বেলাল উদ্দিন আহম্মদ, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় এক খামারীর গরুর খামারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৬টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। এসময় আরও পাঁচটি গরু গুরুতর আহত হয়। এসময় ওই গরুগুলোকে রক্ষা করতে গিয়ে আহত হন খামারি সফিক। কিছুক্ষণ পর পর কান্নায় ভেঙে পড়ছেন তিনি। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিষেক দাশ ঘটনার স্থল পরির্দশন করেন এবং নগদ ১০ হাজার টাকার তুলে দেওয়া হয় ক্ষতিগ্রস্থ খামারীর হাতে।
রোববার ভোর সকালে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের কালিপুরা গ্রামের সফিকুল ইসলামের খামারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টের ঘটনাটি ঘটে।
বিদ্যুৎ পৃষ্ঠ হয়ে মারা যাওয়া গরু গুলোর মধ্যে ২টি ষাঁড়, ২টি বাছুর, ২টি গাভী। এতে খামারি সফিকের প্রায় ৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
খামারি সফিক বলেন, ভাইরে আমি তো শেষ! আপনারা একটু দেখে যান। আমার কষ্টের লালন-পালন করা গরুগুলো কীভাবে মরে পড়ে আছে।
তিনি আরও বলেন, রাত ১১টায় গরুগুলোকে খাবার দিয়ে আমি ঘুমাতে যাই। রাত প্রায় ১টায় গরুর ছোটাছুটির শব্দে আমার ঘুম ভাঙে। তখন গোয়াল ঘরে ঢুকতে গিয়ে দরজা স্পর্শ করতেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মাটিতে পড়ে যাই। তাৎক্ষণিক উঠে ঘরের মেইন সুইচ বন্ধ করে গোয়াল ঘরে গিয়ে দেখি ছয়টি গরু মরে গেছে। আর বাকি পাঁচটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে আছে।
স্থানীয় প্রতিবেশী মতিউর রহমান বলেন, ছোট খামারি সফিক স্বাবলম্বী হওয়ার আশায় একটা গরু থেকে ১১টা গরু করেন। তিনি খুবই দরিদ্র। অটোরিকশা চালানোর আয় দিয়ে গরু লালন-পালন ও সংসার চালাতেন। দিনরাত পরিশ্রম করে গরুর খামার করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। তার স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। এখন তার কান্না থামছেই না। আশাকরি, সরকার ও বিত্তবানরা তাকে সহযোগিতা করলে সে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
এ বিষয়ে উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম এ কে আজাদ জানান গরুর খামারের মালিক নিজে মিটার থেকে খামারে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেয়াটা ছিল ক্রটিপূর্ন যার কারনে এ দূর্ঘটনা ঘটেছে।
এ ব্যাপারে বাঙ্গরা বাজার থানার ডিউটি অফিসার এ এস আই জুয়েল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন ঘটনা স্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিষেক দাশ জানান- উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় সরেজমিনে গিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত খামার মালিককে দশ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। মৃত. গরুর আনুমানিক দাম নির্ধারণ করে ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন দেয়ার জন্য স্থানীয় মেম্বার ও প্যানেল চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা জেলায় পাঠানো হবে এবং সেখান থেকে বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে পরবর্তী সহায়তা প্রদান করা হবে।