ঢাকা ০৫:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে বাপ-বেটির তান্ডব লিলায় অতিষ্ট এলাকাবাসী

এন এ মুরাদ:

কুমিল্লা জেলার মুরাদগর উপজেলায় চলছে বাপ-বেটির তান্ডব লিলায় অতিষ্ট হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। ভূমি দখল, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সাথে গেজেট প্রতারনা,  বিদেশী টাকা আত্মসাৎ, জমি বিক্রি করে অস্বীকার করা, মোবাইলে ছেলেদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে সর্বস্ব লুটে নেওয়া সহ নানা রকম অপরাধের সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন এমন একাধিক অভিযোগ ও মামলা রয়েছে বাবা নজরুল ইসলাম (৬১) ও মেয়ে নাসরিন আক্তার বিথির বিরুদ্ধে (২৮)।

এই চক্রের আরো দুই মূল হোতা তার বিদেশ ফেরত ছেলে ফয়সাল মুবিন পলাশ (২৫) ও শিমুল (২২)।

অনুসন্ধানে জানাযায়, নজরুল ইসলাম পিতা ঃ মৃত সৈয়দ আলী সাং-বাঙ্গরা এই নামটি আরএস, বিএস সহ সবজায়গায়  আছে । কিন্তু তার সেনাবাহিনীর গেজেটে নীজ পিতার জায়গায় মোঃ শফিকুল ইসলাম দিয়ে গেজেট বানানো হয়েছে। গেজেট পৃষ্টা ১২২৪২-২২-১২-২০০৩ গেজেট নং-১৭০৩১ এই ভাবে অন্য একজনের পিতার নাম ব্যাবহার করে সেনাবাহিনীর গেজেটে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উঠাচ্ছেন নজরুল ইসলাম ।

এছাড়া জায়গা বিক্রি করে দলিল দিয়েছে কিন্তু দখল দেয়না এমন দুটি  অভিযোগ পাওয়া গেছে  নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

এমনি একজন ভোক্তভোগী হচ্ছে বাঙ্গরার মৃত শেখ রমিজ উদ্দিনের ছেলে শেখ জাকির  তিনি নজরুল ইসলামের ৯ বছর আগের  বিক্রিত সম্পত্তি  “অপ্রত্যাহার যোগ্য পাওয়ার অব এ্যাটনি” দলিল মূলে সাড়ে ৭ শতক জায়গায় অবস্থিত একটি একতলা বিল্ডিং ও একটি টিনের ঘরের মালিক,যা বিএস খতিয়ান নং-৪৪২ সাবেক ৬৮৫ বর্তমান ৯৮১ এর ২৪ শতক আন্দরে হেলাল উদ্দিন থেকে  শেখ জাকির ক্রয় করেছেন । ক্রয় করবার পর বাড়িটির কিছু কাজ করিয়ে ভাড়া দেন। এই বাড়ির বাউন্ডারী ওয়াল করতে গেলে নজরুল ইসলাম ও তার মেয়ে বাধা দেয় এবং শেখ জাকির ও  তার কাজের লোকদের জোরপূর্বক ওখান থেকে বাহির করে দেন। পরবর্তীতে নজরুল ইসলাম কোর্টে একটি পিআর মামলা করেন মামলা নং-৩০২/১৯। মামলার তদন্ত রায় শেখ জাকির পায়। তদন্তের রায় পেয়েও শেখ জাকির ওই বাড়িতে ঢুকতে পারে না। শেখ জাকির ওই বাড়িতে গেলে তাকে মেরে ফেলবার হুমকি দেওয়া হয়। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে শেখ জাকির বাঙ্গরা বাজার থানায় নজরুল ইসলাম ও তার  পরিবারের বিরুদ্ধে একটি  অভিযোগ করেন যাহার নং-১০৬/৬/৮/১৯।

বাঙ্গরার আব্দুস সোবহান ৬ শতক জায়গা কিনেছেন অভিজিৎ বর্মন থেকে, অভিজিৎ কিনেছিলেন নজরুল ইসলাম থেকে- যার দাগ নাম্বর বিএস ৯৮১ ও ৯৮৩ খতিয়ান নম্বর ৪৪২। দলিল থাকা সত্বেও আবদুস সোবহানকে ওই জায়গায় যেতে দেয়না নজরুল ইসলাম।
এদিকে বিদেশের কথা বলে প্রতারনা করে ৩ যুবকের কাছ থেকে ১৮ লাখ টাকা আতৎসাত করেছেন বলে কুমিল্লা কোর্টে ৪০৬/৪২০/ ১০৯ ধারায় পৃথক পৃৃথক তিনটি মামলা রয়েছে নজরুল ইসলাম ও তার মেয়ে নাসরিন আক্তার বিথির বিরদ্ধে। ওই ৩ যুবক হলো বাঙ্গরা গ্রামের খালেক মিয়ার ছেলে কবির হোসেন, খামার গ্রামের ছামাদ মিয়ার ছেলে মোঃ মানিক ও আঃ আহাদ এর ছেলে মিদন মিয়া। এই মামলাগুলো কোর্টের নির্দেশে তদন্ত চলছে।

