মো: হাবীবুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের ধনেরকান্দি গ্রামের একটি মাছের প্রজেষ্ট মালিকদের মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়ে এলাকা জনশূন্য করে বুধবার রাতে অনুমান ৫ লাখ টাকা মাছ লুট করে নেয় প্রতিপক্ষরা। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন মুহুর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হওয়ার আশংকা করছে এলাকাবাসী।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, ধনেরকান্দি বিলের জমিগুলোতে ইরি-বোরো চাষ করার জন্য কৃষকদের বিনা খরচে পানি সরবরাহের শর্ত-সাপেক্ষে মালিকদের কাছ থেকে ১৫ বছর মেয়াদে জমি পত্তন নিয়ে মাছ চাষ করে আসছে একই গ্রামের রেনু মিয়া, শাহ আলী ও পাথালিয়াকান্দি গ্রামের আব্দুল করিম। গত ২ বছর যাবত যথানিয়মে মাছ চাষ করার ফলে প্রজেক্টের উপর কুনজর পড়ে প্রতিপক্ষদের। এরই মধ্যে দড়িকান্দি গ্রামের শরীফ হোসেন, কাচারীকান্দি গ্রামের আনিস মিয়া ও পাথালিয়া কান্দি গ্রামের গোলাম মোস্তফাসহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন যাবত ১৫ বছর মেয়াদী চুক্তির বিষয়টি লঙ্গন করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গত ২০ নভেম্বর সকালে একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক ও হাতাহাতির ঘটনার একপর্যায়ে ৪ জনকে আটকে রেখে পুলিশে তুলে দেয়। ওই দিনই প্রতিপক্ষ শরীফ হোসেন বাদী হয়ে প্রজেষ্ট মালিক রেনু মিয়াসহ ১৪ জন নামধারী ও অজ্ঞাতনামা আরো ৩০/৪০ জনের বিরুদ্ধে মুরাদনগর থানায় কথিত দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা করে। উক্ত মামলায় গ্রেফতার এড়াতে এবং প্রতিপক্ষদের হামলার ভয়ে রেনু মিয়াসহ তার লোকজন গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। এ সুযোগে প্রতিপক্ষরা ১৫ বছর মেয়াদী চুক্তির মাছের প্রজেক্ট থেকে বুধবার রাতে বের জাল ফেলে প্রায় ৫ লাখ টাকার বিভিন্ন প্রজাতির মাছ লুট করে নিয়ে যায়। তখন রেনু মিয়ার কিছু লোক বাধাঁ প্রদান করলে তাদেরকে অস্ত্র-সস্ত্রের ভয় দেখিয়ে প্রাণ নাশের হুমকি প্রদর্শণ করে।
উক্ত বিষয়ে অভিযুক্ত শরীফ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে এ ধরণের কোন ঘটনা ঘটেনি বলে জানায়। তবে প্রতিপক্ষরা নিজেরাই ঘটনা ঘটিয়ে তাহা রটিয়ে আমাদেরকে মামলা দিয়ে হয়রানি করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ইউপি সদস্য শাহজালাল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বুধবার সারা রাতই মাছ ধরে ২টি পিকআপ ভ্যান যোগে আনুমানিক ৫ লাখ টাকার মাছ পাশের ছলিমগঞ্জ ও তিতাসসহ বিভিন্ন বাজারে চালান দিয়েছে।
রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি চট্টগ্রাম রয়েছেন বলে জানান। তবে লোকমুখে তিনি মাছ লুটের ঘটনাটি শুনেছেন এবং বিষয়টি জানার জন্য ঘটনাস্থলে গ্রাম পুলিশও পাঠিয়েছেন।
মুরাদনগর থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। এখনো পর্যন্ত উক্ত বিষয়ে আমার নিকট কেউ লিখিত কিংবা মৌখিক অভিযোগও করেনি।