ঢাকা ১১:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে পুলিশ সদস্যের পা ভেঙ্গে দিল সন্ত্রাসীরা

মুরাদনগর বার্তা ডেস্কঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর পূর্ব ইউনিয়নের বাখরনগর গ্রামে ইউপি সদস্য সাহেদুল হক সুজনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী জামাল সরকার (৬০) নামে এক অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে পা ভেঙ্গে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বুধবার দুপুরে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কুমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। উক্ত ঘটনায় মামলা হলেও পুলিশ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি। অথচ মামলা তুলে নিতে প্রতিনিয়তই প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দেওয়ার ফলে পরিবারটি চরম আতংক ও উৎকন্ঠার মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করছে।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, একটি রাস্তা নিয়ে ইউপি সদস্য সাহেদুল হক সুজনের সাথে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য জামাল সরকারের বিরোধ চলে আসছে। উক্ত বিরোধের জের ধরে ইউপি সদস্য সাহেদুল হক সুজনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী গত শনিবার দুপুরে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য জামাল সরকারকে লোহার গ্যাস পাইপ দিয়ে পিটিয়ে তার ডান পা ভেঙ্গে ফেলে। তখন শোর-চিৎকার শুনে সন্ত্রাসীদের কবল থেকে তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসলে স্ত্রী পিয়ারা বেগম ও মেয়ে রুজি বেগমের উপরও সন্ত্রাসীরা আক্রমন চালায়। পরে বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়ে সুকেস, টেলিভিশন, ফ্রিজ, বৈদ্যূতিক মিটার ও আসবাবপত্র ভাংচুর পূর্বক ৭০ হাজার টাকার ক্ষতিসাধন করে। ওই সময় সন্ত্রাসীরা আলমিরার তালা ভেঙ্গে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নেয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। শুধু তাই নয়, জামাল সরকার যেন চিকিৎসা কিংবা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনগত সহায়তা নিতে না পারে সে জন্য তার বাড়ি ঘর ব্যারিকেট দিয়ে রাখে। তখন বিষয়টি থানায় অবহিত করলে একদল পুলিশ গিয়ে জামাল সরকার ও তার মেয়ে রুজি বেগমকে উদ্ধারপূর্বক চিকিৎসার জন্য মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করায়। বর্তমানে তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় বুধবার দুপুরে তাকে কুমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করেছে বলে জানা গেছে। ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সর্বমহলে তোলপাড় চলছে। বিষয়টির ব্যাপারে ওইদিনই শামসু মিয়ার ছেলে ইউপি সদস্য সাহেদুল হক সুজন, তার ভাই সৌকত মিয়া, মৃত জুরালীর ছেলে বাদশা মিয়া, আবুল কাশেমের ছেলে জহির মিয়া, মৃত সুলতান মিয়ার ছেলে আমির হোসেনসহ সাতজন নামধারী ও অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩ জনের বিরুদ্ধে মুরাদনগর থানায় অভিযোগ করে। পরে প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাটি সত্য প্রমানীত হওয়ায় অভিযোগটিকে সোমবার এফআইআর হিসেবে গন্য করে পুলিশ।

ভূক্তভোগী জামাল সরকার জানান, সন্ত্রাসীরা আমার পুকুরের মাটি ও বাশেঁর ঝাড়  বিক্রি করে নিয়েছে। প্রতিবাদ করায় আরো কয়েকবার আমার উপর হামলা করলেও সর্দার-মাতাব্বররা স্থানীয় ভাবে মিমাংসা করে দেয়। তারা এক ঘরের দুই ভাই মেম্বার হওয়ার সুবাধে বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে। তাদের ভয়ে সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ করাতো দূরের কথা ভয়েও মুখ খুলতে সাহস পায়না।

উক্ত বিষয়ে কথা বলার জন্য ইউপি সদস্য সাহেদুল হক সুজনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও মোবাইল ফোন (০১৭১০-৯৯৭৩৩১) রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

মুরাদনগর থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান ঘটনার সত্যতা শিকার করে জানান, অভিযোগ পেয়ে তদন্তসাপেক্ষে ওই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামীরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রবাসীর বাড়ি ঘরে হামলা, নারীসহ আহত ৩

