মুরাদনগর বার্তা ডেস্কঃ
প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন কৌশলে এক এক করে পাঁচ বিয়ে করেছেন কুমিল্লার সুরুজ মিয়া। বিয়ে করাই যেন তার একমাত্র নেশা। সবশেষ স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে আসলে বাধা দেন বৃদ্ধ বাবা আকমত আলী। তাই জনসম্মুখেই বাবাকে হাতুড়িপেটা করেন তিনি।
সেই ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। নিরূপায় হয়ে ছেলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেন বাবা।
গত শুক্রবার মুরাদনগর উপজেলার ধামঘর গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটে।
ভুক্তভোগী বাবা আকমত আলীর অভিযোগ, তার ছেলে সুরুজ মিয়া পরিবারের লোকজন ছাড়াই প্রথমে দেবিদ্বার উপজেলার ধলাহাস গ্রামের মাফিয়া খাতুনকে বিয়ে করেন। তার সঙ্গে পাঁচ বছর সংসার করে দুটি সন্তানসহ তাকে তালাক দেন। পরে তিনি উপজেলার কাজিয়াতল গ্রামের আছমা আক্তারকে বিয়ে করে দুবাই চলে যান। সেখানে দুবাই প্রবাসী যশোরের ফাতেমা আক্তার নামে আরেক মেয়েকে বিয়ে করেন তিনি। তখন থেকেই বাড়িতে থাকা আছমা আক্তারের সঙ্গে সুরুজ মিয়ার দ্বন্দ্ব শুরু হয়। পরবর্তীতে হোমনা থানার ওমরাবাদ গ্রামের আমির হোসেনের মেয়ে সাজেদা বেগম নামের এক মেয়েকে বিয়ে করে মাত্র তিনমাস পরই আবার তালাকও দেন সুরুজ। সর্বশেষে গত চার মাস আগে মুরাদনগর উত্তর পাড়ার জায়েদ আলীর মেয়ে সুবর্ণা বেগমকে বিয়ে করেন তিনি। এই স্ত্রীকে ঘরে তুলতে এলে তার বাবা বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত শুক্রবার সুরুজ তার বাবাকে কিলঘুষিসহ হাতুড়িপেটা করে রক্তাক্ত জখম করেন।
বৃদ্ধ আকমত আলী জানান, তিনি কিছুদিন আগে তার সাত শতক জমি দুই লাখ টাকায় বিক্রি করেন। ওই টাকা থেকে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা ও গরু বিক্রির ৫০ হাজার টাকা ধার নেন সুরুজ মিয়া। আকমত আলী ওষুধ খাওয়ার জন্য সুরুজের কাছে পাওনা টাকা চাইলে তাকে গালিগালাজ করে মারধর করতে আসেন। শুধু তাই নয়, সুরুজের দ্বিতীয় স্ত্রী আছমা আক্তার বৃদ্ধ আকমতের দেখাশুনা করায় তাকেও বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন তিনি।
আকমত বলেন, ‘জন্মদাতা পিতা হয়ে কতটুকু কষ্টে থানায় গিয়ে অভিযোগ দিয়েছি তা আপনাদেরকে বোঝাতে পারব না। শেষ বয়সে একটু শান্তিতে মরতে চাই।’
বাবাকে হাতুড়িপেটা করা সুরুজের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ি আমার ঘর, তারা আমার বিষয়ে নাক গলানোর কে?’ বাবাকে মারধর করেছেন কেন? এমন প্রশ্নে সুরুজ বলেস, ‘শালার বেটাকে জানে মাইরা ফেলা উচিত। সে আমার পক্ষে কথা বলে না।’
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাহিদ আহমেদ বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’