই দু:খ জনক বিষয়। বিষয়টি খবর নিয়ে খুব দ্রæত নদীটি খুলে দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের মামলা প্রত্যাহারের দাবি ছাত্রদলের

মুরাদনগরে আর্সি নদীতে বাঁধ নির্মাণ করে কৃষিজমির মাটি নিচ্ছে ইটভাটায়

আপডেট সময় ০৬:৫৭:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

মোঃ মোশাররফ হোসেন মনির:

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকবপুর ইউনিয়নের ঘোড়াশাল গ্রামের মেটংঘর-শ্রীকাইল সড়কের পুরাতন ব্রিজের পাশের আর্সি নদীতে বাঁধ নির্মাণ করে ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাঁধ নির্মানের ফলে চড়ম আকারে ব্যাহত হচ্ছে কৃষি জমিতে সেচ কাজ। ফসলি জমিতে ভেকু মেশিন বসিয়ে ২৫ থেকে ৩০ ফুট গর্ত করে মাটি কেটে নিচ্ছে ওই ক্ষমতাধর প্রভাবশালী মহলটি। এতে করে হুমকিতে পড়েঠে ঐ ইউনিয়নসহ আশে পাশের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের অধিকাংশ ফসলি জমি। এতো নদীতে বাঁধ নির্মাণ করে নদীর স্বাভাবিক গতি পথ বন্ধ করে দেওয়ায় উদ্বিগ্ন সচেতন মহল।

জানা যায়, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বঞাচলে বি-বাড়িয়া ও কুমিল্লা জেলার একটি নদী আর্সি নদী। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড পরিচিতি নাম্বার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল নদী নং ১। এটি বুড়ি নদীর একটি শাখা। যার নাম আর্সি নদী। এক সময় এ নদী দিয়ে যাত্রী ও মালবাহী শত শত নৌকা এবং ট্রলার চলাচল করতো। বর্তমানে একটি মাটিখেকোর সিন্ডিকেট নদীর মাঝে বাঁধ নির্মাণ করে। বাঁধের উপর দিয়ে প্রতিদিন ৮/১০টি ট্রাক্টর কৃষি জমির মাটি কেটে স্থানীয় সততা ব্রিকসের মাটি জোগান দিচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেটংঘর-শ্রীকাইল সড়কের পুরাতন ব্রিজের পাশের সততা বিক্র ফিল্ড নামক একটি ইটভাটা রয়েছে। সেই ইটভাটার মাটির জোগান দিতে নদীটির মাঝখান দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করে কেটে নিচ্ছেন সোনাকান্দা-ঘোড়াশাল বিলের শত শত হেক্টর কৃষি জমি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কৃষক জানায়, কৃষি কাজই আমাদের প্রধান পেশা। এ কাজ করেই আমরা জীবীকা নির্বাহ করি। কিন্তু ভূমিখেকো ইটভাটার মালিকরা আমাদের এ রুটি রুজিতে আঘাত করছে। এরা যে ভাবে কৃষি জমি নষ্ট করছে, তাতে কিছুদিন পর আমরা আর জমি খোঁজে পাবো না। প্রশাসন যদি এখনই কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তাহলে আমাদের ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে সততা ইটভাটা মালিক সহিদ মিয়া বলেন, আর্সি নদীতে মধ্যে বাধঁ প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে দিয়েছে কি না আমি জানিনা। আমরা শুধু কাজী আলম থেকে মাটি ক্রয় করি। আর্সি নদীতে বাধঁ দেওয়ার বিষয়টি কাজী আলমই বিস্তারিত বলতে পারবে।

ইট ভাটায় মাটি দেওয়ার মালিক কাজী আলম বলেন, এই বাধঁটি কয়েক বছর থেকেই চলে আসছে। সততা ইটভাটা আমি মাটি দিতাম কিন্তু ২ দিন থেকে মাটি দেওয়া বন্ধ রয়েছে। বাধঁ দেওয়া বিষয়টি অপরাধ, না অপরাদ বুঝিনা! বাধঁ দিয়ে ইটভাটায় মাটি দেই সেটাই বলতে পারব।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পাবেল খান পাপ্পু বলেন, এ ভাবে কৃষি জমি কেটে বিনষ্ট করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। ফসলি জমি রক্ষার্থে প্রশাসনকে আরো কঠোর হতে হবে। সম্মিলিত ভাবে সকলে এগিয়ে আসার পাশাপাশি সচেতন হতে হবে। অন্যথায় আগামী ১৫/২০ বছর পর কৃষি কাজ করার জন্য অনেক মাঠে জমি পাওয়া যাবে না।

এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দিন বলেন, বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি খুবই দু:খ জনক বিষয়। বিষয়টি খবর নিয়ে খুব দ্রæত নদীটি খুলে দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।