মুরাদনগরে পুলিশ সদস্যের পা ভেঙ্গে দিল সন্ত্রাসীরা

আপডেট সময় ০১:৫৭:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জানুয়ারী ২০১৮
মুরাদনগর বার্তা ডেস্কঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর পূর্ব ইউনিয়নের বাখরনগর গ্রামে ইউপি সদস্য সাহেদুল হক সুজনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী জামাল সরকার (৬০) নামে এক অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে পা ভেঙ্গে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বুধবার দুপুরে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কুমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। উক্ত ঘটনায় মামলা হলেও পুলিশ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি। অথচ মামলা তুলে নিতে প্রতিনিয়তই প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দেওয়ার ফলে পরিবারটি চরম আতংক ও উৎকন্ঠার মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করছে।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, একটি রাস্তা নিয়ে ইউপি সদস্য সাহেদুল হক সুজনের সাথে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য জামাল সরকারের বিরোধ চলে আসছে। উক্ত বিরোধের জের ধরে ইউপি সদস্য সাহেদুল হক সুজনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী গত শনিবার দুপুরে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য জামাল সরকারকে লোহার গ্যাস পাইপ দিয়ে পিটিয়ে তার ডান পা ভেঙ্গে ফেলে। তখন শোর-চিৎকার শুনে সন্ত্রাসীদের কবল থেকে তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসলে স্ত্রী পিয়ারা বেগম ও মেয়ে রুজি বেগমের উপরও সন্ত্রাসীরা আক্রমন চালায়। পরে বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়ে সুকেস, টেলিভিশন, ফ্রিজ, বৈদ্যূতিক মিটার ও আসবাবপত্র ভাংচুর পূর্বক ৭০ হাজার টাকার ক্ষতিসাধন করে। ওই সময় সন্ত্রাসীরা আলমিরার তালা ভেঙ্গে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নেয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। শুধু তাই নয়, জামাল সরকার যেন চিকিৎসা কিংবা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনগত সহায়তা নিতে না পারে সে জন্য তার বাড়ি ঘর ব্যারিকেট দিয়ে রাখে। তখন বিষয়টি থানায় অবহিত করলে একদল পুলিশ গিয়ে জামাল সরকার ও তার মেয়ে রুজি বেগমকে উদ্ধারপূর্বক চিকিৎসার জন্য মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করায়। বর্তমানে তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় বুধবার দুপুরে তাকে কুমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করেছে বলে জানা গেছে। ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সর্বমহলে তোলপাড় চলছে। বিষয়টির ব্যাপারে ওইদিনই শামসু মিয়ার ছেলে ইউপি সদস্য সাহেদুল হক সুজন, তার ভাই সৌকত মিয়া, মৃত জুরালীর ছেলে বাদশা মিয়া, আবুল কাশেমের ছেলে জহির মিয়া, মৃত সুলতান মিয়ার ছেলে আমির হোসেনসহ সাতজন নামধারী ও অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩ জনের বিরুদ্ধে মুরাদনগর থানায় অভিযোগ করে। পরে প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাটি সত্য প্রমানীত হওয়ায় অভিযোগটিকে সোমবার এফআইআর হিসেবে গন্য করে পুলিশ।

ভূক্তভোগী জামাল সরকার জানান, সন্ত্রাসীরা আমার পুকুরের মাটি ও বাশেঁর ঝাড়  বিক্রি করে নিয়েছে। প্রতিবাদ করায় আরো কয়েকবার আমার উপর হামলা করলেও সর্দার-মাতাব্বররা স্থানীয় ভাবে মিমাংসা করে দেয়। তারা এক ঘরের দুই ভাই মেম্বার হওয়ার সুবাধে বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে। তাদের ভয়ে সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ করাতো দূরের কথা ভয়েও মুখ খুলতে সাহস পায়না।

উক্ত বিষয়ে কথা বলার জন্য ইউপি সদস্য সাহেদুল হক সুজনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও মোবাইল ফোন (০১৭১০-৯৯৭৩৩১) রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

মুরাদনগর থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান ঘটনার সত্যতা শিকার করে জানান, অভিযোগ পেয়ে তদন্তসাপেক্ষে ওই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামীরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না।