সুমন সরকার, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার মুরাদনগরে ব্রিজের রড কেটে তা বিক্রি করেছেন বলে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার সকালে উপজেলার কামাল্লা ইউনিয়নের নয়াগাঁও বাজারে এ ঘটনা ঘটে। পরে বৃহস্পতিবার ব্রিজের রড বিক্রির বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় ইউপি সদস্য মমিন সরকার ও গ্রাম্য পুলিশ এর নেতৃত্বে নয়াগাঁও বাজারের একটি বাঙ্গারি দোকান থেকে চুরি হওয়া রড উদ্ধার করে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাশার খাঁনের নিকট হস্তান্তর করেন। পরে ওই চেয়ারম্যান এ রড চুরি ও বিক্রির সাথে যারা সম্পৃক্ত তাদের বিচার করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন, তবে কোনদিন বিচার করবে তা কাউকে জানান নি। সরকারি ব্রিজের রড চুরির বিষয়টি প্রশাসনকে না জানিয়ে চেয়ারম্যান সমাধানের উদ্যোগ নেওয়ায় এ নিয়ে এলাকায় জনমনে ক্ষোভ এবং উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত নয়াগাঁও বাজার বটগাছতলা ব্রিজের রেলিং সহ বিভিন্ন অংশ থেকে রড কেটে তা বিক্রি করছেন একটি চক্র। রাতের আধাঁরে এভাবে ব্রিজের বিভিন্ন অংশ ভেঙে রড বের করে নিয়ে গেলেও ওই চক্রটি ছিলো ধরাছোয়ার বাহিরে। সর্বশেষ বুধবার এ ব্রিজের থেকে কেটে নেওয়া রড নয়াগাঁও বাজারের একটি বাঙ্গারি দোকান থেকে উদ্ধার হলে তখন এ রড বিক্রির সাথে জড়িত ৪ জনের নাম আসে। জড়িতরা হলেন- নয়াগাঁও গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে মো: সাগর, মিজানুর রহমানের ছেলে মো: ইউসুফ, মৃত. নুরু মিয়ার ছেলে মহসিন মিয়া এ ব্রিজের রেলিং ভেঙে রড চুরি করে নিয়ে যায়। পরে এ চুরি করা রড বিক্রির উদ্দেশ্যে কামাল্লা বাজারের ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী ফারুক মিয়ার কাছে একটি অটোরিকশা দিয়ে পাঠায় নয়াগাঁও গ্রামের মৃত. আসমত আলীর ছেলে কামাল শেখ। পরে ফারুক এ রডগুলো পরিমোপ করে সাড়ে ১৯ কেজি হয়েছে বলে কামাল শেখকে জানালে, কামাল শেখ অভিযুক্ত সাগরকে টাকা আনার জন্য পাঠালে সাগর গিয়ে টাকা নিয়ে আসে। পরে ব্রিজ ভেঙে রড চুরির বিক্রির বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় ইউপি সদস্য মমিন সরকার এ রডগুলো উদ্ধার করে ইউপি চেয়ারম্যান বাশার খাঁনের নিকট নিয়ে গেলে ওই রডগুলো ইউনিয়ন পরিষদে রাখার জন্য নির্দেশ দেন বাশার খাঁন।
এ বিষয়ে কামাল শেখ বলেন, আমি মোবাইলে এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারবো না, যদি কোন কিছু আপনাদের জানার প্রয়োজন হয় বাশার চেয়ারম্যানের যোগাযোগ করেন।
বাঙ্গারি দোকানদার ফারুক বলেন, আমার দোকানের মালামাল কেনার জন্য একটি রিকশা কামাল্লা বাজারে গেলে আসার সময় কামাল শেখ এ রডগুলো তুলে দেন এবং আমাকে ফোন করে রডগুলো পরিমাপ করে জানানোর জন্য বলেন। আমি পরিমাপ করে সাড়ে ১৯ কেজি রড হয়েছে বলে কামাল শেখকে জানালে উনি সাগর নামে একজকে পাঠায় এবং আমি তার কাছে রডের দাম দিয়ে দেই। তবে এ রডগুলো যে ব্রিজ ভেঙে সংগ্রহ করা হয়েছে তা আমি জানতাম না।
ইউপি সদস্য মমিন সরকার বলেন, স্থানীয় কয়েকজন যুবক রড চুরি করে ভাঙ্গারি দোকানে বিক্রি করেছে বলে জানতে পেরে ওই দোকান থেকে রডগুলো উদ্ধার করি এবং চেয়ারম্যানের নির্দেশে ওই রডগুলো ইউনিয়ন পরিষদে রেখে আসি। পরে শুনেছি স্থানীয়ভাবে চেয়ারম্যান বিষয়টি মিমাংসা করবেন।
ইউপি চেয়ারম্যান বাশার খাঁন বলেন, এলাকার পোলাপাইন না বুঝে ব্রিজ ভেঙে রড বিক্রি করেছে। রডগুলো উদ্ধার করে ইউনিয়ন পরিষদে রাখা হয়েছে। আমি স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করছি।
মুাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসিম বলেন, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত স্বাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।