ঢাকা ১২:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের বিরুদ্ধে খাল দখলের অভিযোগ

শামীম আহম্মেদ, মুরাদনগর:

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় সরকারি চাকরিজীবীর পদবী ব্যবহার করে সাইনবোর্ড লাগিয়ে খাল দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই অভিযোগ উপজেলার বাঙ্গরা বজার থানাধীন আকুবপুর ইউনিয়নের ঘোড়াশাল গ্রামে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আকুবপুর ইউনিয়নের ঘোড়াশাল গ্রামে ৬৬২নং দাগের সরকারি খালের পাড়ে ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি সাইবোর্ড রয়েছে। সাইনবোর্ডে লেখা আছে, ‘দখল সূত্রে ১৫০ বছরের মালিক সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আশিকুর রহমান, জমির পরিমান ১০ শতক, মৌজা ১৪নং মেটংঘর, ঘোড়াশাল মুরাদনগর, কুমিল্লা।’

খেঁাজ নিয়ে জানা যায়, সাইনবোর্ডে লিখা আশিকুর রহমান পাশের মোহাম্মদপুর গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে এবং কিশোরগঞ্জ জেলায় সহকারী জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে কর্মরত। মুঠোফোনে তঁার সাথে যোগাযোগ করে সাইনবোর্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাকে না জানিয়ে কে বা কারা ফায়দা লুটার জন্য সাইনবোর্ড ব্যবহার করেছে। বিষয়টি আমি দেখব।’

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, খালটি ঘোড়াশাল গ্রামের মৃত রাহাত মিয়ার ছেলে হোসেন মিয়া, মৃত আব্দুল কাদিরের ছেলে জাকির হোসেন, মৃত সোনা মিয়ার ছেলে সবুর মিয়ার যোগসাজসে মোটা সুবিধা নিয়ে একই গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে জালাল মিয়াকে খালটি ভরাট করে দখলে দেওয়ার পরিকল্পনা নেয় তারা। সেই মোতাবেক কৌশলে ওই ম্যাজিষ্ট্রেটের নাম পদবী ব্যবহার করে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন। যাতে ভয়ে কেউ এ বিষয় নিয়ে নাক না গলায়। সরকারি খালে ব্যক্তি মালিকানা সাইনবোর্ড দেখে ঘোড়াশাল গ্রামের আবু ছায়েদ ভূমি অফিসে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের বিষয়ে তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমার জমির সামনে খাল। এ খালের পানি দিয়ে আমি ও আমার আশ-পাশের জমির মালিকরা চাষাবাদ করেন। একটি চক্র প্রভাবশালী ব্যক্তির সাইনবোর্ড লাগিয়ে খাল ভরাট করার পঁায়তারা করছেন। খালটি ভরাট হয়ে গেলে অনেক জমি চাষাবাদ করা যাবে না। তাই নিরূপায় হয়ে ভূমি অফিসে অভিযোগ দিয়েছি। রহস্যজনক কারণে ভূমি অফিস স্থায়ী কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

খাট ভরাট ও সাইবোর্ড লাগানোর বিষয়ে অভিযোগ ওঠা হোসেন মিয়া, জাকির হোসেন ও সবুর মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা মুঠো ফোনে বলেন, ‘খালটি সরকারি ঠিক আছে। তবে জালাল মিয়াকে সরকার থেকে লীজ এনে দেওয়ার চেষ্টা করছি বলে মোবাইল ফোনের লাইন কেটে দেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে, আকুবপুর ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক সোহাগ বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরই ঘটনাস্থলে গিয়ে সাইনবোর্ড সরিয়ে নিতে বলি। কিছুদিন পূর্বে এ খাল ড্রেজার দিয়ে ভরাট করতে চাইলে আমি গিয়ে বঁাধা প্রদান করি। গাছ কেটে নেওয়ার বিষয়ে পরবতর্ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।’

মুরাদনগর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম কমল বলেন, ‘বিষয়টা আমি খেঁাজ-খবর নিয়ে দেখছি। যদি ঘটনা সত্যি হয়, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে ৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান মেলার পুরস্কার বিতরন অনুষ্ঠিত

