শামীম আহম্মেদ, মুরাদনগরঃ
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের কুড়াখাল গ্রামের ইউপি সদস্য মাইনুল ইসলাম নেছারসহ কতিপয় প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে পুরনো একটি রাস্তা বাদ দিয়ে মালিকানাধীন জায়গার উপর দিয়ে হুমকি-ধমকি দিয়ে জোরপূর্বক নতুন রাস্তা করার পঁায়তারা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বিষয়টির ব্যাপারে অশান্ত পরিবেশকে শান্ত করতে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে কুড়াখাল বাজার সংলগ্ন নাছির সরকারের বাড়ি থেকে মুতি মিয়ার বাড়ি হয়ে সিদ্দিক মিয়ার বাড়ী পর্যন্ত একটি সরকারি হালটের উপর দিয়ে ২৫ টন চাল/গম দিয়ে রাস্তা তৈরী করা হয়। চলতি অর্থ বছরে কুড়াখাল বাজারের উত্তর পাশের কালভার্ট থেকে কুরুন্ডি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তাটি পূণ: নির্মাণের জন্য হত দরিদ্র প্রকল্প থেকে ৪ লাখ টাকা বরাদ্দ নেয় ইউপি সদস্য মাইনুল ইসলাম নেছার। ইতিমধ্যে কতিপয় প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে সেই পুরনো নাছির সরকারের বাড়ি থেকে মুতি মিয়ার বাড়ি হয়ে সিদ্দিক মিয়ার বাড়ী পর্যন্ত রাস্তাটি পতিত রেখে কালভার্ট থেকে বাজার পর্যন্ত ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গার উপর দিয়ে রাস্তা নেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে ইউপি সদস্য মাইনুল ইসলাম নেছার। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে ওই এলাকার লোকজন।
সরেজমিন পরিদর্শনকালে এলাকার আব্দুল বারেক মিয়া, কামাল ভুইয়া, হাসেম সরকার ও অলেক মিয়া জানান, ৩০ ফুট হালটের উপর দিয়ে গত বছর একটি রাস্তা তৈরী করা হয়েছে। ঐ রাস্তাটি মেরামত করলে এলাকার সকল লোকজন চলাফেরা করতে যেমন সমস্যা হবেনা তেমনি কারো কোন প্রকার আপত্তি থাকারও কথা নয়। অথচ ৪/৫ জন লোকের স্বার্থ সিদ্ধি হাসিল করতে হুমকি ধমকি দিয়ে ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গার উপর দিয়ে জোর পূর্বক রাস্তা করার মানে কি? এলাকার লোকজন পায়ে চলাচল করার সুবিধার্থে জায়গার মালিকরা রাস্তা দিয়ে রেখেছে। কাউকে কোন দিন বাধঁাও দেয়নি।
জায়গার মালিকগণ বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে এবং হালটের উপর দিয়ে তৈরী করা সেই পুরনো রাস্তাটি মেরামতের দাবি জানিয়ে জাতীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর আবেদন করে। এ ছাড়াও কুমিল্লার জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি পিটিশন মামলা করেন। বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশ মালিকানাধীন উক্ত জায়গা স্থিতিবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিলেও হুমকি-ধমকি দিয়ে জোর পূর্বক রাস্তা নির্মাণের পঁায়তারা করছে। এ নিয়ে ওই প্রভাবশালী মহলটি এলাকার শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করে তুলেছে বলে ভূক্তভোগিরা জানিয়েছে।
বিষয়টির ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মাইনুল ইসলাম নেছার জানান, কালভার্টের দক্ষিন অংশের জায়গাটি ব্যক্তি মালিকানাধীন। মানুষ আপাতত পায়ে হাটার জন্য জায়গার মালিকগণ রাস্তাটি দিয়েছে। ওই রাস্তা করার জন্য আমাকে কোন প্রকার বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। বরাদ্দ দিলেও জায়গার মালিকদের সাথে আলোচনা ছাড়া রাস্তা করা সম্ভব নয়।
বাঙ্গরা পশ্চিম ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল আমিন জানান, কুড়াখাল গ্রামে হালটের উপর দিয়ে তৈরী করা রাস্তাটিও ভবিষ্যতে পূণ: নির্মাণ করে জনসাধারণের চলাচলের উপযোগি করা হবে।