মুরাদনগর বার্তা ডেস্কঃ
কুমিল্লার মুরাদনগরে উপজেলা প্রকৌশলীকে লাথি মেরে অফিস থেকে বের করে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে মাহবুব আলম মুন্সী নামের এক জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেলে মুরাদনগর উপজেলা পরিষদের প্রকৌশলীর অফিস কক্ষের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে। মাহবুব আলম মুন্সী মুরাদনগর উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি।
ভিডিওতে দেখা গেছে, মুরাদনগর উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফয়সাল বারী পূর্ণ তার অফিসের চেয়ারে বসে আছেন। তার অফিসের টেবিলের অপরপ্রান্ত থেকে মুরাদনগর উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাহবুব আলম মুন্সী দাঁড়িয়ে থেকে উপজেলা প্রকৌশলীকে বলছেন, লাথি মেরে তোকে বের করে দেব। যা মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
জানতে চাইলে মাহবুব আলম মুন্সি বলেন, মুরাদনগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের বাসকাইট থেকে প্রান্তি বাজার পর্যন্ত সড়কটির খুবই বেহাল দশা। সেই রাস্তাটির সংস্কারের একটি আবেদন নিয়ে আমিসহ স্থানীয় কয়েকজন মুরাদনগর উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে যাই। তখন তিনি আবেদনটি দেখে গড়িমসি শুরু করেন।
তখন উপজেলা প্রকৌশলী বলেন, এটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব। রাস্তাটির সংস্কার খুবই জরুরি এ বিষয়টি ওনাকে বুঝাতে গেলে তিনি আমার সঙ্গে রেগে যান। এ সময় তিনি আমাকে বলেন, যদি রাস্তা ভেঙে পানি জমে থাকে তাহলে আপনারা গিয়ে বালতি দিয়ে সে পানি পরিষ্কার করেন।
জামায়াত নেতা বলেন, প্রকৌশলী উত্তেজিত হয়ে গেলে তখন আমিও উত্তেজিত হয়ে যাই। পরে আমাদের মুরুব্বিরা এসে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে বসে ঘটনাটির সুরাহা করে দেন। শর্ত অনুযায়ী আমার কাছে কিছু ভিডিও ছিল, তা আমি ডিলিট করে দেই। আসলে ওই ঘটনার সময় আমাদের প্রায় ১০ মিনিট তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে মাত্র ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে।
মুরাদনগর উপজেলা জামায়াতের আমির আ ন ম ইলিয়াস বলেন, যে ঘটনাটি হয়েছে সেটি দুঃখজনক। এক পক্ষ থেকে তো আসলে কোনো ঘটনা তৈরি হয় না। বিষয়টি আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে বসে উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে সুরাহা করেছি। এ ঘটনায় আমরা দুঃখ প্রকাশ করেছি। এ ধরনের ঘটনা না হওয়াটাই ভালো।
তবে এ বিষয়ে কথা বলতে উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফয়সাল বারী পূর্ণর মোবাইলে বারবার চেষ্টা করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুর রহমান বলেন, রাস্তা সংস্কারের আবেদনটি নিয়ে প্রথমে আমার কাছে এসেছিল। আমি তখন তাদের উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে পাঠিয়েছি। ওখানে গিয়ে তারা আসলে কী করেছে আমি তা জানি না। পরে আমি তাদের নেতৃত্ব স্থানীয় লোকদের ডেকেছিলাম। পরে তারা উপস্থিত হয়ে এ বিষয়টির ওপর দুঃখ প্রকাশ করেছে।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে কেউ কোনো কর্মকর্তাকে হুমকি দিতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, কোনো ব্যক্তিই কর্মকর্তার অফিসে ঢুকে এ ধরনের আচরণ করতে পারেন না।