আদালত  দুটি মামালা ৬নং বাঙ্গরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নিদের্শ দেন। অপর মামলাটি উপজেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন কোর্ট।

উপরোক্ত অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে টাকা পয়সা সংক্রান্ত সব অভিযোগ মিথ্যা।মুক্তিযোদ্ধ চলাকালীন আমি নবম শ্রেনীতে পড়ি। তখন যোদ্ধে অংশ গ্রহণ করি। তখন আমার বয়স জন্ম ০৯-১৬-১৯৫৮(অর্থাৎ  ১৩) বছর। মুক্তি যোদ্ধা সনদে আমার পিতার নামটি ভূল এসেছে ,আমি ২০১৩ সালে সনদ পাই এবং ২০১৬তে সংশোধনের জন্য আবেদন করেছি। এখনো সংশোধন হয়নি।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হারুনুর রশিদ বলেন, এই ব্যাপারটি আমদের নয়, এটি  সেনাবাহিনীর গেজেট তাই এটি সেনাবাহিনীর অফিস দেখবে।

উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার কবির আহম্মদ বলেন, নজরুল ইসলামের সনদ পত্র পেয়েছি  বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

৬নং-বাঙ্গরা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বলেন, নজরুল ইসলাম ও তার ছেলে  মেয়েরা অন্যায় ভাবে অন্যের বাড়ি ও সম্পত্তি দখল করে রেখেছে।আমি স্থানীয় ভাবে মিমাংশা করতে গিয়ে ব্যার্থ হয়েছি। টাকা পয়সা সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্তও চলছে।

বাঙ্গরা বাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, এই জায়গা নিয়ে কোর্টে মামলা চলতেছে, এটি কোর্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রায় হবে। এলাকার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি যেন ভিন্ন খাতে না যায় সেদিকে আমরা নজরদারি রাখছি।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে ৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান মেলার পুরস্কার বিতরন অনুষ্ঠিত

মুরাদনগরে বাপ-বেটির তান্ডব লিলায় অতিষ্ট এলাকাবাসী

আপডেট সময় ০১:৩৫:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯
এন এ মুরাদ:

কুমিল্লা জেলার মুরাদগর উপজেলায় চলছে বাপ-বেটির তান্ডব লিলায় অতিষ্ট হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। ভূমি দখল, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সাথে গেজেট প্রতারনা,  বিদেশী টাকা আত্মসাৎ, জমি বিক্রি করে অস্বীকার করা, মোবাইলে ছেলেদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে সর্বস্ব লুটে নেওয়া সহ নানা রকম অপরাধের সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন এমন একাধিক অভিযোগ ও মামলা রয়েছে বাবা নজরুল ইসলাম (৬১) ও মেয়ে নাসরিন আক্তার বিথির বিরুদ্ধে (২৮)।

এই চক্রের আরো দুই মূল হোতা তার বিদেশ ফেরত ছেলে ফয়সাল মুবিন পলাশ (২৫) ও শিমুল (২২)।

অনুসন্ধানে জানাযায়, নজরুল ইসলাম পিতা ঃ মৃত সৈয়দ আলী সাং-বাঙ্গরা এই নামটি আরএস, বিএস সহ সবজায়গায়  আছে । কিন্তু তার সেনাবাহিনীর গেজেটে নীজ পিতার জায়গায় মোঃ শফিকুল ইসলাম দিয়ে গেজেট বানানো হয়েছে। গেজেট পৃষ্টা ১২২৪২-২২-১২-২০০৩ গেজেট নং-১৭০৩১ এই ভাবে অন্য একজনের পিতার নাম ব্যাবহার করে সেনাবাহিনীর গেজেটে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উঠাচ্ছেন নজরুল ইসলাম ।

এছাড়া জায়গা বিক্রি করে দলিল দিয়েছে কিন্তু দখল দেয়না এমন দুটি  অভিযোগ পাওয়া গেছে  নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

