ঢাকা ০৩:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ১৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে ব্রীজ নির্মানের ৫ বছরে হয়নি সংযোগ সড়ক

সুমন সরকারঃ

কুমিল্লার মুরাদনগরে ব্রীজ নির্মানের ৫ বছরেও নির্মিত হয়নি সংযোগ সড়ক। উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের রঘুরামপুর-গাজীপুর এলাকায় নির্মিত এ ব্রীজে সংযোগ সড়ক না থাকায় চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে ওই এলাকার প্রায় ১০ গ্রামের বাসিন্দারা। স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় নির্মিত এ ব্রীজটি নির্মানের ৫ বছরেও চলাচলের উপযোগী না করায় এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ দিকে ব্রীজ নির্মানের পর সংযোগ সড়ক নির্মান না করায় স্থানীয়দের উদ্যোগে ব্রীজের নিচ দিয়েই বাঁশের সাকো নির্মান করে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে এলাকাবাসী।

জানা যায়, জেলার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের অবহেলিত রঘুরামপুর-গাজীপুর এলাকার প্রায় ১০টি গ্রামের জনসাধারণের চলাচলের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল একেবারেই নাজুক। স্বাধীনতার পর থেকে এসব গ্রামে উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি। স্থানীয়রা জানায়, ২০০৮ সালে এলাকাবাসীর চাঁদায় গ্রামের প্রধান একটি সড়ক নির্মিত হয়। গত সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হয়ে ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন এফসিএ অবহেলিত এসব গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ ও গ্রামীন অবকাঠামোর আওতায় বেশ কিছু রাস্তা-ঘাট নির্মান করেন। এতে এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্থি ফিরে আসে। এদিকে রঘুরামপুর থেকে গাজীপুর যাতায়াতের জন্য বিলের মাঝে একটি খালের উপর এডিবির অর্থায়ানে একটি ব্রীজ নির্মানের বরাদ্ধ দেয়া হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ নামমাত্র ৪টি খুটির উপড় একটি ছাদের আস্তর দিয়ে ব্রীজটি নির্মান করা হয়। এ ব্রিজ নির্মানের ৫ বছর পেড়িয়ে গেলেও দু-পাশে কোন এপ্রোচ (সংযোগ) সড়ক নির্মান করা হয়নি। সড়ক থেকে ব্রিজটি অনেক উপরে। এর দু-পাশে গোড়ায় কোন মাটি নেই। ব্রিজের দুপাশে মাটি না থাকায় ৫ বছরেও ব্রিজটি অত্র এলাকার জনগনের কোন কাজে আসেনি। রঘুরামপুর গ্রামের কৃষক বাদশা মিয়া ও সমীর মৃধা বলেন, শুধু এই ব্রীজটির কারনে আমরা এখন অনেক কষ্টে আছি। জমিতে ফসল ফলানোর পর তা বিক্রির জন্য বাজারজাত করতে লেবার খরচ বেশী দিতে হয়। এক বস্তা ক্ষিরা রিকশায় নিলে যেখানে ২০ টাকা দিলে চলত,সেখানে ২০০ টাকা দিয়ে মেইন রোডে  নিতে হয়। সকল ধরনের কৃষিপন্য আনা নেওয়ায় খরচ বেশী পড়ায় আমরা বেশ অসুবিধার মধ্যে আছি। বেগম সুফিয়া সৈকত কলেজের ১ম ও ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী  সজিব মৃধা, নাদিয়া আক্তার, জসিম উদ্দিন জানান, এই ব্রীজটির কারনে কলেজে যাতায়াত করতে আমাদের অনেক সমস্যা হয়, এটি আমাদের কোন কাজে আসছেনা। ব্রিজের নীচে সাকো নির্মান করে আমরা কোন রকম পারাপার হচ্ছি। আর বর্ষা এলে নৌকা করে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়। ইতিপুর্বে বাঁশের এই সাকো থেকে পড়ে বেশ কিছু শিক্ষার্থী আহতও হয়েছেন। সাবেক ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন বলেন , এই রাস্তাটি দিয়ে আশপাশের দশ গ্রামের মানুষের চলাফেরা। ব্রীজটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ার কারনে এই রাস্তায় কোন রিকশা ,গাড়ী চলে না। যাতায়াত ব্যাবস্থার বেহাল দশা, ছেলে মেয়েদের স্কুল কলেজে আসা যাওয়া করতে কষ্ট হয়। এদিকে পন্যবাহী যান চলাচল না করার কারণে ওই এলাকার কৃষকরা কৃষি কাজে উৎসাহ হারাচ্ছে। সাধারন কৃষকদের দাবি এই ব্রিজটি যেন অবিলম্বে চলাচলের উপযুক্ত করে দেওয়া হয়। যাত্রাপুর ইউপির ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য জহিরুল হক খোকন বলেন, রঘুরামপুর  থেকে বের হতে এটিই একমাত্র রাস্তা, ব্রীজটির গুরুত্ব অনেক, তাই এ ব্যাপারে আমি এমপি মহোদয়কে বেশ কয়েকবার অবহিত করেছি। আমি ইউপি সদস্য হওয়ার পর এই ব্রীজটির কারনে জনগনের অনেক গালমন্দ শুনে আসতেছি। বাশেঁর সাকো দিয়ে  রাখতে পারিনা কিছু দিন পর কারা যেন চুরি করে সাকোর বাঁশ নিয়ে যায়। ব্রীজটিতে সংযোগ সড়কের ব্যবস্থা করা হলে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ  সাধারন মানুষের ভোগান্তি লাগব হবে।

এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ব্রীজটি ওই এলাকার জনসাধারণের জন্য অত্যন্ত  গুরুত্বপুর্ণ, বিষয়টি আমাদের দৃস্টি গোচর হয়েছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ৪০দিন কর্মসূচীর বরাদ্ধ আসলে  এর আওতায় এ ব্রীজের সংযোগ সড়ক নির্মান করা হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে জাতীয় কন্যা শিশু দিবস পালিত

মুরাদনগরে ব্রীজ নির্মানের ৫ বছরে হয়নি সংযোগ সড়ক

আপডেট সময় ১১:৩৩:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ অক্টোবর ২০১৮
সুমন সরকারঃ

কুমিল্লার মুরাদনগরে ব্রীজ নির্মানের ৫ বছরেও নির্মিত হয়নি সংযোগ সড়ক। উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের রঘুরামপুর-গাজীপুর এলাকায় নির্মিত এ ব্রীজে সংযোগ সড়ক না থাকায় চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে ওই এলাকার প্রায় ১০ গ্রামের বাসিন্দারা। স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় নির্মিত এ ব্রীজটি নির্মানের ৫ বছরেও চলাচলের উপযোগী না করায় এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ দিকে ব্রীজ নির্মানের পর সংযোগ সড়ক নির্মান না করায় স্থানীয়দের উদ্যোগে ব্রীজের নিচ দিয়েই বাঁশের সাকো নির্মান করে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে এলাকাবাসী।

