ঢাকা ০৬:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে বিল বই ছাড়া ব্যবহার হচ্ছে গ্যাস, থেমে নেই অবৈধ সংযোগ

শামীম আহম্মেদ, মুরাদনগর:

বাখরাবাদ গ্যাসের আওতাধীন কুমিল্লার মুরাদনগরে থেমে নেই অবৈধ গ্যাস-সংযোগ। শুধু তাই নয়, কিছু দালাল চক্রের যোগসাজসে রাইজার স্থাপন করে বিল বই ছাড়া বছরের পর বছর গ্যাস ব্যবহার করছে শত শত গ্রাহক। আর এই কাজে গোপনে সহযোগিতা করার অভিযোগ ওঠেছে অদৃশ্য ক্ষমতা বলে দীর্ঘ ৭ বছর যাবত দায়িত্বে থাকা দেবিদ্বার গ্যাস অফিসের সহকারী প্রকৌশলী অতুল কুমার নাগের বিরুদ্ধে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে নতুন লাইন ফালানো হয়, নবীপুর, নগরপাড় ও রহিমপুর গ্রামে। যারা নতুন পাইপ লাইন নির্মাণ করেছেন তারা স্থানীয় ওয়ার্কসপের দোকানে চাকরি করা মিস্ত্রি। যার ফলে এ লাইনগুলোতে যে কোন মুহুর্তে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে এলাকাবাসী আশংকা করছে। লাইনের মালিকদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, ‘দেবিদ্বার গ্যাস অফিসের অতুল স্যার বলছে করোনার জন্য অফিসেম লোকজন নাই। পারলে স্থানীয় লোকজন দিয়ে কাজ করে ফেলেন।’ কোন ডিমান্ড নোট আছে কিনা জানতে চাইলে, তারা বলেন, যার মাধ্যমে কাজ করেছি তার কাছে আছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাখরাবাদ গ্যাসের একাধিক ঠিকাদার বলেন, দেবিদ্বার গ্রাস অফিসে ঠিকাদারের চাইতে দালালদের আনাগোনা বেশী। দালালদের কোন লাইসেন্স না থাকায় তারা অতুল কুমার নাগের সাথে আতঁাত করে রাতের অন্ধকারে অবৈধ ভাবে লাইন নির্মাণ করছেন। যার ফলে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছে। আর পকেট ভরছে অতুল কুমার নাগ ও দালাল চক্র। সরকারি ভাবে চুলা বাড়ানো ও নতুন লাইন সম্প্রসারণ করার কোন অনুমতি না থাকায় বছর শেষে লাইসেন্স রেনু করাতে হিমশিম খাচ্ছে ঠিকাদাররা। আবার অনেক ঠিকাদার গত ২/৩ বছর যাবত লাইসেন্স রেনু করাচ্ছেন না।

খেঁাজ নিয়ে জানা যায়, গ্যাস অফিসের সহকারী প্রকৌশলী অতুল কুমার নাগকে ম্যানেজ করে মুরাদনগর উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের পরমতলা, জাহাপুর ইউনিয়নের দড়িকান্দি, শুশুন্ডা, ছালিয়াকান্দি ইউনিয়নের বোরারচর, সুবিলারচর, দারোরা ইউনিয়নের দারোরা, নোয়াকান্দি ও পুকুরপাড়সহ ১৯/২০টি গ্রামে প্রায় ২ হাজার পরিবার বিল বই ছাড়া দীর্ঘদিন যাবত গ্যাস ব্যবহার করছে। আরো জানা যায়, পান্নারপুলে থাকা দুই গ্যাস পাম্পে অবৈধ লাইন ও বিল ভাউচারে মাসোহারা নিচ্ছেন। দীর্ঘ ৭ বছর যাবত দেবিদ্বার গ্যাস অফিসে তঁার এহেন কর্মকান্ডের জন্য বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিকবার তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। রহস্যজনক কারণে সে পার পেয়ে যায়। ফলে আরো বেপরোয়া হয়ে সুকৌশলে দুই উপজেলায় একাধিক চক্রের সাথে যোগসাজস তৈরী করে অজস্র টাকার মালিক বনে গেছেন তিনি। তঁার ঘনিষ্টজনদের কাছে বলেন, উর্ধ্বতন অফিস ম্যানেজ করেই আমি এখানে আছি।

এ ব্যাপারে অবৈধ গ্যাস সংযোগে অভিযুক্ত দেবিদ্বার গ্যাস অফিসের সহকারী প্রকৌশলী অতুল কুমার নাগ তঁার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বর্তমানে গ্যাস লাইন সম্প্রসারণ ও চুলা বাড়ানোর কোন অনুমতি নাই। কেউ এ কাজ করে থাকলে তা অবৈধ। সরেজমিন পরির্দশনে জানতে পারি অবৈধ গ্যাস সংযোগে আপনি জড়িত এমন প্রশ্নে? তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। কোন কথা থাকলে অফিসে আসেন এই বলেই তিনি মোবাইল ফোনের লাইন কেটে দেন।

দেবিদ্বার গ্যাস অফিসের ইনচার্জ (অ.দা) মো. শাহ আলমের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট ভাবে কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, বিল বই ছাড়া গ্যাস ব্যবহার করা অপরাধ। আপনি যেসব এলাকার নাম বলেছেন তা খতিয়ে দেখা হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে ৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান মেলার পুরস্কার বিতরন অনুষ্ঠিত

