ঢাকা ০৭:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগর উপজেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভাতার টাকা অত্মসাতের অভিযোগ

মাহবুব আলম আরিফ, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শাহিন আক্তার মায়ার বিরুদ্ধে প্রশিক্ষণার্থীদের সম্মানী ভাতা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী একাধিক প্রশিক্ষণার্থী উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা অভিষেক দাশের কাছে লিখিত অভিযোগ প্রদান করে।

বুধবার বিকেলে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জাতীয় মহিলা সংস্থার মাধ্যমে গত ২০২১-২২ অর্থ বছরে ‘তৃণমূল পর্যায়ের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্প’র অধীনে ২৮৯ জনকে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, ই-কমার্স, ফ্যাশন ডিজাইন, বিউটিফিকেশন, ক্যাটারিং, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে প্রশিক্ষন দেয়া হয়। যা গত ১৪ মার্চ সম্পূর্ণ হয়। তাদের মধ্যে ৪০ দিনের প্রশিক্ষণার্থীদের ৬ হাজার এবং ৮০ দিনের প্রশিক্ষণার্থীদের ১২ হাজার টাকা সম্মানী ভাতা প্রদান করার কথা ছিল। কিন্তু প্রশিক্ষন শেষে সম্মানী ভাতা আনতে গেলেই মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শাহীন আক্তার মায়াকে দিতে হয় দুই হাজার থেকে চার হাজার টাকা। তাছাড়াও প্রশিক্ষন চলাকালিন সময়ে বিভিন্ন অযুহাতে একশ থেকে তিন’শ টাকা দিতে হতো প্রশিক্ষনার্থীদের। তার চাহিদা মতো টাকা না দেয়ায় প্রায় ১৮০ জনের ভাতার চেক এখনো হস্তান্তর না করায়। এই বিষয়ে কয়েকজন প্রশিক্ষনার্থী তার সাথে কথা বলতে গেলে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে তাদের কে অফিস থেকে বের করে দেন শাহিন আক্তার মায়া।

প্রশিক্ষণার্থী রোকসানা খাতুন, তানজিনা আক্তার, খাদিজা আক্তার ও মঞ্জু বেগম বলেন, ‘আমরা একসাথে ৪০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি ৮৯ জন ও ৮০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি ২শ জন। যারা ৪০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি তাদের কাছ থেকে আমাদের চেয়ারম্যান মায়া মেডাম অগ্রিম ২ হাজার করে টাকা নিয়ে পরে ৬ হাজার টাকার চেক দিছে। আর যারা ৮০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছে তাদেরকে বলা হইছে প্রত্যেকে ৪ হাজার টাকা করে চেয়ারম্যান মেডামের কাছে অগ্রিম জমা দিতে। তবেই তিনি সকলকে ১২ হাজার টাকা করে চেক প্রদান করবেন। আমরা অনেকেই টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় চেয়ারম্যান মেডাম নানা ভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে বলছে যারা টাকা দিবিনা তাগরে ইয়াবা দিয়া ধরাইয়া দিমু তখন বুজবি মজা।’

এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শাহীন আক্তার মায়া বলেন, ‘আমি কারো কাছ থেকে টাকা নেইনি। কেউ নিয়ে থাকলে আমার তা জানা নেই। ২০১০ সাল থেকে আমি এই চেয়ারে আছি এখন পর্যন্ত আমার বিরুদ্ধে এই ধরণের অভিযোগ আনার সাহস করো হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ বলেন, প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

কুমিল্লা জেলার বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা সংস্থা-মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের চেয়ারম্যান বেগম চেমন আরা তৈয়ব বলেন, প্রশিক্ষণার্থীর কাছ থেকে টাকা নেয়ের কোন সুযোগ নেই। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রবাসীর বাড়ি ঘরে হামলা, নারীসহ আহত ৩

মুরাদনগর উপজেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভাতার টাকা অত্মসাতের অভিযোগ

আপডেট সময় ১১:২৫:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ এপ্রিল ২০২২

মাহবুব আলম আরিফ, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শাহিন আক্তার মায়ার বিরুদ্ধে প্রশিক্ষণার্থীদের সম্মানী ভাতা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী একাধিক প্রশিক্ষণার্থী উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা অভিষেক দাশের কাছে লিখিত অভিযোগ প্রদান করে।

বুধবার বিকেলে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জাতীয় মহিলা সংস্থার মাধ্যমে গত ২০২১-২২ অর্থ বছরে ‘তৃণমূল পর্যায়ের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্প’র অধীনে ২৮৯ জনকে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, ই-কমার্স, ফ্যাশন ডিজাইন, বিউটিফিকেশন, ক্যাটারিং, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে প্রশিক্ষন দেয়া হয়। যা গত ১৪ মার্চ সম্পূর্ণ হয়। তাদের মধ্যে ৪০ দিনের প্রশিক্ষণার্থীদের ৬ হাজার এবং ৮০ দিনের প্রশিক্ষণার্থীদের ১২ হাজার টাকা সম্মানী ভাতা প্রদান করার কথা ছিল। কিন্তু প্রশিক্ষন শেষে সম্মানী ভাতা আনতে গেলেই মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শাহীন আক্তার মায়াকে দিতে হয় দুই হাজার থেকে চার হাজার টাকা। তাছাড়াও প্রশিক্ষন চলাকালিন সময়ে বিভিন্ন অযুহাতে একশ থেকে তিন’শ টাকা দিতে হতো প্রশিক্ষনার্থীদের। তার চাহিদা মতো টাকা না দেয়ায় প্রায় ১৮০ জনের ভাতার চেক এখনো হস্তান্তর না করায়। এই বিষয়ে কয়েকজন প্রশিক্ষনার্থী তার সাথে কথা বলতে গেলে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে তাদের কে অফিস থেকে বের করে দেন শাহিন আক্তার মায়া।

প্রশিক্ষণার্থী রোকসানা খাতুন, তানজিনা আক্তার, খাদিজা আক্তার ও মঞ্জু বেগম বলেন, ‘আমরা একসাথে ৪০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি ৮৯ জন ও ৮০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি ২শ জন। যারা ৪০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি তাদের কাছ থেকে আমাদের চেয়ারম্যান মায়া মেডাম অগ্রিম ২ হাজার করে টাকা নিয়ে পরে ৬ হাজার টাকার চেক দিছে। আর যারা ৮০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছে তাদেরকে বলা হইছে প্রত্যেকে ৪ হাজার টাকা করে চেয়ারম্যান মেডামের কাছে অগ্রিম জমা দিতে। তবেই তিনি সকলকে ১২ হাজার টাকা করে চেক প্রদান করবেন। আমরা অনেকেই টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় চেয়ারম্যান মেডাম নানা ভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে বলছে যারা টাকা দিবিনা তাগরে ইয়াবা দিয়া ধরাইয়া দিমু তখন বুজবি মজা।’

এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শাহীন আক্তার মায়া বলেন, ‘আমি কারো কাছ থেকে টাকা নেইনি। কেউ নিয়ে থাকলে আমার তা জানা নেই। ২০১০ সাল থেকে আমি এই চেয়ারে আছি এখন পর্যন্ত আমার বিরুদ্ধে এই ধরণের অভিযোগ আনার সাহস করো হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ বলেন, প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

কুমিল্লা জেলার বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা সংস্থা-মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের চেয়ারম্যান বেগম চেমন আরা তৈয়ব বলেন, প্রশিক্ষণার্থীর কাছ থেকে টাকা নেয়ের কোন সুযোগ নেই। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।