ঢাকা ০৪:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে কালবৈশাখীর ঝড়ে ২স্কুলসহ শতাধিক ঘর লন্ডভন্ড

শামীম আহম্মেদ, মুরাদনগর:

কুমিল্লার মুরাদনগরে শুক্রবার সন্ধ্যায় আকস্মিক কালবৈশাখী ঝড়, প্রবল বর্ষণে দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও একটি মসজিদসহ শতাধিক ঘরবাড়ি লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। এ ছাড়াও গাছপালা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে অনেক এলাকায় তার ছিড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে মানুষের ঘরে থাকা অপরিহার্য হলেও ঘর হারিয়ে অনেকে খোলা আকাশের নীচে মানবেতর বসবাস করছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কালবৈশাখীর ঝড়ে মুরাদনগর উপজেলার কামাল্লা, রঘুরামপুর, করিমপুর, মোচাগড়া, যাত্রাপুর, ভবানীপুর, নবীপুর, রাজনগর, বাঙ্গরা বজার থানার চন্দনাইল, সাহেদাগোপ, ধনপতিখোলা, রামচন্দ্রপুর, পীর কাশীমপুর, কাঘাতুয়া, সোনারামপুর, পিপড়িয়া কান্দা, চর মির্জাপুর গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ি, দোকান পাঠ ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হয়েছে। ঝড়ে চন্দনাইল উচ্চ বিদ্যালয়, পিপড়িয়াকান্দা ডা: মোহন মিয়া কে.জি স্কুল ও রাজনগর জামে মসিজিদের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে।
কাঘাতুয়া গ্রামের মৃত মানিক মিয়ার মেয়ে সোহাগী আক্তার বলেন, বাবার রেখে যাওয়া একমাত্র বসতঘরই ছিল আমার মাথা গোঁজার ঠাই। ঝড়ে সেই শেষ সম্বলটিও কেড়ে নিয়ে গেল। আমি এখন স্বামী ও সন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছি।

চন্দনাইল উচ্চ বিদ্যালয় ম্যনেজিং কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম চেয়ারম্যান বলেন, ঝড়ে চন্দনাইল উচ্চ বিদ্যালয়, পিপড়িয়াকান্দা ডা: মোহন মিয়া কে.জি স্কুলের চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে। এছাড়াও চন্দনাইল বাজারের ৫টি দোকানসহ আমার ইউনিয়নে প্রায় ১৯টি বসতঘর পড়ে গেছে। ঝড়ে বিদ্যুতের তার ছিড়ে যাওয়ায় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে আমাদের এখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

কামাল্লা ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ খান বলেন, বেশ কয়েকটি দোকানের টিনের চালা উড়ে গেছে। তাছাড়াও অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু গাছপালা উপড়ে পড়েছে।

যাত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজাদ কালাম আজাদ বলেন, আমার ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি দোকান ও ১০/১২টি ঘর পড়ে গেছে। গাছপালা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ সরকার বলেন, তার ইউনিয়নের প্রায় গ্রামের অনেকেরই বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমরা তাদের পাশে দাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছি।

কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ডিজিএম ফসিউল হক জাহাঙ্গীর বলেন, ঝড়ে ৬টি খুটি ভেঙ্গে পড়েছে। একটি ট্রান্সফর্মার বিকল হয়েছে। ৪০টি স্পটে বিদ্যুতের তার ছিড়ে গেছে। ঐসব এলাকায় বিকাল ৫টার মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জোর চেষ্টা চলছে।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ বলেন, ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে খোঁজ খবর নেওয়া হয়েছে। বজ্রপাতের সময় কেউ যাতে বাইরে না থাকে সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। ক্ষতিগ্রস্তরা আবেদন করলে সরকারের তরফ থেকে সহায়তা করা হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে ৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান মেলার পুরস্কার বিতরন অনুষ্ঠিত

মুরাদনগরে কালবৈশাখীর ঝড়ে ২স্কুলসহ শতাধিক ঘর লন্ডভন্ড

আপডেট সময় ০৪:৫২:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ এপ্রিল ২০২০

শামীম আহম্মেদ, মুরাদনগর:

কুমিল্লার মুরাদনগরে শুক্রবার সন্ধ্যায় আকস্মিক কালবৈশাখী ঝড়, প্রবল বর্ষণে দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও একটি মসজিদসহ শতাধিক ঘরবাড়ি লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। এ ছাড়াও গাছপালা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে অনেক এলাকায় তার ছিড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে মানুষের ঘরে থাকা অপরিহার্য হলেও ঘর হারিয়ে অনেকে খোলা আকাশের নীচে মানবেতর বসবাস করছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কালবৈশাখীর ঝড়ে মুরাদনগর উপজেলার কামাল্লা, রঘুরামপুর, করিমপুর, মোচাগড়া, যাত্রাপুর, ভবানীপুর, নবীপুর, রাজনগর, বাঙ্গরা বজার থানার চন্দনাইল, সাহেদাগোপ, ধনপতিখোলা, রামচন্দ্রপুর, পীর কাশীমপুর, কাঘাতুয়া, সোনারামপুর, পিপড়িয়া কান্দা, চর মির্জাপুর গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ি, দোকান পাঠ ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হয়েছে। ঝড়ে চন্দনাইল উচ্চ বিদ্যালয়, পিপড়িয়াকান্দা ডা: মোহন মিয়া কে.জি স্কুল ও রাজনগর জামে মসিজিদের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে।
কাঘাতুয়া গ্রামের মৃত মানিক মিয়ার মেয়ে সোহাগী আক্তার বলেন, বাবার রেখে যাওয়া একমাত্র বসতঘরই ছিল আমার মাথা গোঁজার ঠাই। ঝড়ে সেই শেষ সম্বলটিও কেড়ে নিয়ে গেল। আমি এখন স্বামী ও সন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছি।

চন্দনাইল উচ্চ বিদ্যালয় ম্যনেজিং কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম চেয়ারম্যান বলেন, ঝড়ে চন্দনাইল উচ্চ বিদ্যালয়, পিপড়িয়াকান্দা ডা: মোহন মিয়া কে.জি স্কুলের চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে। এছাড়াও চন্দনাইল বাজারের ৫টি দোকানসহ আমার ইউনিয়নে প্রায় ১৯টি বসতঘর পড়ে গেছে। ঝড়ে বিদ্যুতের তার ছিড়ে যাওয়ায় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে আমাদের এখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

কামাল্লা ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ খান বলেন, বেশ কয়েকটি দোকানের টিনের চালা উড়ে গেছে। তাছাড়াও অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু গাছপালা উপড়ে পড়েছে।

যাত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজাদ কালাম আজাদ বলেন, আমার ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি দোকান ও ১০/১২টি ঘর পড়ে গেছে। গাছপালা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ সরকার বলেন, তার ইউনিয়নের প্রায় গ্রামের অনেকেরই বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমরা তাদের পাশে দাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছি।

কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ডিজিএম ফসিউল হক জাহাঙ্গীর বলেন, ঝড়ে ৬টি খুটি ভেঙ্গে পড়েছে। একটি ট্রান্সফর্মার বিকল হয়েছে। ৪০টি স্পটে বিদ্যুতের তার ছিড়ে গেছে। ঐসব এলাকায় বিকাল ৫টার মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জোর চেষ্টা চলছে।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ বলেন, ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে খোঁজ খবর নেওয়া হয়েছে। বজ্রপাতের সময় কেউ যাতে বাইরে না থাকে সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। ক্ষতিগ্রস্তরা আবেদন করলে সরকারের তরফ থেকে সহায়তা করা হবে।