মো: মোশাররফ হোসেন মনির/আজিজুর রহমান রনিঃ
কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হত্যার ঘটনা ক্রমশই বেড়েই চলছে। গত পাঁচ মাসে পাঁচ হত্যাকান্ড ঘটেছে। সম্প্রতি বেশ কিছু হত্যার ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে উপজেলার সাধারণ মানুষের মধ্যে। প্রতিটি মৃত্যুর পরই থানায় মামলা হয়েছে। আদৌ মামালাগুলো আলোর মুখ দেখবে কিনা তা জানে না নিহতের স্বজনরা। আদিপত্য রক্ষায় গলাকেটে, মারামাড়ি, ঘাড়ি চাপা, অস্ত্রের আঘাতে এ ঘটনা গুলো ঘটেছে।
স্থানীয়দের দাবি রাজনৈতিক, আদিপত্যে বিভিন্ন জটিলতা ও টানাপড়ন ও যুব সমাজ নেশার মরণ ছোবলে জরিয়ে যাওয়ার কারনে এধরনের নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটছে।
গত ৯ জুলাই রবিবার উপজেলা সদরের উত্তর পাড়ায় স্থানীয় কয়েকজন বখাটে যুবকের মাঝে নারী সংক্রান্ত ঘটনা নিয়ে বাকবিতন্ডার ঘটনায় জেড়ে উত্তেজিত বখাটে যুবকের লাটিপিটার আঘাতে আহত অবস্থায় উপজেলা শেচ্ছাসেবকলীগ নেতা হেলাল মিয়ার মৃতু।
গত ২ মে শুক্রবার রাতে হোমনা উপজেলা থেকে হোমনা সুপার (নারায়নগঞ্জ-জ-০৪-০১৮৮) নাম্বারের একটি বাস মাজার থেকে যাত্রি নিয়ে মুরাদনগর উপজেলা সদর হয়ে হোমনার উর্দ্দেশে যাচ্ছিল। এসময় মুরাদনগর-হোমান সড়কের সিএনজি ষ্ট্যান্ড অতিক্রম করার সময় ষ্ট্যান্ডে থাকা একটি অটোচালিত সিএনজিকে ধাক্কা দেয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিএনজির ড্রাইবার শরিফের সাথে কথা কাটা-কাটি হলে এক পর্যায়ে বাসে থাকা লোকজন শরিফকে গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে যায়। এবং গাড়িতে কতিপয় লোকজন তার মৃত্যু নিশ্চিত করে, রাস্থায় ফেলে গাড়ি চাপা দেয় সড়ক দূর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। লাশ ফেলে বাসটি পালিয়ে যায়।
গত ১৯ এপ্রিল উপজেলার রহিমপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে আ’লীগের সমর্থকদের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে ফারুক ও সাইদুর রহমান নামের ২ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকেরা।
২৮ মার্চ উপজেলার গাঙ্গেরকোট গ্রামে মাঠ থেকে গরু আনা নিয়ে পিতা ফারুক মিয়ার সাথে পুত্র দ্বীন ইসলাম (১৩) কথাকাটা হলে পুত্র সুচালো অস্ত্র দিয়ে পিতাকে আঘাত করে হত্যা করে।
তবে এসব হত্যাকান্ডের ঘটনাকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হিসেবে দেখছেনা পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিং এ মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম বদিউজ্জামান বলেন, প্রতিটি ঘটনার সাথে জরিতদেরকে সনাক্ত করতে আমরা সক্ষম হয়েছি।
উপজেলার প্রবিন এক শিক্ষকের দাবি, পারস্পরিক সহিংস মনোভাব ও সামাজিক মূল্যবোধের অবাবে এসব হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটছে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নৈতিক শিক্ষার উপরে ক্লাস চালু করা যেতে পারে। প্রয়োজনে প্রত্যেক এলাকায় উঠান বৈঠকও করতে পারে প্রশাসনের লোকজন। আইনের শাসন ও বিচারপ্রার্থীদেও বিচার নিশ্চিত হলে এধরনের ঘটনা আর ঘটবেনা। এটা নিশ্চিতি করা খুব জরুরি।
সাম্প্রতি খুন হওয়া শ্রমিকলীগ নেতা হেলালের মা আয়শা বেগম বলেন,বুকের ধন হারিয়ে নিঃস্ব যে মা, সে কি ভুলতে পারবে এ যন্ত্রণা? যার চলে যায় সেই বুঝে হায় বিচ্ছেদের কী যন্ত্রণা। তাই আর যেন কোন লাশের মিছিল দেখতে না হয়, আর যেন কোন মায়ের বুক খালি না হয় এমনটাই কামনা করছি।