মোঃ মোশাররফ হোসেন মনিরঃ
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাণিজ্যিক এলাকা কোম্পানীগঞ্জ বাজারে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ফুটপাত থেকে শুরু করে ছোট-বড় প্রায় সব মার্কেটে ততই বাড়ছিল ক্রেতাদের ভিড়। ঠিক সে মূহর্তে কোম্পানীগঞ্জ কাঁচা ও মুদি মালের বাজারে নেওয়া হয়েছে ড্রেন নির্মাণের কাজ। সেই কাজের কারণে তৈরী হয়েছে জনদুর্ভোগ, ঘটছে দৃর্ঘটনাও। তার উপর অব্যবহ্তৃ মাটি রাস্তায় ফেলে রাখায় সরু হয়ে পড়েছে পথ। ফলে দিন দিন জনদুর্ভোগ ব্যাপক আকার ধারণ করছে। তবে দুর্ভোগের চেয়েও এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ওই এলাকার ব্যবসায়ীরা। অনেক ব্যবসায়ী ড্রেন নির্মাণের ফলে দোকানপাট খুলতে পারছেন না। আবার কেউ কেউ দোকান খুললেও নেই বেচাকেনা। নিজেই বণিক সমিতির আহ্বায়ক আবার নিজেই ড্রেন নির্মাণেরে ঠিকাদার হওয়ায় কাজের গুনগত মান নিয়েও সন্দিহান রয়েছে ব্যাবসায়ীদের মাঝে। কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল ভূমিকা না থাকায় ঈদবাজারের মধ্যে লোক দেখানো কাজ করছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। তাই ব্যবসায়ী ও ঈদ মুখি ক্রেতাদের দুর্ভোগ লাগবে ঈদের পর ড্রেন নির্মণ কাজ করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মুরাদনগর-কোম্পানীগঞ্জ সড়ক থেকে গোমতি নদী বেরীবাধ পর্যন্ত ড্রেন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কাজ করতে গিয়ে রাস্তার পাশের মাটি খুঁড়ে রাস্তার মাঝখানে রাখা হয়। এতে যে এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজ চলে ওই এলাকায় ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদেরে ভিড় ছিল নিত্যসঙ্গী। গত এক সাপ্তাহ পূর্বে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে বাণিজ্যিক এলাকায় নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছিল। এমন এক ব্যস্ততম এলাকায় ড্রেনের কাজ খুঁড়িয়ে রেখে দেওয়া হয়েছে। গত এক সাপ্তহ থেকে কোন প্রকার কাজ চলছেনা। সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করে রাখায় সবাইকে ঝুঁকি নিয়ে ড্রেনের ওপর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এ সড়ক দিয়ে কোনো যান চলাচল করতে পারে না। এ কারণে এখানকার বেশ কয়েকটি দোকান বাধ্য হয়ে বন্ধ করে দিতে হয়েছে।
জানা যায়, গত ৬ এপ্রিল উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাজারের মুদি ও কাঁচা বাজারের সড়কটিতে ড্রেন নির্মাণ কাজ করার জন্য সড়কটি খুড়েঁ রাখা হয়। ১১ দিন পেড়িয়ে গেলেও ড্রেন নির্মাণে খুঁড়া-খুঁড়ি কাজ ছাড়া চোঁখে পড়ার মতো কোন অগ্রগতি হয়নি। আসন্ন ঈদ উপলক্ষে আগত ক্রেতাদের ভির সামলাতে বনিক সমিতি ও স্থানীয় প্রশাসন বিভিন্ন প্রদক্ষেপ নেওয়ার কথা সেখানে এই অসময়ে অপরিকল্পিত ভাবে ড্রেনের নির্মাণ কাজ শুরু করায় ব্যবসায়ীদের মাঝে সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি বিরুপ প্রতিক্রির তৈরী হয়েছে। কিন্তু কাজের ধীরগতির কারণে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। ফলে রাস্তার অর্ধেক চলে গেছে জমানো মাটির দখলে। বাকি অর্ধেক রাস্তা দিয়ে চলছে যানবাহন ও ক্রেতারা। এমতাবস্থায় ওই রাস্তায় চলতে গিয়ে দীর্ঘ যানজটের কবলে পড়তে হচ্ছে এলাকাবাসীর, পোহাতে হচ্ছে মহাদুর্ভোগ।
ভুক্তভোগী ক্রেতা জমির আলী জানান, ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকায় এবং ঈদের সময় ড্রেন নির্মাণ করার বিষয়টি মাথায় থাকার কথা ছিল সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষের। এই মূর্হতে ও ধীরগতিতে কাজ চলায় ভোগান্তির পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরাও। তিনি বলেন, মুরাদনগর, দেবিদ্বার, নবীনগর, বুড়িচংসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার মধ্যে কোম্পানীগঞ্জ বাজারে সবচেয়ে বড় কাঁচাবাজারটি অবস্থিত। প্রতিনিয়ত সেখান থেকে বাজার করতে হয়। এখন বাজার করতে গেলেই শিকার হতে হয় বিড়ম্বনার।
ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়া রফিকুল মিয়া জানান, এমনিতেই লকডাউনে তারা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারপর এখন আবার ড্রেন নির্মাণের ধীরগতির খোঁড়াখুঁড়ি ধীরগতির কারণে এ এলাকায় প্রতিনিয়ত লেগে থাকছে যানজট। যে কারণে বাজারে আগত সকলেরই বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। তারা চান দ্রুত যেন এ কাজটি সম্পন্ন করে কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির আহ্বায়ক চন্দন বণিক ড্রেন নির্মাণে কাজ নিজে করার কথা স্বীকার করে বলেন, ড্রেন নির্মাণে ব্যবসায়ীদের কোন সমস্যা হচ্ছেনা! যারা হকার ও কাঁচা ব্যবসায়ী তাদের সমস্যা হচ্ছে। হকার ও কাঁচা ব্যবসায়ীরা অবৈধ! তাদের কোন নির্দিষ্ঠ স্থান নেই। তাদের কাজ ফুটপাত দক্ষল করা, তারা ফুটপাত দখল করবেই! তাদের দেখার দায়িত্ব বণিক সমিতির না? তাদের জন্যতো ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেনা। ড্রেনের নির্মাণ কাজ যেহেতো চলচ্ছে সাময়িক সময়ের জন্য কিছুটা সমস্যা হবেই?