ঢাকা ১২:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে একটি অসহায় পরিবারের বাঁচার আকুতি

মাহবুব আলম আরিফঃ

১ মেয়ে, ১ ছেলে, মা ও স্ত্রী নিয়ে গোছানো ছোট্ট একটি সুখের সংসার ইব্রাহিমের। একটি দোকানে দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন। প্রতি মাসে তার হাতে আসে ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা। তা দিয়ে পাঁচ জনের এই সংসার নিতান্ত কোনরকম ভাবে এই দিনমজুরের দিন কাটতো কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সদরের কাজী বাড়ির একটি ছোট ঘরে। বড় মেয়ে জান্নাত(৯) চতুর্থ শ্রেনীতে পরে। আর ছোট ছেলে আরাফাতকে(৫) স্কুলে পাঠাবে। ইব্রাহিমের স্বপ্ন ছিলো নিজে খেয়ে না খেয়ে সন্তানদের মানুষ করবেন। শিক্ষিত হিসেবে গড়ে তুলবেন, মেয়ের লেখা পড়া শেষে ভালো পাত্র দেখে বিয়ে দিবে আর ছেলে লেখা পড়া শেষে চাকুরী করে সংসারের হাল ধরবে। মেটাবেন অভাবের যন্ত্রনা। কিন্তু সব স্বপ্ন ভেংগে দিয়ে ইব্রাহিমের জীবনে নেমে এলো গভীর অন্ধকার।

গত বছরের মার্চ মাসে এক সড়ক দূর্ঘটনায় ইব্রাহিম ভর্তি হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসক জানালেন, রোগীকে বাঁচাতে হলে, ডান পা কেটে ফেলে দিতে হবে। তাকে সুস্থ্য করতে যে চিকিৎসা প্রয়োজন তা অনেক ব্যয়বহুল, খরচ হবে ৫ থেকে ৮ লক্ষ টাকা। কিন্তু এই পরিমান টাকা সংগ্রহ অসহায় পরিবারটির সেই সাধ্য কোথায়? পরিবারেতো রোজগার করার মতো কেউ নেই। একমাত্র উপার্জনক্ষম ইব্রাহিম অসুস্থ হওয়ায় পরিবারের স্ত্রী সন্তানের খাবার যোগান দেয়ার কেউ নেই। উপায়ান্তর না দেখে অবুঝ শিশুদের নিয়ে ছুটে চলেন এবাড়ি-ওবাড়ি। একটু সহযোগিতার জন্য। উপায় না পেয়ে নিজের ভিটে মাটি একটু ছিলো সেটি বিক্রয় করে পেয়েছেন ৮০ হাজার টাকা আর বাকি টাকা দোকানের মালিক ও দোকান মালিকের আত্মিয় স্বজনরা জোগার করে তার চিকিৎসা শেষ করে। চিকিৎসা শেষে ইব্রাহিম সুস্থ্য হয়েছে ঠিকই কিন্তু বর্তমানে তার একটি পা না থাকার কারণে ভারি কোন কাজ করতে পারছে না। টাকার অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে ছেলে, মেয়ের লেখাপড়া। প্রথম দিকে আত্মিয় স্বজনরা সহযোগীতা করলেও বর্তমানে সেটিও আর মিলছে না। তাই অন্যের বাসায় কাজ করে দু’মুঠো খাবার জোগাতে হিমসিম  খাচ্ছে মা ও স্ত্রীর।

ইব্রাহিম বলেন, মা আর স্ত্রী অন্যের বাড়ী কাজ করে যে টাকা পায় তা দিয়ে সংসার চালাতেই হিমসিম খেতে হয়। অন্যের কাছে হাত পেতে সহযোগীতা নিয়ে তো আর সারা জীবন পাড় কারা যায় না। সামাজের বৃত্তবানরা যদি একটু সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে আমাকে একটি দোকান ঘরের ব্যবস্থা করে দিতো তাহলে হয়তো আবার আমার সন্তানরা স্কুলে যেতে পারতো। মা ও স্ত্রীকে হয়তো আর অন্যের বাড়ী কাজ করতে হতোনা। গত কয়েক মাসে ধরে অনেক চেষ্টা করেছি মুরাদনগর বাজারে রাস্তার পাশে একটি ছোট্ট পান দোকান নিয়ে বসতে, কিন্তু যেখানেই পান দোকান নিয়ে বসতে যাই সেখানেই বাধা আসে।

এ অবস্থায় ইব্রাহিমের পরিবারটিকে সহযোগিতার জন্য সমাজের হৃদয়বান ও বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছে ইব্রাহিমের পরিবার।

সাহায্য পাঠানোর জন্য বিকাশ নম্বর: ০১৯৪৩৭০৯২২৫।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে একটি অসহায় পরিবারের বাঁচার আকুতি

