মোঃ রায়হান চৌধুরী, স্টাফ রির্পোটারঃ
রোজ মঙ্গলবার, ০৩ নভেম্বর ২০১৫ ইং (মুরাদনগর বার্তা ডটকম):
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের মোচাগড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে বাংলা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগে উত্তকোচ নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। বিদ্যালয়টিতে দীর্ঘ ২০ বছর যাবত করনিক হিসেবে জাহাঙ্গীর আলম কর্মরত থেকেও ২ লাখ টাকা ডোনেশান দিতে না পারায় সহকারী শিক্ষক হতে না পারায় ক্ষুপ্ত হয়ে জাহাঙ্গীর আলম শিক্ষামন্ত্রীসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
জানা যায়, মোচাগড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে করনিক পদে দায়িত্ব পালন করছেন জাহাঙ্গীর আলম। পাশাপাশি ভবিষ্যতে সহকারী শিক্ষক হওয়ার আশায় তিনি বি-এ, বি-এড ও নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। করনিক পদে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সহকারী শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে তিনি অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। ইতিমধ্যে বিদ্যালয়ের বাংলা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক শাহিনাজ পারভীন সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে চলে যাওয়ায় এ পদটি শূন্য হয়। উক্ত পদে শিক্ষক নেয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি দিলে করনিক জাহাঙ্গীর আলম প্রার্থী হন। এরই মধ্যে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভায় অভিভাবক সদস্য মির্জা আবুল হাশেম প্রস্তাব করেন যে, সহকারী শিক্ষক হতে হলে করনিক জাহাঙ্গীর আলম ২ লাখ টাকা ডোনেশান দিতে হবে। তখন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ আলম মিয়া ১ লাখ টাকার উপরে রাজি না হওয়ার জন্য করনিক জাহাঙ্গীর আলমকে বলেন যে, এ ছাড়াও নিয়োগ বোর্ডে আরো অনেক খরচ আছে। উক্ত বিষয়ে করনিক জাহাঙ্গীর আলমের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ ও আলোচনা ছাড়াই উক্ত প্রস্তাবটিতে একমত হতে না পারায় যোগ্যতার ভিত্তিতে সহকারী শিক্ষক নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এরপরও বুক ভরা আশা নিয়ে করনিক জাহাঙ্গীর আলম গত শনিবার লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিলেও পরিকল্পিত ভাবে তাকে ৪ নম্বর করা হয়। বস্তুত শেষ পর্যন্ত ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হুমায়ন কবীর ও প্রধান শিক্ষক শাহ আলম মিয়ার অবৈধ হস্তক্ষেপে দীর্ঘ ২০ বছর যাবত কর্মরত করনিক জাহাঙ্গীর আলমকে বাংলা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদে না নিয়ে অন্য প্রার্থীকে নিয়োগ দেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
করনিক জাহাঙ্গীর আলম আক্ষেপ প্রকাশ করে জানান যে, লাঠি ও টাকার জোর না থাকার কারনে তিনি সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাননি। মানুষ গড়ার কারখানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও যদি এ ধরণের নগ্ন হস্তক্ষেপ করা হয় তাহলে নিরীহ অসহায়রা যাবে কোথায়? প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বেতন পেয়ে না পেয়ে, খেয়ে না খেয়ে এ পর্যন্ত যতটুকু সম্ভব সততার সাথে দায়িত্ব পালন করার পরও কেন স্বপ্ন পূরণ হলো না প্রশ্নটি দেশের বিবেকবান মানুষের কাছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ আলম মিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, করনিক জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ডোনেশান চাওয়ার বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটি কোন সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় অবশেষে মেধা অনুসারেই বাংলা শিক্ষক নেয়া হয়েছে।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হুমায়ন কবীর জানান, শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২ লাখ টাকা ডোনেশান চাওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। আমাকে ছাড়া অন্য কেউ এ বিষয়ে আলোচনা করতে পারে। তবে সকল প্রকার নিয়ম-কানুন মেনেই শিক্ষক নেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রতন কুমার সাহা জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। পরীক্ষার আগে জানলে হয়তো কিছু করতে পারতাম।