ঢাকা ১১:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে রোহিঙ্গাকে জন্ম নিবন্ধন দেওয়ার অভিযোগে ইউপি সচিবসহ গ্রেফতার ২

মো: নাজিম উদ্দিন, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলায় রোহিঙ্গা যুবককে জন্ম-সনদ প্রদানের অভিযোগে সদর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ইসমাইল হোসেন(৪২) ও ব্যবসায়ী নকীব মোহাম্মদ নাছরুল্লাহকে (২৭) গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

শুক্রবার দুপুর দুপুরে গ্রেফতারকৃত ইউপি সচিবকে কুমিল্লার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে বুধবার (১৯ জুন) সন্ধ্যায় মুরাদনগরের বাখরনগর বাজার থেকে নাছরুল্লাহকে ও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলা সদরের নিমাইকান্দি এলাকা থেকে তাকে আটক করে নিয়ে যায় কুমিল্লা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল।

ইউপি সচিব ইসমাইল কুমিল্লা জেলার আদর্শ উপজেলার গুনানন্দি গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে। তিনি মুরাদনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব। নকীব মোহাম্মদ নাছরুল্লাহ মুরাদনগরের কুলু বাড়ি এলাকা মো. শাহজাহান মিয়ার ছেলে। তিনি কোম্পানিগঞ্জ বাজারের নকীব ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের মালিক।

জানা যায়, গত ১৫ ফেব্রæয়ারী কুমিল্লা আঞ্চলিক অফিসে পাসপোর্ট অফিসে মুরাদনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঘোড়াশাল গ্রামের ভুয়া পরিচয়ে জন্ম নিবন্ধন বানিয়ে পাসর্পোট করতে এসে ইয়াছিন (১৯) নামের এক রোহিঙ্গা যুবক কর্মকর্তাদের হাতে আটক হন। তার পর পাসর্পোট অফিসের কর্মকর্তারা রোহিঙ্গা যুবককে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রোহিঙ্গা যুবক ইয়াছিন জানায়, সে মিয়ানমারের বলিবাজার এলাকার সৈয়দ হোসেনের ছেলে। মিয়ানমার থেকে গত ২০ দিন আগে বাংলাদেশে আসার পর কক্সবাজার বালুখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বøক-৯ থাকতো। তার চাচাতো ভাই ওসমান কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন মদিনা ট্রাভেলসের হাসান মাহমুদ ও মোশাররফ নামে ২ দালালের কাছে পাসপোর্ট করার কন্টাক্ট দেয়। পরে কন্ট্রাক্ট অনুযায়ী হাসান মাহমুদ ও মোশাররফ কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার পশ্চিম ঘোড়াশাল গ্রামের ভুয়া ঠিকানায় রোহিঙ্গা যুবক ইয়াছিনের সকল কাগজপত্র তৈরি করে দেয়।

এই ঘটনায় সে সময় কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করে গোয়েন্দা পুলিশ। রোহিঙ্গা যুবক কীভাবে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করেছেন এ বিষয়টির তদন্তে নামে গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্তে ইউপি সচিব ইসমাইল হোসেনসহ বেশ কয়েকজনের সম্পৃক্ত থাকার তথ্য পায় গোয়েন্দারা।

এ বিষয়ে মুরাদনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী তুফরীজ এটন বলেন, আমি সচিবকে সর্বোচ্চ সুবিধা দিয়েছি। তারপর তাকে কেন এসব করতে হবে। যারা টাকার বিনিময়ে এসব করেছে তারা শাস্তি পাবে।

কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেশ বড়ুয়া জানান, রোহিঙ্গা যুবককে জন্মনিবন্ধন দেয়ার মামলায় সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ইউপি সচিব ইসমাইলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করা হবে।

মুরাদনগর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত উদ্দিন বলেন, রোহিঙ্গা জন্মনিবন্ধন সংক্রান্ত সরকারি মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের সেবা চালু রাখার জন্য ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে মাদ্রাসায় যান না পাঁচ বছর নিয়মিত বেতন তোলেন শিক্ষক

