মো: মোশাররফ হোসেন মনিরঃ
কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলায় পুলিশি অভিযানের মুখে মাদক নিয়ন্ত্রনে এলেও হঠাৎ করে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হত্যার ঘটনা ক্রমশই বেড়েই চলছে। ফেব্রুয়ারী মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত এ ছয় মাসে ছয়টি টি হত্যাকান্ড ঘটেছে। তবে পুলিশ ছয় মাসে বিপুল পরিমান মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে। এ সময়ে ৮টি বিভিন্ন যানবাহন, মাদক বিক্রির নগদ অর্থ ও চোরাচালানের অভিযোগে ৯৫টি মামলাসহ ১৩৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় মাদক বিক্রির নগদ ১৩হাজার ১শত নগদ টাকাসহ ৮১ লাখ ৬১ হাজার ৯’শ ৮০ টাকার মাদক ও ৮টি বিভিন্ন যানবাহন আটক করে।
সম্প্রতি বেশ কিছু হত্যার ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে উপজেলার সাধারণ মানুষের মধ্যে। প্রতিটি মৃত্যুর পরই থানায় মামলা হয়েছে। এবং বেশ কিছু আসামিকে পুলিশ আটক করলেও আদৌ মামালাগুলো আলোর মুখ দেখবে কিনা তা জানে না নিহতের স্বজনরা। আদিপত্য রক্ষায় গলাকেটে, মারামাড়ি, ঘাড়ি চাপা, অস্ত্রের আঘাতে এ ঘটনা গুলো ঘটেছে।
স্থানীয়দের দাবি রাজনৈতিক, আদিপত্যে বিভিন্ন জটিলতা ও টানাপড়ন ও যুব সমাজ নেশার মরণ ছোবলে জরিয়ে যাওয়ার কারনে এধরনের নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটছে।
জানা যায়, উপজেলার গাঙ্গেরকোট গ্রামে পুত্রের হাতে পিতার খুন, রহিমপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে আ’লীগের দুই কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা, উপজেলা সদর থেকে অটোচালিত সিএনজি চালককে হোমনা উপজেলর একটি বাস তুলে নিয়ে হত্যা, উপজেলা সদরের উত্তর পাড়ায় বখাটেদের লাঠিপিটায় যুবক হত্যা। রায়তলা গ্রামে যৌতকের দাবীতে স্ত্রী সুমি আক্তারকে(২২) নির্যাতন চালিয়ে হত্যার মত চাঞ্চল্যকর ঘটনা ও রয়েছে। চাঞ্চল্যকর এসব হত্যাকান্ডের ঘটনায় পুলিশ কিছু আসামীদের গ্রেফতার করলেও অন্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
অপর দিকে গত ফেব্রুয়ারী থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত ছয় মাসে বিভিন্ন যানবাহন ও বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মুরাদনগর থান পুলিশ ৯২টি মাদকের মামলায় ১২৭জনকে গ্রেফতারসহ ১টি প্রাইভেটকার, ২টি মাইক্রোবাস, ১টি কার্ভাড ভ্যান, ১টি মোটরসাইকেল, ১টি সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, ১টি ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা ও ১টি পিকআপ গাড়ি, ৪ হাজার ২৫৩ পিছ ইয়াবা, ৭৬ কেজি ১৮০ গ্রাম গাজাঁ, ১৬৬ বোতল ফেন্সিডিল, ৭বোতল হুইস্কি, ৬০ লিটার দেশি মদ ও বিক্রির মাদক উদ্ধার করে। অপর দিকে চোরাচালানের ৩ টি মামলায় ৮ জনকে আটকসহ ভারতিয়য় শাড়ী ২ হাজার ৬৫২ পিছ, থ্রি পিছ ৫৬০টি লেহেঙ্গা ৪০ পিছ উদ্ধার করা হয়। যার অনুমানিক মূল্য ৫৮ লাখ ৬৮হাজার টাকা।
এ ব্যাপারে মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম বদিউজ্জামান সন্ত্রাসী, অবৈধ মাদকদ্রব্য ও সকল প্রকার অপরাধের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণাসহ এসব অপরাধ দমনে সকল ধরনের সহযোগিতা চেয়ে বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং মাদক নিয়ন্ত্রনের পুলিশ প্রশাসন সর্বদা তৎপর রয়েছে। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অধিকাংশ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও মাদক নির্মুলে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মাদক উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে সর্বোচ্চ। অপরাধ দমনে পুলিশ সক্রিয় রয়েছে।