মুরাদনগরে বিল বই ছাড়া ব্যবহার হচ্ছে গ্যাস, থেমে নেই অবৈধ সংযোগ

আপডেট সময় ০৫:০৬:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ জুন ২০২০

শামীম আহম্মেদ, মুরাদনগর:

বাখরাবাদ গ্যাসের আওতাধীন কুমিল্লার মুরাদনগরে থেমে নেই অবৈধ গ্যাস-সংযোগ। শুধু তাই নয়, কিছু দালাল চক্রের যোগসাজসে রাইজার স্থাপন করে বিল বই ছাড়া বছরের পর বছর গ্যাস ব্যবহার করছে শত শত গ্রাহক। আর এই কাজে গোপনে সহযোগিতা করার অভিযোগ ওঠেছে অদৃশ্য ক্ষমতা বলে দীর্ঘ ৭ বছর যাবত দায়িত্বে থাকা দেবিদ্বার গ্যাস অফিসের সহকারী প্রকৌশলী অতুল কুমার নাগের বিরুদ্ধে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে নতুন লাইন ফালানো হয়, নবীপুর, নগরপাড় ও রহিমপুর গ্রামে। যারা নতুন পাইপ লাইন নির্মাণ করেছেন তারা স্থানীয় ওয়ার্কসপের দোকানে চাকরি করা মিস্ত্রি। যার ফলে এ লাইনগুলোতে যে কোন মুহুর্তে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে এলাকাবাসী আশংকা করছে। লাইনের মালিকদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, ‘দেবিদ্বার গ্যাস অফিসের অতুল স্যার বলছে করোনার জন্য অফিসেম লোকজন নাই। পারলে স্থানীয় লোকজন দিয়ে কাজ করে ফেলেন।’ কোন ডিমান্ড নোট আছে কিনা জানতে চাইলে, তারা বলেন, যার মাধ্যমে কাজ করেছি তার কাছে আছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাখরাবাদ গ্যাসের একাধিক ঠিকাদার বলেন, দেবিদ্বার গ্রাস অফিসে ঠিকাদারের চাইতে দালালদের আনাগোনা বেশী। দালালদের কোন লাইসেন্স না থাকায় তারা অতুল কুমার নাগের সাথে আতঁাত করে রাতের অন্ধকারে অবৈধ ভাবে লাইন নির্মাণ করছেন। যার ফলে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছে। আর পকেট ভরছে অতুল কুমার নাগ ও দালাল চক্র। সরকারি ভাবে চুলা বাড়ানো ও নতুন লাইন সম্প্রসারণ করার কোন অনুমতি না থাকায় বছর শেষে লাইসেন্স রেনু করাতে হিমশিম খাচ্ছে ঠিকাদাররা। আবার অনেক ঠিকাদার গত ২/৩ বছর যাবত লাইসেন্স রেনু করাচ্ছেন না।

খেঁাজ নিয়ে জানা যায়, গ্যাস অফিসের সহকারী প্রকৌশলী অতুল কুমার নাগকে ম্যানেজ করে মুরাদনগর উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের পরমতলা, জাহাপুর ইউনিয়নের দড়িকান্দি, শুশুন্ডা, ছালিয়াকান্দি ইউনিয়নের বোরারচর, সুবিলারচর, দারোরা ইউনিয়নের দারোরা, নোয়াকান্দি ও পুকুরপাড়সহ ১৯/২০টি গ্রামে প্রায় ২ হাজার পরিবার বিল বই ছাড়া দীর্ঘদিন যাবত গ্যাস ব্যবহার করছে। আরো জানা যায়, পান্নারপুলে থাকা দুই গ্যাস পাম্পে অবৈধ লাইন ও বিল ভাউচারে মাসোহারা নিচ্ছেন। দীর্ঘ ৭ বছর যাবত দেবিদ্বার গ্যাস অফিসে তঁার এহেন কর্মকান্ডের জন্য বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিকবার তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। রহস্যজনক কারণে সে পার পেয়ে যায়। ফলে আরো বেপরোয়া হয়ে সুকৌশলে দুই উপজেলায় একাধিক চক্রের সাথে যোগসাজস তৈরী করে অজস্র টাকার মালিক বনে গেছেন তিনি। তঁার ঘনিষ্টজনদের কাছে বলেন, উর্ধ্বতন অফিস ম্যানেজ করেই আমি এখানে আছি।

এ ব্যাপারে অবৈধ গ্যাস সংযোগে অভিযুক্ত দেবিদ্বার গ্যাস অফিসের সহকারী প্রকৌশলী অতুল কুমার নাগ তঁার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বর্তমানে গ্যাস লাইন সম্প্রসারণ ও চুলা বাড়ানোর কোন অনুমতি নাই। কেউ এ কাজ করে থাকলে তা অবৈধ। সরেজমিন পরির্দশনে জানতে পারি অবৈধ গ্যাস সংযোগে আপনি জড়িত এমন প্রশ্নে? তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। কোন কথা থাকলে অফিসে আসেন এই বলেই তিনি মোবাইল ফোনের লাইন কেটে দেন।

দেবিদ্বার গ্যাস অফিসের ইনচার্জ (অ.দা) মো. শাহ আলমের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট ভাবে কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, বিল বই ছাড়া গ্যাস ব্যবহার করা অপরাধ। আপনি যেসব এলাকার নাম বলেছেন তা খতিয়ে দেখা হবে।