জানা যায়, জেলার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের অবহেলিত রঘুরামপুর-গাজীপুর এলাকার প্রায় ১০টি গ্রামের জনসাধারণের চলাচলের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল একেবারেই নাজুক। স্বাধীনতার পর থেকে এসব গ্রামে উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি। স্থানীয়রা জানায়, ২০০৮ সালে এলাকাবাসীর চাঁদায় গ্রামের প্রধান একটি সড়ক নির্মিত হয়। গত সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হয়ে ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন এফসিএ অবহেলিত এসব গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ ও গ্রামীন অবকাঠামোর আওতায় বেশ কিছু রাস্তা-ঘাট নির্মান করেন। এতে এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্থি ফিরে আসে। এদিকে রঘুরামপুর থেকে গাজীপুর যাতায়াতের জন্য বিলের মাঝে একটি খালের উপর এডিবির অর্থায়ানে একটি ব্রীজ নির্মানের বরাদ্ধ দেয়া হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ নামমাত্র ৪টি খুটির উপড় একটি ছাদের আস্তর দিয়ে ব্রীজটি নির্মান করা হয়। এ ব্রিজ নির্মানের ৫ বছর পেড়িয়ে গেলেও দু-পাশে কোন এপ্রোচ (সংযোগ) সড়ক নির্মান করা হয়নি। সড়ক থেকে ব্রিজটি অনেক উপরে। এর দু-পাশে গোড়ায় কোন মাটি নেই। ব্রিজের দুপাশে মাটি না থাকায় ৫ বছরেও ব্রিজটি অত্র এলাকার জনগনের কোন কাজে আসেনি। রঘুরামপুর গ্রামের কৃষক বাদশা মিয়া ও সমীর মৃধা বলেন, শুধু এই ব্রীজটির কারনে আমরা এখন অনেক কষ্টে আছি। জমিতে ফসল ফলানোর পর তা বিক্রির জন্য বাজারজাত করতে লেবার খরচ বেশী দিতে হয়। এক বস্তা ক্ষিরা রিকশায় নিলে যেখানে ২০ টাকা দিলে চলত,সেখানে ২০০ টাকা দিয়ে মেইন রোডে  নিতে হয়। সকল ধরনের কৃষিপন্য আনা নেওয়ায় খরচ বেশী পড়ায় আমরা বেশ অসুবিধার মধ্যে আছি। বেগম সুফিয়া সৈকত কলেজের ১ম ও ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী  সজিব মৃধা, নাদিয়া আক্তার, জসিম উদ্দিন জানান, এই ব্রীজটির কারনে কলেজে যাতায়াত করতে আমাদের অনেক সমস্যা হয়, এটি আমাদের কোন কাজে আসছেনা। ব্রিজের নীচে সাকো নির্মান করে আমরা কোন রকম পারাপার হচ্ছি। আর বর্ষা এলে নৌকা করে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়। ইতিপুর্বে বাঁশের এই সাকো থেকে পড়ে বেশ কিছু শিক্ষার্থী আহতও হয়েছেন। সাবেক ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন বলেন , এই রাস্তাটি দিয়ে আশপাশের দশ গ্রামের মানুষের চলাফেরা। ব্রীজটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ার কারনে এই রাস্তায় কোন রিকশা ,গাড়ী চলে না। যাতায়াত ব্যাবস্থার বেহাল দশা, ছেলে মেয়েদের স্কুল কলেজে আসা যাওয়া করতে কষ্ট হয়। এদিকে পন্যবাহী যান চলাচল না করার কারণে ওই এলাকার কৃষকরা কৃষি কাজে উৎসাহ হারাচ্ছে। সাধারন কৃষকদের দাবি এই ব্রিজটি যেন অবিলম্বে চলাচলের উপযুক্ত করে দেওয়া হয়। যাত্রাপুর ইউপির ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য জহিরুল হক খোকন বলেন, রঘুরামপুর  থেকে বের হতে এটিই একমাত্র রাস্তা, ব্রীজটির গুরুত্ব অনেক, তাই এ ব্যাপারে আমি এমপি মহোদয়কে বেশ কয়েকবার অবহিত করেছি। আমি ইউপি সদস্য হওয়ার পর এই ব্রীজটির কারনে জনগনের অনেক গালমন্দ শুনে আসতেছি। বাশেঁর সাকো দিয়ে  রাখতে পারিনা কিছু দিন পর কারা যেন চুরি করে সাকোর বাঁশ নিয়ে যায়। ব্রীজটিতে সংযোগ সড়কের ব্যবস্থা করা হলে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ  সাধারন মানুষের ভোগান্তি লাগব হবে।

এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ব্রীজটি ওই এলাকার জনসাধারণের জন্য অত্যন্ত  গুরুত্বপুর্ণ, বিষয়টি আমাদের দৃস্টি গোচর হয়েছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ৪০দিন কর্মসূচীর বরাদ্ধ আসলে  এর আওতায় এ ব্রীজের সংযোগ সড়ক নির্মান করা হবে।