মুরাদনগরে রোহিঙ্গাকে জন্ম নিবন্ধন দেওয়ার অভিযোগে ইউপি সচিবসহ গ্রেফতার ২

আপডেট সময় ০৩:৩১:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ জুন ২০২৪

মো: নাজিম উদ্দিন, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলায় রোহিঙ্গা যুবককে জন্ম-সনদ প্রদানের অভিযোগে সদর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ইসমাইল হোসেন(৪২) ও ব্যবসায়ী নকীব মোহাম্মদ নাছরুল্লাহকে (২৭) গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

শুক্রবার দুপুর দুপুরে গ্রেফতারকৃত ইউপি সচিবকে কুমিল্লার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে বুধবার (১৯ জুন) সন্ধ্যায় মুরাদনগরের বাখরনগর বাজার থেকে নাছরুল্লাহকে ও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলা সদরের নিমাইকান্দি এলাকা থেকে তাকে আটক করে নিয়ে যায় কুমিল্লা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল।

ইউপি সচিব ইসমাইল কুমিল্লা জেলার আদর্শ উপজেলার গুনানন্দি গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে। তিনি মুরাদনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব। নকীব মোহাম্মদ নাছরুল্লাহ মুরাদনগরের কুলু বাড়ি এলাকা মো. শাহজাহান মিয়ার ছেলে। তিনি কোম্পানিগঞ্জ বাজারের নকীব ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের মালিক।

জানা যায়, গত ১৫ ফেব্রæয়ারী কুমিল্লা আঞ্চলিক অফিসে পাসপোর্ট অফিসে মুরাদনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঘোড়াশাল গ্রামের ভুয়া পরিচয়ে জন্ম নিবন্ধন বানিয়ে পাসর্পোট করতে এসে ইয়াছিন (১৯) নামের এক রোহিঙ্গা যুবক কর্মকর্তাদের হাতে আটক হন। তার পর পাসর্পোট অফিসের কর্মকর্তারা রোহিঙ্গা যুবককে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রোহিঙ্গা যুবক ইয়াছিন জানায়, সে মিয়ানমারের বলিবাজার এলাকার সৈয়দ হোসেনের ছেলে। মিয়ানমার থেকে গত ২০ দিন আগে বাংলাদেশে আসার পর কক্সবাজার বালুখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বøক-৯ থাকতো। তার চাচাতো ভাই ওসমান কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন মদিনা ট্রাভেলসের হাসান মাহমুদ ও মোশাররফ নামে ২ দালালের কাছে পাসপোর্ট করার কন্টাক্ট দেয়। পরে কন্ট্রাক্ট অনুযায়ী হাসান মাহমুদ ও মোশাররফ কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার পশ্চিম ঘোড়াশাল গ্রামের ভুয়া ঠিকানায় রোহিঙ্গা যুবক ইয়াছিনের সকল কাগজপত্র তৈরি করে দেয়।

এই ঘটনায় সে সময় কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করে গোয়েন্দা পুলিশ। রোহিঙ্গা যুবক কীভাবে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করেছেন এ বিষয়টির তদন্তে নামে গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্তে ইউপি সচিব ইসমাইল হোসেনসহ বেশ কয়েকজনের সম্পৃক্ত থাকার তথ্য পায় গোয়েন্দারা।

এ বিষয়ে মুরাদনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী তুফরীজ এটন বলেন, আমি সচিবকে সর্বোচ্চ সুবিধা দিয়েছি। তারপর তাকে কেন এসব করতে হবে। যারা টাকার বিনিময়ে এসব করেছে তারা শাস্তি পাবে।

কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেশ বড়ুয়া জানান, রোহিঙ্গা যুবককে জন্মনিবন্ধন দেয়ার মামলায় সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ইউপি সচিব ইসমাইলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করা হবে।

মুরাদনগর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত উদ্দিন বলেন, রোহিঙ্গা জন্মনিবন্ধন সংক্রান্ত সরকারি মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের সেবা চালু রাখার জন্য ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হবে।