ঢাকা ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫, ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে বালু ব্যবসায়ী খুন: আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় পরিবার

শামীম আহাম্মদ :

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের সাতমোড়া গ্রামের বালু ব্যবসায়ী শাহাজাহান মিয়া খুনের ঘটনায় জনতার হাতে আটক দুইজন আসামীকে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার বিকেলে শাহজাহান মিয়ার লাশ গ্রামের বাড়ি আসলে এলাকায় শুরু হয় শোকের মাতম। স্বজনদের আহাজারি আর্তনাদে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। স্থানীয় ঈদগাঁহ মাঠে জানাযা শেষে তার লাশ গোরস্তানে দাফন করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাতমোড়া গ্রামের হাজী আব্দুল মালেকের ছেলে শাহজাহান মিয়া (৫২) বিগত ৮মাস ধরে পাশের গোমতী নদী থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু ব্যবসা করে আসছে। বুধবার রাত আনুমানিক ৯টায় বালু তোলা ড্রেজারের একটি নৌকা ও একটি বালু বহনকারী ট্রলার গোমতী নদীর পাড়ে আসায় শাহজাহান মিয়া কাজ দেখার জন্য বাড়ী থেকে বের হয়ে যায়। প্রতিদিনের ন্যায় বাড়ি না আসায় পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে বালু বহনকারী ড্রেজার ও নৌকার লোকজনের নিকট শাহজাহান মিয়া কোথায় জানতে চাইলে তারা জানায়, সে বাজার থেকে আসেনি এবং তাদের পাওনা টাকাও দেয়নি। শাহাজাহান মিয়ার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বন্ধ পাইলে তার স্বজনরা তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। তখন ড্রেজারের নৌকার ভিতরে পাটাতনের মধ্যে পাইপের নীচে শাহাজাহান মিয়ার লাশ উপুর হয়ে পড়ে থাকতে দেখে। এ সময় উত্তেজিত জনতা বালু বহনকারী নৌকার দু’জনকে আটক করে গণধোলাই দেয়। আটককৃতরা হলেন- তিতাস উপজেলার ঘোষকান্দি গ্রামের হারুনুর রশীদের ছেলে তোতা মিয়া ওরফে সুমন (২৬) ও কালা চান্দ কান্দি গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে মামুন মিয়া (১৯)। তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানায়, রাতে লেনদেন নিয়ে শাহাজাহান মিয়ার সাথে কাটাকাটির এক পর্যায়ে বালুবহনকারী ট্রলার মালিক খানেবাড়ি গ্রামের খলিল মিয়ার ছেলে হালিম মিয়াসহ (৪০) অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজন পালিয়ে যায়।

পরে বিয়ষটি থানাকে অবহিত করলে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে জনতার হাতে আটক আসামীদের ধৃত করে। তখন লাশ উদ্ধারপূর্বক সূরতহাল করে। এ সময় শাহজাহান মিয়ার মুখের ডান পাশে রক্তাক্ত জখমসহ নিহতের শরীরে একাধীক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। তবে টাকা লেনদেন নিয়ে তাকে পরিকল্পিত হত্যা করা হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের ভাই জাকির হোসেন বাদী হয়ে নামধারী ৩জনসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রুজু করেছেন।

নিহত শাহজাহান মিয়ার স্ত্রী আলেহা বেগম স্বামীর লাশ দেখে বার বার মূর্চা যাচ্ছেন। তাকে শান্তনা দিয়েও কান্না থামাতে পারছে না কেউ। তার বৃদ্ধ বাবা হাজী আব্দুল মালেক পুত্রের শোকে কাতর হয়ে পড়েছেন। এ দিকে শাহজাহান মিয়া হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন তার ভাই ও মামলার বাদী জাকির হোসেনসহ তার পরিবার-পরিজন।

মুরাদনগর থানার ওসি মনজুর আলম সাংবাদিকদের জানান, বাকী আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আগাম তরমুজ

