সুমন সরকার, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার মুরাদনগরে রাস্তার উপর দিয়ে টানা ড্রেজার পাইপে শাহআলম সরকার নামে প্রান কেড়ে নিলো এক ব্যবসায়ীর আর এ ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন নিহতের ছেলে শহিদউল্লাহ সরকার।
মঙ্গলবার (২০ জুলাই) রাতে উপজেলার আমিনগর মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাহআলম সরকার পাশ্ববর্তি হোমনা উপজেলার মাইজচর গ্রামের মৃত. আতাব আলীর ছেলে। রাত পোহালেই ঈদ, দিবেন কুরবানি, পরিবার নিয়ে ঈদের আননেন্দর ভাগাভাগির কথা ছিলো শাহআলমের পরিবারের কিন্তু সেই ঈদের আনন্দ এখন পরিবারে রূপ নিয়েছে বিষাদে। ঈদের দিন সকালে লাশ এলো বাড়িতে শাহআলমের। এই দূর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পরলে এলাকায় শোকের মাতমে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠে।
জানা যায়, নিহত শাহআলম সরকার ব্যবসা করতেন পাশ্ববর্তী বাঞ্চামরামপুর উপজেলার ফরদাবাদ শান্তির বাজারে। আর এ ব্যবসার কাছে সহযোগীতা করতেন তার ছেরৈ শহিদউল্লাহ সরকার। প্রতিদিনের ন্যায় মঙ্গলবার রাতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে ছেলে শহিদুল্লাহ সরকারকে সাথে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে, রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়নের আমিন নগর মোড়ে সড়কের উপর দিয়ে (স্পিড ব্রেকারের) মত টানা ড্রেজার পাইপে ধাক্কা লাগে তাদের মোটরসাইকেলটির। এসময় প্রায় ২০ ফুট দূড়ে গিয়ে বাবা ছেলে ছিটকে পরে। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ঈদের দিন সকালে শাহআলম সরকারের মৃত্যু হয়।
ঈদের দিন দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে, বাড়ির উঠানে খাটিয়ায় বাবার লাশ, পাশের ঘরে মুমূর্ষু অবস্থায় কাতরাচ্ছে ছেলে শহিদুল্লাহ সরকার। বাবার লাশের সাথে তাকেও হসপিটাল থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল পরে তার অবস্থার অবনতি হলে আবারও তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান স্বজনরা। ঈদের দিন বাদ আসর নামাজের পর শাহআলম সরকারের জানাজা শেষে গ্রামের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, ঘটনার পর থেকে আমিননগর গ্রামের মৃত. মুকবল হোসেনের ছেলে অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ী হুমায়ুন গা ডাকা দিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দূর্ঘটনার স্থানের এক দোকানদার জানান কৃষি জমির মাটি ড্রেজারের মাধ্যমে কেটে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নেওয়া হয়। আর এসব প্লাস্টিকের পাইপ সড়কের উপর দিয়ে অধিকাংশ সময় টানা হয়। সড়কের উপরে থাকা পাইপ যেন গাড়ির চাপে না ফাটে সেজন্য পাইপের উপর বালি আর ইটের কংক্রিট দিয়ে উচু করা হয়। আর এই উচু স্থানে অহরহ ঘটে সড়ক দূর্ঘটনা।
মঙ্গলবার সকালে এই পাইপটি পার হতে গিয়ে একটি অটোরিকশা উল্টে যায়। এসময় রিকশাচালক রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাখরাবাদ গ্রামের কানু মিয়ার রুবেল(২৬) গুরতর আহত হয়। অটোরিকশা উল্টে তার দুই পায়ের মাংস খসে পড়েছে। চিকিৎসার টাকা না থাকায় হাসপাতালে না গিয়ে গ্রাম্য ডাক্তার থেকে পায়ে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিষেক দাশ বলেন, ড্রেজার ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমাদের নিয়মিত ভ্রাম্যনান অভিযান অব্যাহত আছে। ভিকটিম পরিবার মামলা করলে আইনগত সকল সহায়তা পাবে।