মুরাদনগর বার্তা ডেস্কঃ
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সদর বাজারে টিনের বেড়া কেটে দুই রাতে চারটি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোরের দল নগদ টাকা ও ৫টি মোবাইলসহ তিন লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে গেছে।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মুরাদনগর বাজারের মায়ের দোয়া ইলেকট্রিক এন্ড সোলার, আল করিম স্টোর ও করিম টেলিকমে এ ঘটনা ঘটে। বুধবার সকালে দোকানের তালা খুলে চুরির আলামত দেখতে পান দোকান মালিকরা।
এর আগে সোমবার দিবাগত রাতে একই কায়দায় পার্শ্ববর্তী আলম মিয়ার রড, সিমেন্ট ও কীটনাশক ঔষধের দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে। কিছুদিন পরপর এভাবে চুরির ঘটনায় আতংকে রয়েছেন বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, মঙ্গলবার গভীর রাতে একটি সংঘবদ্ধ চোরের দল মুরাদনগর বাজারের আল করিম ষ্টোর ও করিম টেলিকমের পেছন দিকের টিন কেটে ভেতরে প্রবেশ করে। সেখানে ড্রয়ারে থাকা মোবাইল ও নগদ টাকা নিয়ে যায়। আল করিম স্টোর ও মায়ের দোয়া ইলেকট্রিক এন্ড সোলার এর মধ্যবর্তী টিনের বেড়া কেটে মায়ের দোয়া ইলেকট্রিক এন্ড সোলার দোকানে প্রবেশ করে চোরের দল। সেখানে ইলেকট্রিক ও সোলার ব্যবসার পাশাপাশি মোবাইল রিচার্জ ও বিকাশের ব্যবসা ছিল। উক্ত দোকান থেকে মোবাইল রিচার্জ ও বিকাশের জন্য ব্যবহৃত চারটি মোবাইল, রিচার্জ কার্ড, এমবি কার্ড, সিম, ইলেকট্রিক তারের কয়েল, নগদ টাকা সহ আড়াই লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায় চোরের দল।
মায়ের দোয়া ইলেকট্রিক এন্ড সোলার এর মালিক মো. শামীম জানান, সকালে দোকান খুলে দেখি আমার দোকান আর পার্শ্ববর্তী দোকানের মাঝামাঝি টিনের বেড়া কাটা। সে দোকানের পেছনের টিনের বেড়া কেটে চোরের দল আমার দোকানে ঢুকে চুরি করেছে। আমি ইলেকট্রিক ও সোলার, গ্যাসের সিলিন্ডারের পাশাপাশি মোবাইল রিচার্জ ও বিকাশের ব্যবসা করি। আমার দোকান থেকে চারটি মোবাইল ও নগদ টাকা সহ আড়াই লাখ টাকার মালামাল নিয়ে গেছে।
করিম টেলিকমের মালিক জামাল উদ্দিন বলেন, আমার দোকান থেকে মোবাইল ও নগদ টাকা নিয়ে গেছে। আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। বাজারে কিছুদিন পরপর এভাবে চুরি হতে থাকলে আমরা কিভাবে ব্যবসা করবো।
বাজার কমিটির সাবেক সভাপতি ও আল করিম স্টোরের মালিক আব্দুল করিম বলেন, আমরা পাহারাদারদের জন্য মাসে মাসে টাকা দিচ্ছি কিন্ত চুরি বন্ধ হচ্ছেনা। দুর্বল ও বয়ষ্ক পাহারাদার দিয়ে চলছে বাজার। তাছাড়া বর্তমানে বাজারের কোন কমিটি নেই।
মুরাদনগর বাজারের হোমিওপ্যাথিক ডাক্তর নাজমুস সাকিব তন্ময় বলেন, কিছুদিন পরপরই বাজারে চুরি হচ্ছে। গত কিছুদিন আগে আমার দোকানের গোডাউনে ও আমার পার্শ্ববর্তী স্বর্নের দোকানে চুরি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যবসায় পুঁজি খাটিয়ে এখন নিরাপত্তাহিনতায় ভুগছে। সব সময় চুরি হওয়ার আতংকে থাকতে হয়। এভাবে চলতে থাকলে আর প্রশাসন শক্ত পদক্ষেপ না নিলে চুরি থামানো সম্ভব হবেনা।
আশেপাশের দোকানদার ও স্থানীয় লোকজন জানান, এলাকায় গত কয়েক মাসে বিভিন্ন দোকানে ও বাজারের আশেপাশের বিভিন্ন বাসায় চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতগুলো চুরির ঘটনা ঘটার পরও এখনো পর্যন্ত কোন চোর ধরা পড়েনি। এলাকায় মাদকাসক্ত লোকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এ চুরির ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে বলেও জানান স্থানীয়রা। তাছাড়া চোরের উৎপাতে সারাক্ষণ আতঙ্কে রয়েছেন বলেও জানান এলাকাবাসী।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই। থানায় কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।