আপডেট সময় ১২:৪০:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মার্চ ২০১৯
মাহবুব আলম আরিফঃ

১ মেয়ে, ১ ছেলে, মা ও স্ত্রী নিয়ে গোছানো ছোট্ট একটি সুখের সংসার ইব্রাহিমের। একটি দোকানে দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন। প্রতি মাসে তার হাতে আসে ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা। তা দিয়ে পাঁচ জনের এই সংসার নিতান্ত কোনরকম ভাবে এই দিনমজুরের দিন কাটতো কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সদরের কাজী বাড়ির একটি ছোট ঘরে। বড় মেয়ে জান্নাত(৯) চতুর্থ শ্রেনীতে পরে। আর ছোট ছেলে আরাফাতকে(৫) স্কুলে পাঠাবে। ইব্রাহিমের স্বপ্ন ছিলো নিজে খেয়ে না খেয়ে সন্তানদের মানুষ করবেন। শিক্ষিত হিসেবে গড়ে তুলবেন, মেয়ের লেখা পড়া শেষে ভালো পাত্র দেখে বিয়ে দিবে আর ছেলে লেখা পড়া শেষে চাকুরী করে সংসারের হাল ধরবে। মেটাবেন অভাবের যন্ত্রনা। কিন্তু সব স্বপ্ন ভেংগে দিয়ে ইব্রাহিমের জীবনে নেমে এলো গভীর অন্ধকার।

গত বছরের মার্চ মাসে এক সড়ক দূর্ঘটনায় ইব্রাহিম ভর্তি হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসক জানালেন, রোগীকে বাঁচাতে হলে, ডান পা কেটে ফেলে দিতে হবে। তাকে সুস্থ্য করতে যে চিকিৎসা প্রয়োজন তা অনেক ব্যয়বহুল, খরচ হবে ৫ থেকে ৮ লক্ষ টাকা। কিন্তু এই পরিমান টাকা সংগ্রহ অসহায় পরিবারটির সেই সাধ্য কোথায়? পরিবারেতো রোজগার করার মতো কেউ নেই। একমাত্র উপার্জনক্ষম ইব্রাহিম অসুস্থ হওয়ায় পরিবারের স্ত্রী সন্তানের খাবার যোগান দেয়ার কেউ নেই। উপায়ান্তর না দেখে অবুঝ শিশুদের নিয়ে ছুটে চলেন এবাড়ি-ওবাড়ি। একটু সহযোগিতার জন্য। উপায় না পেয়ে নিজের ভিটে মাটি একটু ছিলো সেটি বিক্রয় করে পেয়েছেন ৮০ হাজার টাকা আর বাকি টাকা দোকানের মালিক ও দোকান মালিকের আত্মিয় স্বজনরা জোগার করে তার চিকিৎসা শেষ করে। চিকিৎসা শেষে ইব্রাহিম সুস্থ্য হয়েছে ঠিকই কিন্তু বর্তমানে তার একটি পা না থাকার কারণে ভারি কোন কাজ করতে পারছে না। টাকার অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে ছেলে, মেয়ের লেখাপড়া। প্রথম দিকে আত্মিয় স্বজনরা সহযোগীতা করলেও বর্তমানে সেটিও আর মিলছে না। তাই অন্যের বাসায় কাজ করে দু’মুঠো খাবার জোগাতে হিমসিম  খাচ্ছে মা ও স্ত্রীর।

ইব্রাহিম বলেন, মা আর স্ত্রী অন্যের বাড়ী কাজ করে যে টাকা পায় তা দিয়ে সংসার চালাতেই হিমসিম খেতে হয়। অন্যের কাছে হাত পেতে সহযোগীতা নিয়ে তো আর সারা জীবন পাড় কারা যায় না। সামাজের বৃত্তবানরা যদি একটু সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে আমাকে একটি দোকান ঘরের ব্যবস্থা করে দিতো তাহলে হয়তো আবার আমার সন্তানরা স্কুলে যেতে পারতো। মা ও স্ত্রীকে হয়তো আর অন্যের বাড়ী কাজ করতে হতোনা। গত কয়েক মাসে ধরে অনেক চেষ্টা করেছি মুরাদনগর বাজারে রাস্তার পাশে একটি ছোট্ট পান দোকান নিয়ে বসতে, কিন্তু যেখানেই পান দোকান নিয়ে বসতে যাই সেখানেই বাধা আসে।

এ অবস্থায় ইব্রাহিমের পরিবারটিকে সহযোগিতার জন্য সমাজের হৃদয়বান ও বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছে ইব্রাহিমের পরিবার।

সাহায্য পাঠানোর জন্য বিকাশ নম্বর: ০১৯৪৩৭০৯২২৫।