মাহবুব আলম আরিফ:
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের কাজিয়াতল গ্রামের পূর্বপাড়া এলাকায় মায়ে়ের সামনে হাত পা বেঁধে রাজু চন্দ্র(১৫) নামের এক কিশোরকে নির্মমভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে। ওই নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে এলাকায় ক্ষোভ ও নিন্দার ছড় বইছে।
এ ঘটনার পর নির্যাতনের শিকার কিশোরের বড় ভাই সজল চন্দ্র বিশ্বাস বৃহস্পতিবার বিকেলে মুরাদনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন । পুলিশ ওই রাতেই অভিযোক্ত আ’লীগ নেতা আবু তাহের কন্টাক্টরকে নারায়ণগঞ্জ পাকা রোড এলাকায় তার মেয়ের শশুর বাড়ী থেকে আটক করে পুলিশ।
নির্যাতনের শিকার কিশোর উপজেলার কাজিয়াতল গ্রামের রাখাল চন্দ্রের ছেলে রাজু চন্দ্র(১৫)। আর অভিযুক্ত আবু তাহের কন্টাক্টর(৬১) উপজেলার দারোরা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার বিকালে রাজু চন্দ্র বিশ্বাস মায়ের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে নিজ ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এ সময় আবু তাহের কৌতুহলবশত রাজুদের বাড়ি যান। রাজুকে উত্তেজিত অবস্থায় দেখে শীতের মধ্যে রাজুর জামা কাপড় খুলে হাত-পা বেঁধে বাড়ির আঙ্গিনায় ফেলে রাখেন আবু তাহের। এতে রাজু ক্ষীপ্ত হয়ে বাধাঁ অবস্থায় আবু তাহেরকে গালমন্দ করেন। ফলে আবু তাহের উত্তেজিত হয়ে রাজুকে তার মায়ের সামনে নির্যাতন করেন। তখন উপস্থিত কেউ গোপনে নির্যাতনের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে। পরে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ভিডিওটি ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, রাজুকে হাত-পা বেঁধে মুখে ও বুকে উপর্যুপরি লাথি মেরে ছুড়ে ফেল দেয় আবু তাহের। রাজু চিৎকার করে কান্না করলেও মেলেনি নিস্তার।
রাজুর বড় ভাই সজল চন্দ্র অভিযোগ করে বলেন, ভাইয়ের ওপর এমন অমানবিক নির্যাতনের বিচার চেয়ে এলাকার গণ্যমান্যদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে আমরা ক্লান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে আমি বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় মামলা করি।
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মনজুর আলম জানান, নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার বিকেলে একটি মামলা হলে ওই দিন রাতেই মুরাদনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত নাহিদ আহাম্মেদের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোরশেদসহ একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। শুক্রবার দুপুরে তাকে কুমিল্লা জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।