ঢাকা ০৭:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে কৃষি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায় : ৩ ফসলি জমি বিলীন

হাবিবুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার মুরাদনগরে ভেকু দিয়ে তিন ফসলি জমির উর্ভর মাটি ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছে একটি চক্র। ভূমিখেকোদের রুঁখে দিতে না পারলে কৃষি জমি বিলীন হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এ ভাবে কৃষি জমি বিলীন করলেও প্রশাসন কোন প্রকার ব্যবস্থা না নেওয়ায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সুধীজনদের মতে মাটি আমাদের মা। সেই মাকে আমাদেরই রক্ষা করতে হবে। নিজের স্বার্থের জন্য এ ভাবে জমির মাটি কেটে নিলে কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের পরিনতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ছালিয়াকান্দি বাজারের দক্ষিণ পাশে মেসার্স মনির ব্রিকস ফিল্ড নামে একটি ইটভাটা রয়েছে। প্রতিদিন ২০/২২টি ট্রাক্টর দিয়ে পাশের ফসলি জমি থেকে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে সেই ইটভাটায় জোগান দিচ্ছে। এতে করে তিন ফসলি কৃষি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি বালুর স্তুপে অন্ধকারচ্ছন্ন হচ্ছে এলাকা। মারাত্বক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। বেপরোয়া সিন্ডিকেটে কৃষি নির্ভর কৃষকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করাতো দূরের কথা ভয়েও মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কৃষক জানায়, আমরা এ জমিগুলোতে বছরে তিন বার ধান চাষ করে থাকি। কৃষি কাজই আমাদের আয়ের উৎস। কিন্তু ভূমিখেকো ইটভাটার মালিকরা আমাদের এ রুটি রুজিতে আঘাত করছে। তাদের এই বেপরোয়া কর্মকান্ডে আমরা কৃষি জমি হারাচ্ছি। যে ভাবে তারা কৃষি জমি কেটে নিচ্ছে কিছু দিনের মধ্যেই আমরা বেকার হয়ে পড়ব। প্রশাসন যদি দ্রুত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তাহলে আমাদের ফসলি জমি ড্রেজার ভেকুর গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
ইটভাটার মালিক মনির হোসেন বলেন, কৃষি জমির মালিক জসিম উদ্দিনের কাছ থেকে ট্রাক হিসেবে আমি মাটি ক্রয় করেছি। সে হিসেবে জসিম আমার ইটভাটায় মাটি দিচ্ছে।

কৃষি জমির মালিক জসিম উদ্দিন বলেন, আমি জমি কিনে মাটি বিক্রি করেছি। আপনারা যা পারেন করেন। সকলকে ম্যানেজ করেই আমি কাজ করছি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন আহমেদ সোহাগ বলেন, এ ভাবে কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। কৃষি প্রধান দেশে ভূমিখেকোরা যে ভাবে তিন ফসলি জমি বিনষ্ট করছে, তাদের এখনই লাগাম টেনে ধরতে না পারলে যেমনি উৎপাদন ব্যাহত হবে, তেমনি কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আপনার কাছ থেকে জেনেছি। ২/১ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নিব।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রবাসীর বাড়ি ঘরে হামলা, নারীসহ আহত ৩

মুরাদনগরে কৃষি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায় : ৩ ফসলি জমি বিলীন

আপডেট সময় ১০:২৯:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ এপ্রিল ২০২২

হাবিবুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার মুরাদনগরে ভেকু দিয়ে তিন ফসলি জমির উর্ভর মাটি ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছে একটি চক্র। ভূমিখেকোদের রুঁখে দিতে না পারলে কৃষি জমি বিলীন হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এ ভাবে কৃষি জমি বিলীন করলেও প্রশাসন কোন প্রকার ব্যবস্থা না নেওয়ায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সুধীজনদের মতে মাটি আমাদের মা। সেই মাকে আমাদেরই রক্ষা করতে হবে। নিজের স্বার্থের জন্য এ ভাবে জমির মাটি কেটে নিলে কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের পরিনতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ছালিয়াকান্দি বাজারের দক্ষিণ পাশে মেসার্স মনির ব্রিকস ফিল্ড নামে একটি ইটভাটা রয়েছে। প্রতিদিন ২০/২২টি ট্রাক্টর দিয়ে পাশের ফসলি জমি থেকে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে সেই ইটভাটায় জোগান দিচ্ছে। এতে করে তিন ফসলি কৃষি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি বালুর স্তুপে অন্ধকারচ্ছন্ন হচ্ছে এলাকা। মারাত্বক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। বেপরোয়া সিন্ডিকেটে কৃষি নির্ভর কৃষকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করাতো দূরের কথা ভয়েও মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কৃষক জানায়, আমরা এ জমিগুলোতে বছরে তিন বার ধান চাষ করে থাকি। কৃষি কাজই আমাদের আয়ের উৎস। কিন্তু ভূমিখেকো ইটভাটার মালিকরা আমাদের এ রুটি রুজিতে আঘাত করছে। তাদের এই বেপরোয়া কর্মকান্ডে আমরা কৃষি জমি হারাচ্ছি। যে ভাবে তারা কৃষি জমি কেটে নিচ্ছে কিছু দিনের মধ্যেই আমরা বেকার হয়ে পড়ব। প্রশাসন যদি দ্রুত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তাহলে আমাদের ফসলি জমি ড্রেজার ভেকুর গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
ইটভাটার মালিক মনির হোসেন বলেন, কৃষি জমির মালিক জসিম উদ্দিনের কাছ থেকে ট্রাক হিসেবে আমি মাটি ক্রয় করেছি। সে হিসেবে জসিম আমার ইটভাটায় মাটি দিচ্ছে।

কৃষি জমির মালিক জসিম উদ্দিন বলেন, আমি জমি কিনে মাটি বিক্রি করেছি। আপনারা যা পারেন করেন। সকলকে ম্যানেজ করেই আমি কাজ করছি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন আহমেদ সোহাগ বলেন, এ ভাবে কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। কৃষি প্রধান দেশে ভূমিখেকোরা যে ভাবে তিন ফসলি জমি বিনষ্ট করছে, তাদের এখনই লাগাম টেনে ধরতে না পারলে যেমনি উৎপাদন ব্যাহত হবে, তেমনি কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আপনার কাছ থেকে জেনেছি। ২/১ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নিব।