ঢাকা ০২:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগর ডি আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকের অভাবে পাঠদান ব্যাহত

আজিজুর রহমান রনি, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী মুরাদনগর ডি আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধানসহ পাঁচজন শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এ কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মুরাদনগর উপজেলার মধ্যনগর গ্রামে জমিদার শ্রী দুর্গারাম লোধ ১৮৬০ সালে বিদ্যালয়টি গড়ে তোলেন। এটি ১৯৮৭ সালে সরকারীকরণ করা হয়। বর্তমানে ৫৪৮ জন শিক্ষার্থী আছে। নিয়মানুযায়ী ৩০ জন ছাত্রের জন্য একটি শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন। এ হিসেবে কক্ষের প্রয়োজন ২০টি। অথচ কক্ষ রয়েছে ১০টি। শিক্ষক প্রয়োজন ১৮ জন, রয়েছে ১৩ জন।

সম্প্রতি বিদ্যালয়টিতে গেলে অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী বলে, বাংলা ও ইংরেজি আবশ্যিক বিষয়। এ দুই বিষয়ে দুজন করে শিক্ষক থাকার কথা।

গত ১০ বছর ধরে আছে একজন করে। এর মধ্যে কোনো শিক্ষক ছুটি বা অসুস্থ থাকলে ওই দিন পড়ানো হয় না।

বিদ্যালয় সূত্রে আরো জানা গেছে, সহকারী প্রধানসহ ১৩ জন শিক্ষক রয়েছেন। তাঁরা প্রত্যেকে সংযুক্ত পদে চাকরি করছেন। এক বছর আগে ভৌতবিজ্ঞানের শিক্ষক বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যান। এরপর থেকে এ বিষয়ে কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়েও নেই কোনো শিক্ষক।

অভিযোগ উঠেছে, এক বিষয়ের শিক্ষক দিয়ে অন্য বিষয়ের পাঠ দিলে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়। এতে একদিকে শিক্ষকরা যেমন অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে ক্লান্তিতে ভোগেন, তেমনি ছাত্ররা অমনোযোগী হয়ে পড়ে। এর মাধ্যমে ছাত্ররা দারুণ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ২০১৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় ৮৬ জন পরীক্ষা দিয়ে ৩৭ জন পাস করেছে। এর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে মাত্র পাঁচজন। অনেক সচ্ছল অভিভাবক সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অন্য বিদ্যালয়ের দিকে দৃষ্টি দিচ্ছেন।

এদিকে অফিসে লোকবল সংকট রয়েছে। চতুর্থ শ্রেণির পাঁচজন কর্মচারীর স্থলে আছে দুজন। অফিস সহকারী দুজনের পদ থাকলেও তা শূন্য। অফিশিয়াল কাজকর্ম করতেও কর্তৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছে। দ্বারস্থ হতে হচ্ছে বাজারের কম্পিউটার দোকানগুলোর কাছে। এতে করে তাদের অফিশিয়াল গোপনীয়তা বজায় রাখা কঠিন হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘তিনটি বিষয়ে শিক্ষক নেই। শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনুপাতে এখানে আরো বড় একাডেমিক ভবন প্রয়োজন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতি মাসে জনবল-সংকটের বিষয়টি চিঠি দিয়ে জানানো হয়। কিন্তু জনবল কাঠামো (অর্গানোগ্রাম) তৈরি না হওয়ায় এখানে শিক্ষক পদায়ন করা যাচ্ছে না। যাঁরা এসেছেন, তাঁরা অনেক চেষ্টা করে সংযুক্ত পদে এসেছেন। ’

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাসেলুল কাদের বলেন, ‘এ অবস্থার কথা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমাকে জানাননি। আমি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে সংকট নিরসনের অনুরোধ করব। ’

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের মামলা প্রত্যাহারের দাবি ছাত্রদলের

মুরাদনগর ডি আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকের অভাবে পাঠদান ব্যাহত

আপডেট সময় ০২:২৩:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অগাস্ট ২০১৭
আজিজুর রহমান রনি, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী মুরাদনগর ডি আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধানসহ পাঁচজন শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এ কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মুরাদনগর উপজেলার মধ্যনগর গ্রামে জমিদার শ্রী দুর্গারাম লোধ ১৮৬০ সালে বিদ্যালয়টি গড়ে তোলেন। এটি ১৯৮৭ সালে সরকারীকরণ করা হয়। বর্তমানে ৫৪৮ জন শিক্ষার্থী আছে। নিয়মানুযায়ী ৩০ জন ছাত্রের জন্য একটি শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন। এ হিসেবে কক্ষের প্রয়োজন ২০টি। অথচ কক্ষ রয়েছে ১০টি। শিক্ষক প্রয়োজন ১৮ জন, রয়েছে ১৩ জন।

সম্প্রতি বিদ্যালয়টিতে গেলে অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী বলে, বাংলা ও ইংরেজি আবশ্যিক বিষয়। এ দুই বিষয়ে দুজন করে শিক্ষক থাকার কথা।

গত ১০ বছর ধরে আছে একজন করে। এর মধ্যে কোনো শিক্ষক ছুটি বা অসুস্থ থাকলে ওই দিন পড়ানো হয় না।

বিদ্যালয় সূত্রে আরো জানা গেছে, সহকারী প্রধানসহ ১৩ জন শিক্ষক রয়েছেন। তাঁরা প্রত্যেকে সংযুক্ত পদে চাকরি করছেন। এক বছর আগে ভৌতবিজ্ঞানের শিক্ষক বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যান। এরপর থেকে এ বিষয়ে কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়েও নেই কোনো শিক্ষক।

অভিযোগ উঠেছে, এক বিষয়ের শিক্ষক দিয়ে অন্য বিষয়ের পাঠ দিলে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়। এতে একদিকে শিক্ষকরা যেমন অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে ক্লান্তিতে ভোগেন, তেমনি ছাত্ররা অমনোযোগী হয়ে পড়ে। এর মাধ্যমে ছাত্ররা দারুণ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ২০১৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় ৮৬ জন পরীক্ষা দিয়ে ৩৭ জন পাস করেছে। এর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে মাত্র পাঁচজন। অনেক সচ্ছল অভিভাবক সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অন্য বিদ্যালয়ের দিকে দৃষ্টি দিচ্ছেন।

এদিকে অফিসে লোকবল সংকট রয়েছে। চতুর্থ শ্রেণির পাঁচজন কর্মচারীর স্থলে আছে দুজন। অফিস সহকারী দুজনের পদ থাকলেও তা শূন্য। অফিশিয়াল কাজকর্ম করতেও কর্তৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছে। দ্বারস্থ হতে হচ্ছে বাজারের কম্পিউটার দোকানগুলোর কাছে। এতে করে তাদের অফিশিয়াল গোপনীয়তা বজায় রাখা কঠিন হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘তিনটি বিষয়ে শিক্ষক নেই। শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনুপাতে এখানে আরো বড় একাডেমিক ভবন প্রয়োজন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতি মাসে জনবল-সংকটের বিষয়টি চিঠি দিয়ে জানানো হয়। কিন্তু জনবল কাঠামো (অর্গানোগ্রাম) তৈরি না হওয়ায় এখানে শিক্ষক পদায়ন করা যাচ্ছে না। যাঁরা এসেছেন, তাঁরা অনেক চেষ্টা করে সংযুক্ত পদে এসেছেন। ’

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাসেলুল কাদের বলেন, ‘এ অবস্থার কথা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমাকে জানাননি। আমি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে সংকট নিরসনের অনুরোধ করব। ’