ঢাকা ০৩:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে বৈশাখ রাঙাতে কুমারপাড়ায় ব্যস্ততা

সফিকুল ইসলাম, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ

বাংলা নববর্ষকে সামনে রেখে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কুমারপাড়ার কারিগররা মাটির খেলনা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আর কয়েকদিন পরই পয়লা বৈশাখ। বাংলার ঐতিহ্য বৈশাখী মেলা সারাদেশের মতো মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে দিনব্যাপী বসে বৈশাখী মেলা। প্রতিবছর এই বৈশাখী মেলায় নারী, পুরুষ শিশুরা উপস্থিত হয়ে আনন্দ উপভোগ করে। বৈশাখী মেলা এলেই অসংখ্য নারী শিশু মাটির খেলনা কিনতে মেলায় ভির করে। আর এসব খেলনা তৈরী করে এখানকার কুমার পাড়ার কারিগররা। বাপদাদার পেশা বলে আজও তারা মাটি দিয়ে খেলা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে।

উপজেলার রামচন্দ্রপুর, কামাল্লা, পাচকিত্তা, শ্রীকাইল এলাকার কুমারপাড়াগুলোতে চলছে মাটির জিনিসপত্র। তৈরির পর রং তুলির শেষ ব্যস্ততা। নববর্ষের বর্ষবরণ এবং বিভিন্ন স্থানের মেলায় মাটির পাত্র, হাড়ি, কলস, দইয়ের পাত্র, সানকিসহ বিভিন্ন খেলনা যেমন-বাঘ, হরিণ, গরু, ঘোড়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন পশু-পাখি, ফুলের টব, রকমারী পুতুল তৈরী করতে বিরামহীন কাজ করছে কুমারপালেরা। বিভিন্ন তৈজসপত্র ও ঘর সাজানোর উপকরণগুলো ইতোমধ্যেই চলে গিয়েছে শহরের বিভিন্ন দোকানে। ইচ্ছে মত রং আর তুলির আঁচড়ে সাজিয়ে নিচ্ছেন এসব উপকরণগুলো।

কামাল্লা গৃামের সন্ধ্যা রাণী পাল ও শিখা রাণী পাল জানান, এখন আগের মতো মাটির জিনিসের কদর নেই। সারা বছর টানাপোড়েনের মধ্যে চলে তাদের সংসার। পূর্বপুরুষের পেশা হওয়ায় ইচ্ছা হলেও ছাড়তে পারছেন না তারা। সারা বছর অবসর সময় পার করলেও, বৈশাখী মেলায় মাটির তৈরি খেলনা ও জিনিসপত্রের চাহিদা থাকায় এ সময়টাতে একটু ব্যস্ততা থাকে তাদের।

কথা হয় মৃৎশিল্পী হরি ভূষন পালের সাথে। তিনি বলেন, ‘বছরের এই একটা উৎসব ঘিরে তাদের অনেক আশা থাকে। এমনিতে সারা বছর মৃৎশিল্পের তেমন চাহিদা থাকে না। এখন আর মাটির জিনিসের তেমন কদরও নেই। বৈশাখ মাস এলে মেলায় মাটির তৈরি খেলনা ও সামগ্রীর চাহিদা থাকে। তাই এ সময়টায় কিছু আয় হয়।’ তবে তিনি হতাশার সুরে বলেন, ‘সরকারের কাছ থেকে আমরা কোন সহযোগীতা পাইনা! সরকার যদি আমাদেরকে সহযোগীতা করতো তাইলে ব্যবসাটা ভালোভাবে করতে পারতাম!’