এমনি একজন ভোক্তভোগী হচ্ছে বাঙ্গরার মৃত শেখ রমিজ উদ্দিনের ছেলে শেখ জাকির  তিনি নজরুল ইসলামের ৯ বছর আগের  বিক্রিত সম্পত্তি  “অপ্রত্যাহার যোগ্য পাওয়ার অব এ্যাটনি” দলিল মূলে সাড়ে ৭ শতক জায়গায় অবস্থিত একটি একতলা বিল্ডিং ও একটি টিনের ঘরের মালিক,যা বিএস খতিয়ান নং-৪৪২ সাবেক ৬৮৫ বর্তমান ৯৮১ এর ২৪ শতক আন্দরে হেলাল উদ্দিন থেকে  শেখ জাকির ক্রয় করেছেন । ক্রয় করবার পর বাড়িটির কিছু কাজ করিয়ে ভাড়া দেন। এই বাড়ির বাউন্ডারী ওয়াল করতে গেলে নজরুল ইসলাম ও তার মেয়ে বাধা দেয় এবং শেখ জাকির ও  তার কাজের লোকদের জোরপূর্বক ওখান থেকে বাহির করে দেন। পরবর্তীতে নজরুল ইসলাম কোর্টে একটি পিআর মামলা করেন মামলা নং-৩০২/১৯। মামলার তদন্ত রায় শেখ জাকির পায়। তদন্তের রায় পেয়েও শেখ জাকির ওই বাড়িতে ঢুকতে পারে না। শেখ জাকির ওই বাড়িতে গেলে তাকে মেরে ফেলবার হুমকি দেওয়া হয়। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে শেখ জাকির বাঙ্গরা বাজার থানায় নজরুল ইসলাম ও তার  পরিবারের বিরুদ্ধে একটি  অভিযোগ করেন যাহার নং-১০৬/৬/৮/১৯।

বাঙ্গরার আব্দুস সোবহান ৬ শতক জায়গা কিনেছেন অভিজিৎ বর্মন থেকে, অভিজিৎ কিনেছিলেন নজরুল ইসলাম থেকে- যার দাগ নাম্বর বিএস ৯৮১ ও ৯৮৩ খতিয়ান নম্বর ৪৪২। দলিল থাকা সত্বেও আবদুস সোবহানকে ওই জায়গায় যেতে দেয়না নজরুল ইসলাম।
এদিকে বিদেশের কথা বলে প্রতারনা করে ৩ যুবকের কাছ থেকে ১৮ লাখ টাকা আতৎসাত করেছেন বলে কুমিল্লা কোর্টে ৪০৬/৪২০/ ১০৯ ধারায় পৃথক পৃৃথক তিনটি মামলা রয়েছে নজরুল ইসলাম ও তার মেয়ে নাসরিন আক্তার বিথির বিরদ্ধে। ওই ৩ যুবক হলো বাঙ্গরা গ্রামের খালেক মিয়ার ছেলে কবির হোসেন, খামার গ্রামের ছামাদ মিয়ার ছেলে মোঃ মানিক ও আঃ আহাদ এর ছেলে মিদন মিয়া। এই মামলাগুলো কোর্টের নির্দেশে তদন্ত চলছে।

আদালত  দুটি মামালা ৬নং বাঙ্গরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নিদের্শ দেন। অপর মামলাটি উপজেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন কোর্ট।

উপরোক্ত অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে টাকা পয়সা সংক্রান্ত সব অভিযোগ মিথ্যা।মুক্তিযোদ্ধ চলাকালীন আমি নবম শ্রেনীতে পড়ি। তখন যোদ্ধে অংশ গ্রহণ করি। তখন আমার বয়স জন্ম ০৯-১৬-১৯৫৮(অর্থাৎ  ১৩) বছর। মুক্তি যোদ্ধা সনদে আমার পিতার নামটি ভূল এসেছে ,আমি ২০১৩ সালে সনদ পাই এবং ২০১৬তে সংশোধনের জন্য আবেদন করেছি। এখনো সংশোধন হয়নি।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হারুনুর রশিদ বলেন, এই ব্যাপারটি আমদের নয়, এটি  সেনাবাহিনীর গেজেট তাই এটি সেনাবাহিনীর অফিস দেখবে।

উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার কবির আহম্মদ বলেন, নজরুল ইসলামের সনদ পত্র পেয়েছি  বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

৬নং-বাঙ্গরা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বলেন, নজরুল ইসলাম ও তার ছেলে  মেয়েরা অন্যায় ভাবে অন্যের বাড়ি ও সম্পত্তি দখল করে রেখেছে।আমি স্থানীয় ভাবে মিমাংশা করতে গিয়ে ব্যার্থ হয়েছি। টাকা পয়সা সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্তও চলছে।

বাঙ্গরা বাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, এই জায়গা নিয়ে কোর্টে মামলা চলতেছে, এটি কোর্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রায় হবে। এলাকার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি যেন ভিন্ন খাতে না যায় সেদিকে আমরা নজরদারি রাখছি।