ঢাকা ১১:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগর আকুবপুর স্কুলের ভোটার তালিকা সংশোধনের দাবিতে মানববন্ধন

শামিম আহম্মদ:

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বজাার থানাধীন আকুবপুর ইয়াকুব আলী ভুইয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে ত্রুটিপূর্ণ ভোটার তালিকা সংশোধনের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধনে ভোটার তালিকা সংশোধন করে পুনরায় তফসিল ঘোষণাসহ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিখা রানী রায়ের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

সোমবার দুপুরে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এ মানববন্ধন করে অভিভাবকরা।

এ সময় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিল্লাল হোসেন, সফিকুল ইসলাম, নিজাম খান, শিরিনা বেগম, ছাদেকুর রহমান, হেলাল মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সালাউদ্দিন মেম্বার, জালাল মিয়া, দুলাল মিয়া, ফোরকান খান, মামুন মিয়া, আরিফ খান, আব্দুল মান্নান মাষ্টার,আবুবকর খান ও আকলিমা আক্তারসহ অর্ধশতাধিক অভিভাবক।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, আকুবপুর ইয়াকুব আলী ভুইয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিখা রানী রায় একটি মহলের ইন্ধনে পরিকল্পিত ভাবে ত্রুটিপূর্ণ ভোটার তালিকা করেন। ৩৭০ জন ভোটারের মধ্যে প্রায় ৮০ জন ভোটারের নামই ভুল। এর মধ্যে ৪ বছর পূর্বে মারা যাওয়া ব্যক্তিকেও ভোটার করা হয়েছে। অনেক অভিভাবককে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। বিধি মোতাবেক খসড়া ভোটার তালিকা শ্রেণি কক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠ করে শোনানোর কথা থাকলেও তা করা হয়নি এবং নোটিশ বোর্ডেও খসড়া ভোটার তালিকা টানানো হয়নি। ভোটার তালিকা দেখার জন্য বিদ্যালয়ে গেলেও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কোন অভিভাবককে তালিকাটি দেখাননি। তফসিল অনুসারে সোমবার ছিল মনোয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। কিন্তু অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে আগ্রহী প্রার্থীরা মনোনয়ন ফরম নিতে এসে ভোটার তালিকা ত্রুটি দেখে হতভম্ব হয়ে পড়েন। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে অভিভাবকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে যে কোন মুহুর্তে বড় ধরণের অঘটন ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। এ দিকে বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে রোববার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেছে নির্বাচনে আগ্রহী ৬ প্রার্থী। আগামী ৩ সেপ্টেম্বর অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনের কথা রয়েছে। সে মতে গত ১০ আগষ্ট তফসিল ঘোষণা করা হয়।

অভিযোগকারী শিরিনা বেগম জানান, আমার স্বামী জীবন মিয়া দীর্ঘদিন যাবত প্রবাসে থাকার পরও তার নামে ভোটার করা হয় (ভোটার নং ২৭২)। সফিকুল ইসলাম জানান, আমার ৬ষ্ঠ ও ১০ম শ্রেণিতে দু’জন শিক্ষার্থী রয়েছে। আমি যেন প্রার্থী হতে না পারি সে জন্য ১০ম শ্রেনির শিক্ষার্থীর নামে আমাকে ভোটার করা হয়েছে (ভোটার নং ৩২২)। তিনি আরো জানান, ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীর ভোটার তালিকায় শফিকুল ইসলামের স্থলে পরিকল্পিত ভাবে ইসলাম মিয়া লিপিবদ্ধ করেছে (ভোটার নং ২৬)। বিল্লাল হোসেন জানান, আমার ছেলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। রোল নং ০১ থাকা সত্বেও ভোটার তালিকায় আমার নামের স্থলে সুফিয়া খাতুনের নাম রয়েছে। ছাদেকুর রহমান জানান, ভোটার তালিকায় আমার নামের স্থলে হাফেজ সাদেকুর রহমান লিপিবদ্ধ করেছে (ভোটার নং ১৮৭)। মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেও আমি প্রার্থীতা নিয়ে শংকিত। হেলাল মিয়া জানান, আমার নামের স্থলে ভোটার তালিকায় ছামদানী লিপিবদ্ধ করেছে (ভোটার নং ১৭)। বিধি মোতাবেক খসড়া ভোটার তালিকা শ্রেণি কক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠ করে শোনানোর কথা থাকলেও তা করা হয়নি এবং নোটিশ বোর্ডেও খসড়া ভোটার তালিকা টানানো হয়নি। নিজাম খান জানান, ভোটার তালিকায় আমার নামের স্থলে দেলোয়ার খান লিপিবদ্ধ করেছে (ভোটার নং ৫১)।

ত্রুটিপূর্ণ ভোটার তালিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিখা রানী রায় আমতা আমতা করে বলেন, এখানে আমার কোন হাত নেই। সরকারি নিয়ম ও বিধি অনুসরণ করে ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।

নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসার ও উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা কবির আহামেদ জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমাকে নির্বাচন সম্পন্ন করার ক্ষমতা দিয়েছে। সে মোতাবেক আমি তফসিল ঘোষণা করেছি। ভোটার তালিকা প্রণয়নের দায়িত্ব প্রধান শিক্ষক ও বর্তমান কমিটির। বিধি মোতাবেক ভোটার তালিকা সংশোধন করার ক্ষমতা আমার নেই।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিষেক দাস উক্ত বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা শিকার করে জানান, অভিযোগ গুলো প্রিজাইডিং অফিসারের নিকট পাঠানো হয়েছে। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে ৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান মেলার পুরস্কার বিতরন অনুষ্ঠিত