রামচন্দ্রপুর গ্রামের খুশি পাল বলেন, ‘আমার বয়স প্রায় ৫০ ছুঁই ছুঁই। আমার বিয়ের পর থেকেই এই পেশার সঙ্গে আমি জড়িত। আগে মাটির সামগ্রীর প্রচুর চাহিদা থাকলেও এখন আর তেমন নেই। এই শিল্পের সঙ্গে আমাদের জীবন-জীবিকা নির্ভরশীল।’

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগর বিএনপির নেতা কায়কোবাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপ প্রচারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

মুরাদনগরে বৈশাখ রাঙাতে কুমারপাড়ায় ব্যস্ততা

আপডেট সময় ০৯:২৬:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

সফিকুল ইসলাম, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ

বাংলা নববর্ষকে সামনে রেখে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কুমারপাড়ার কারিগররা মাটির খেলনা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আর কয়েকদিন পরই পয়লা বৈশাখ। বাংলার ঐতিহ্য বৈশাখী মেলা সারাদেশের মতো মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে দিনব্যাপী বসে বৈশাখী মেলা। প্রতিবছর এই বৈশাখী মেলায় নারী, পুরুষ শিশুরা উপস্থিত হয়ে আনন্দ উপভোগ করে। বৈশাখী মেলা এলেই অসংখ্য নারী শিশু মাটির খেলনা কিনতে মেলায় ভির করে। আর এসব খেলনা তৈরী করে এখানকার কুমার পাড়ার কারিগররা। বাপদাদার পেশা বলে আজও তারা মাটি দিয়ে খেলা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে।

উপজেলার রামচন্দ্রপুর, কামাল্লা, পাচকিত্তা, শ্রীকাইল এলাকার কুমারপাড়াগুলোতে চলছে মাটির জিনিসপত্র। তৈরির পর রং তুলির শেষ ব্যস্ততা। নববর্ষের বর্ষবরণ এবং বিভিন্ন স্থানের মেলায় মাটির পাত্র, হাড়ি, কলস, দইয়ের পাত্র, সানকিসহ বিভিন্ন খেলনা যেমন-বাঘ, হরিণ, গরু, ঘোড়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন পশু-পাখি, ফুলের টব, রকমারী পুতুল তৈরী করতে বিরামহীন কাজ করছে কুমারপালেরা। বিভিন্ন তৈজসপত্র ও ঘর সাজানোর উপকরণগুলো ইতোমধ্যেই চলে গিয়েছে শহরের বিভিন্ন দোকানে। ইচ্ছে মত রং আর তুলির আঁচড়ে সাজিয়ে নিচ্ছেন এসব উপকরণগুলো।

কামাল্লা গৃামের সন্ধ্যা রাণী পাল ও শিখা রাণী পাল জানান, এখন আগের মতো মাটির জিনিসের কদর নেই। সারা বছর টানাপোড়েনের মধ্যে চলে তাদের সংসার। পূর্বপুরুষের পেশা হওয়ায় ইচ্ছা হলেও ছাড়তে পারছেন না তারা। সারা বছর অবসর সময় পার করলেও, বৈশাখী মেলায় মাটির তৈরি খেলনা ও জিনিসপত্রের চাহিদা থাকায় এ সময়টাতে একটু ব্যস্ততা থাকে তাদের।

কথা হয় মৃৎশিল্পী হরি ভূষন পালের সাথে। তিনি বলেন, ‘বছরের এই একটা উৎসব ঘিরে তাদের অনেক আশা থাকে। এমনিতে সারা বছর মৃৎশিল্পের তেমন চাহিদা থাকে না। এখন আর মাটির জিনিসের তেমন কদরও নেই। বৈশাখ মাস এলে মেলায় মাটির তৈরি খেলনা ও সামগ্রীর চাহিদা থাকে। তাই এ সময়টায় কিছু আয় হয়।’ তবে তিনি হতাশার সুরে বলেন, ‘সরকারের কাছ থেকে আমরা কোন সহযোগীতা পাইনা! সরকার যদি আমাদেরকে সহযোগীতা করতো তাইলে ব্যবসাটা ভালোভাবে করতে পারতাম!’

রামচন্দ্রপুর গ্রামের খুশি পাল বলেন, ‘আমার বয়স প্রায় ৫০ ছুঁই ছুঁই। আমার বিয়ের পর থেকেই এই পেশার সঙ্গে আমি জড়িত। আগে মাটির সামগ্রীর প্রচুর চাহিদা থাকলেও এখন আর তেমন নেই। এই শিল্পের সঙ্গে আমাদের জীবন-জীবিকা নির্ভরশীল।’