মুরাদনগরে বালু ব্যবসায়ী খুন: আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় পরিবার

আপডেট সময় ০৭:৩৫:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯
শামীম আহাম্মদ :

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের সাতমোড়া গ্রামের বালু ব্যবসায়ী শাহাজাহান মিয়া খুনের ঘটনায় জনতার হাতে আটক দুইজন আসামীকে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার বিকেলে শাহজাহান মিয়ার লাশ গ্রামের বাড়ি আসলে এলাকায় শুরু হয় শোকের মাতম। স্বজনদের আহাজারি আর্তনাদে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। স্থানীয় ঈদগাঁহ মাঠে জানাযা শেষে তার লাশ গোরস্তানে দাফন করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাতমোড়া গ্রামের হাজী আব্দুল মালেকের ছেলে শাহজাহান মিয়া (৫২) বিগত ৮মাস ধরে পাশের গোমতী নদী থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু ব্যবসা করে আসছে। বুধবার রাত আনুমানিক ৯টায় বালু তোলা ড্রেজারের একটি নৌকা ও একটি বালু বহনকারী ট্রলার গোমতী নদীর পাড়ে আসায় শাহজাহান মিয়া কাজ দেখার জন্য বাড়ী থেকে বের হয়ে যায়। প্রতিদিনের ন্যায় বাড়ি না আসায় পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে বালু বহনকারী ড্রেজার ও নৌকার লোকজনের নিকট শাহজাহান মিয়া কোথায় জানতে চাইলে তারা জানায়, সে বাজার থেকে আসেনি এবং তাদের পাওনা টাকাও দেয়নি। শাহাজাহান মিয়ার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বন্ধ পাইলে তার স্বজনরা তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। তখন ড্রেজারের নৌকার ভিতরে পাটাতনের মধ্যে পাইপের নীচে শাহাজাহান মিয়ার লাশ উপুর হয়ে পড়ে থাকতে দেখে। এ সময় উত্তেজিত জনতা বালু বহনকারী নৌকার দু’জনকে আটক করে গণধোলাই দেয়। আটককৃতরা হলেন- তিতাস উপজেলার ঘোষকান্দি গ্রামের হারুনুর রশীদের ছেলে তোতা মিয়া ওরফে সুমন (২৬) ও কালা চান্দ কান্দি গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে মামুন মিয়া (১৯)। তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানায়, রাতে লেনদেন নিয়ে শাহাজাহান মিয়ার সাথে কাটাকাটির এক পর্যায়ে বালুবহনকারী ট্রলার মালিক খানেবাড়ি গ্রামের খলিল মিয়ার ছেলে হালিম মিয়াসহ (৪০) অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজন পালিয়ে যায়।

পরে বিয়ষটি থানাকে অবহিত করলে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে জনতার হাতে আটক আসামীদের ধৃত করে। তখন লাশ উদ্ধারপূর্বক সূরতহাল করে। এ সময় শাহজাহান মিয়ার মুখের ডান পাশে রক্তাক্ত জখমসহ নিহতের শরীরে একাধীক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। তবে টাকা লেনদেন নিয়ে তাকে পরিকল্পিত হত্যা করা হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের ভাই জাকির হোসেন বাদী হয়ে নামধারী ৩জনসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রুজু করেছেন।

নিহত শাহজাহান মিয়ার স্ত্রী আলেহা বেগম স্বামীর লাশ দেখে বার বার মূর্চা যাচ্ছেন। তাকে শান্তনা দিয়েও কান্না থামাতে পারছে না কেউ। তার বৃদ্ধ বাবা হাজী আব্দুল মালেক পুত্রের শোকে কাতর হয়ে পড়েছেন। এ দিকে শাহজাহান মিয়া হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন তার ভাই ও মামলার বাদী জাকির হোসেনসহ তার পরিবার-পরিজন।

মুরাদনগর থানার ওসি মনজুর আলম সাংবাদিকদের জানান, বাকী আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।