মুরাদনগর আকুবপুর স্কুলের ভোটার তালিকা সংশোধনের দাবিতে মানববন্ধন

আপডেট সময় ০২:২০:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ অগাস্ট ২০১৯
শামিম আহম্মদ:

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বজাার থানাধীন আকুবপুর ইয়াকুব আলী ভুইয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে ত্রুটিপূর্ণ ভোটার তালিকা সংশোধনের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধনে ভোটার তালিকা সংশোধন করে পুনরায় তফসিল ঘোষণাসহ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিখা রানী রায়ের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

সোমবার দুপুরে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এ মানববন্ধন করে অভিভাবকরা।

এ সময় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিল্লাল হোসেন, সফিকুল ইসলাম, নিজাম খান, শিরিনা বেগম, ছাদেকুর রহমান, হেলাল মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সালাউদ্দিন মেম্বার, জালাল মিয়া, দুলাল মিয়া, ফোরকান খান, মামুন মিয়া, আরিফ খান, আব্দুল মান্নান মাষ্টার,আবুবকর খান ও আকলিমা আক্তারসহ অর্ধশতাধিক অভিভাবক।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, আকুবপুর ইয়াকুব আলী ভুইয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিখা রানী রায় একটি মহলের ইন্ধনে পরিকল্পিত ভাবে ত্রুটিপূর্ণ ভোটার তালিকা করেন। ৩৭০ জন ভোটারের মধ্যে প্রায় ৮০ জন ভোটারের নামই ভুল। এর মধ্যে ৪ বছর পূর্বে মারা যাওয়া ব্যক্তিকেও ভোটার করা হয়েছে। অনেক অভিভাবককে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। বিধি মোতাবেক খসড়া ভোটার তালিকা শ্রেণি কক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠ করে শোনানোর কথা থাকলেও তা করা হয়নি এবং নোটিশ বোর্ডেও খসড়া ভোটার তালিকা টানানো হয়নি। ভোটার তালিকা দেখার জন্য বিদ্যালয়ে গেলেও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কোন অভিভাবককে তালিকাটি দেখাননি। তফসিল অনুসারে সোমবার ছিল মনোয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। কিন্তু অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে আগ্রহী প্রার্থীরা মনোনয়ন ফরম নিতে এসে ভোটার তালিকা ত্রুটি দেখে হতভম্ব হয়ে পড়েন। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে অভিভাবকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে যে কোন মুহুর্তে বড় ধরণের অঘটন ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। এ দিকে বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে রোববার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেছে নির্বাচনে আগ্রহী ৬ প্রার্থী। আগামী ৩ সেপ্টেম্বর অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনের কথা রয়েছে। সে মতে গত ১০ আগষ্ট তফসিল ঘোষণা করা হয়।

অভিযোগকারী শিরিনা বেগম জানান, আমার স্বামী জীবন মিয়া দীর্ঘদিন যাবত প্রবাসে থাকার পরও তার নামে ভোটার করা হয় (ভোটার নং ২৭২)। সফিকুল ইসলাম জানান, আমার ৬ষ্ঠ ও ১০ম শ্রেণিতে দু’জন শিক্ষার্থী রয়েছে। আমি যেন প্রার্থী হতে না পারি সে জন্য ১০ম শ্রেনির শিক্ষার্থীর নামে আমাকে ভোটার করা হয়েছে (ভোটার নং ৩২২)। তিনি আরো জানান, ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীর ভোটার তালিকায় শফিকুল ইসলামের স্থলে পরিকল্পিত ভাবে ইসলাম মিয়া লিপিবদ্ধ করেছে (ভোটার নং ২৬)। বিল্লাল হোসেন জানান, আমার ছেলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। রোল নং ০১ থাকা সত্বেও ভোটার তালিকায় আমার নামের স্থলে সুফিয়া খাতুনের নাম রয়েছে। ছাদেকুর রহমান জানান, ভোটার তালিকায় আমার নামের স্থলে হাফেজ সাদেকুর রহমান লিপিবদ্ধ করেছে (ভোটার নং ১৮৭)। মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেও আমি প্রার্থীতা নিয়ে শংকিত। হেলাল মিয়া জানান, আমার নামের স্থলে ভোটার তালিকায় ছামদানী লিপিবদ্ধ করেছে (ভোটার নং ১৭)। বিধি মোতাবেক খসড়া ভোটার তালিকা শ্রেণি কক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠ করে শোনানোর কথা থাকলেও তা করা হয়নি এবং নোটিশ বোর্ডেও খসড়া ভোটার তালিকা টানানো হয়নি। নিজাম খান জানান, ভোটার তালিকায় আমার নামের স্থলে দেলোয়ার খান লিপিবদ্ধ করেছে (ভোটার নং ৫১)।

ত্রুটিপূর্ণ ভোটার তালিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিখা রানী রায় আমতা আমতা করে বলেন, এখানে আমার কোন হাত নেই। সরকারি নিয়ম ও বিধি অনুসরণ করে ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।

নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসার ও উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা কবির আহামেদ জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমাকে নির্বাচন সম্পন্ন করার ক্ষমতা দিয়েছে। সে মোতাবেক আমি তফসিল ঘোষণা করেছি। ভোটার তালিকা প্রণয়নের দায়িত্ব প্রধান শিক্ষক ও বর্তমান কমিটির। বিধি মোতাবেক ভোটার তালিকা সংশোধন করার ক্ষমতা আমার নেই।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিষেক দাস উক্ত বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা শিকার করে জানান, অভিযোগ গুলো প্রিজাইডিং অফিসারের নিকট পাঠানো হয়েছে। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।