মুরাদনগরে সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের বিরুদ্ধে খাল দখলের অভিযোগ

আপডেট সময় ০৩:১০:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুলাই ২০২০

শামীম আহম্মেদ, মুরাদনগর:

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় সরকারি চাকরিজীবীর পদবী ব্যবহার করে সাইনবোর্ড লাগিয়ে খাল দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই অভিযোগ উপজেলার বাঙ্গরা বজার থানাধীন আকুবপুর ইউনিয়নের ঘোড়াশাল গ্রামে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আকুবপুর ইউনিয়নের ঘোড়াশাল গ্রামে ৬৬২নং দাগের সরকারি খালের পাড়ে ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি সাইবোর্ড রয়েছে। সাইনবোর্ডে লেখা আছে, ‘দখল সূত্রে ১৫০ বছরের মালিক সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আশিকুর রহমান, জমির পরিমান ১০ শতক, মৌজা ১৪নং মেটংঘর, ঘোড়াশাল মুরাদনগর, কুমিল্লা।’

খেঁাজ নিয়ে জানা যায়, সাইনবোর্ডে লিখা আশিকুর রহমান পাশের মোহাম্মদপুর গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে এবং কিশোরগঞ্জ জেলায় সহকারী জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে কর্মরত। মুঠোফোনে তঁার সাথে যোগাযোগ করে সাইনবোর্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাকে না জানিয়ে কে বা কারা ফায়দা লুটার জন্য সাইনবোর্ড ব্যবহার করেছে। বিষয়টি আমি দেখব।’

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, খালটি ঘোড়াশাল গ্রামের মৃত রাহাত মিয়ার ছেলে হোসেন মিয়া, মৃত আব্দুল কাদিরের ছেলে জাকির হোসেন, মৃত সোনা মিয়ার ছেলে সবুর মিয়ার যোগসাজসে মোটা সুবিধা নিয়ে একই গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে জালাল মিয়াকে খালটি ভরাট করে দখলে দেওয়ার পরিকল্পনা নেয় তারা। সেই মোতাবেক কৌশলে ওই ম্যাজিষ্ট্রেটের নাম পদবী ব্যবহার করে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন। যাতে ভয়ে কেউ এ বিষয় নিয়ে নাক না গলায়। সরকারি খালে ব্যক্তি মালিকানা সাইনবোর্ড দেখে ঘোড়াশাল গ্রামের আবু ছায়েদ ভূমি অফিসে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের বিষয়ে তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমার জমির সামনে খাল। এ খালের পানি দিয়ে আমি ও আমার আশ-পাশের জমির মালিকরা চাষাবাদ করেন। একটি চক্র প্রভাবশালী ব্যক্তির সাইনবোর্ড লাগিয়ে খাল ভরাট করার পঁায়তারা করছেন। খালটি ভরাট হয়ে গেলে অনেক জমি চাষাবাদ করা যাবে না। তাই নিরূপায় হয়ে ভূমি অফিসে অভিযোগ দিয়েছি। রহস্যজনক কারণে ভূমি অফিস স্থায়ী কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

খাট ভরাট ও সাইবোর্ড লাগানোর বিষয়ে অভিযোগ ওঠা হোসেন মিয়া, জাকির হোসেন ও সবুর মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা মুঠো ফোনে বলেন, ‘খালটি সরকারি ঠিক আছে। তবে জালাল মিয়াকে সরকার থেকে লীজ এনে দেওয়ার চেষ্টা করছি বলে মোবাইল ফোনের লাইন কেটে দেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে, আকুবপুর ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক সোহাগ বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরই ঘটনাস্থলে গিয়ে সাইনবোর্ড সরিয়ে নিতে বলি। কিছুদিন পূর্বে এ খাল ড্রেজার দিয়ে ভরাট করতে চাইলে আমি গিয়ে বঁাধা প্রদান করি। গাছ কেটে নেওয়ার বিষয়ে পরবতর্ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।’

মুরাদনগর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম কমল বলেন, ‘বিষয়টা আমি খেঁাজ-খবর নিয়ে দেখছি। যদি ঘটনা সত্যি হয়, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’