ঢাকা ১০:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর চারটি অ্যাম্বুলেন্স থেকেও বঞ্চিত হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরা

মো: মোশাররফ হোসেন মনিরঃ

কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা পাওয়া রোগী এবং তার আত্মীয়ের কাছে অনেকটা আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতো হয়ে পরেছে। অসুস্থ রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নিতে হলে হাসপাতের সামনে থাকা বিভিন্ন বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ও দালালদের খপ্পরে পরতে হচ্ছে রোগীর আত্মীয়স্বজনদের। এতে করে জরুরি প্রয়োজনে রোগীকে আনা-নেওয়া করতে গুনেতে হয় চড়া ভাড়া। হাসপাতালটিতে চারটি অ্যাম্বুলেন্স থাকার পরও সেবা না পাওয়ায় হাসপাতালে আগত রোগী ও স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতাল কমপ্লেক্সের সামনে খোলা আকাশের নিচে প্রায় ১৫ বছর ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে দুইটি অ্যাম্বুলেন্স। অন্য একটি যান্ত্রিকক্রটি ও চালক না থাকা পড়ে থেকে বিকল হয়ে পড়ে। অ্যাম্বুলেন্স গুলো বিকল হওয়ায় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার রোগীরা। এরই মাঝে গত ১৭ মার্চ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা পরিচালনা ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় অবকাঠামো উন্নয়ন উপ-প্রকল্পের মাধ্যমে ২৭ লক্ষ ৬২ হাজার ৫শ’ টাকা মূল্যের একটি অ্যাম্বুলেন্স পায় হাসপাতল কতৃপক্ষ। কিন্তু প্রায় ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও কতৃপক্ষ এই হাসপাতালে কোন চালক নিয়োগ না দেওয়ায় এটিও অচল হয়ে পড়ার অশঙ্কায় রয়েছে স্থানীরা। স্থানীয়দের অভিযোগ রক্ষণাবেক্ষণ ও তত্বাবধানের অভাবেই গাড়ি গুলো চলাচলের সম্পুর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে করে স্বাস্থ্য সেবার কার্যক্রম মারাত্মক ভাবে ব্যাহতসহ ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, যান্ত্রিক ক্রটির কারণে ২০০৬ সালে বিকল হয়ে পড়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স। দীর্ঘ সময় অচল পড়ে থাকায় ইঞ্জিন স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। একইভাবে ২০১৩ সালে অচল হয়ে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে আরো একটি অ্যাম্বুলেন্স। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অ্যাম্বুলেন্স দুটির যন্ত্রাংশও চুরি করে একটি চক্র বিক্রি করে দিয়েছে। অপর একটি অ্যাম্বুলেন্সে প্রায় ৩ বছর থেকে চালক না থাকা ও দীর্ঘ সময় অচল পড়ে থাকায় ইঞ্জিন স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যায়। উপজেলায় প্রায় ১৫ লাখ লোকের বসবাস। তাদের দ্রুত চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স সচল থাকলেও চালক না থাকায় রোগীদের কোন কাজে আসছেনা। এতে করে উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের বসবাসরত প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষের মধ্যে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির হাজার হাজার লোকের ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা। প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসা শত শত রোগী চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের সবকয়টি অ্যাম্বুলেন্স অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকায় মুমূর্ষ রোগীদের চিকিৎসা কাজে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সগুলো কাজে আসছে না। এ সুযোগে রোগী পরিবহনে হাসপাতালের মূল ফটকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স। গুরুতর অসুস্থ রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদর ও ঢাকা নিতে হলে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া উপায় থাকে না।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজমুল আলম বলেন, এখানে বর্তমানে চার টি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি অচল হয়ে আছে। দীর্ঘ দিন থেকে হাসপাতালটিতে অ্যাম্বুলেন্সে চালকের পদটি শূণ্য রয়েছে। এর মধ্যে এই বছর আরো একটি অ্যাম্বুলেন্স এই হাসপাতে যুক্ত হয়েছে। এটি যাতে কোন ভাবে বিকল না হয় তার জন্য আউট সুর্স এর মাধ্যমে ড্রাইবার নিয়োগ দেওয়া হবে। বিকল হওয়া অ্যাম্বুলেন্স সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের মামলা প্রত্যাহারের দাবি ছাত্রদলের

মুরাদনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর চারটি অ্যাম্বুলেন্স থেকেও বঞ্চিত হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরা

আপডেট সময় ০৩:২৯:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জুন ২০২২

মো: মোশাররফ হোসেন মনিরঃ

কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা পাওয়া রোগী এবং তার আত্মীয়ের কাছে অনেকটা আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতো হয়ে পরেছে। অসুস্থ রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নিতে হলে হাসপাতের সামনে থাকা বিভিন্ন বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ও দালালদের খপ্পরে পরতে হচ্ছে রোগীর আত্মীয়স্বজনদের। এতে করে জরুরি প্রয়োজনে রোগীকে আনা-নেওয়া করতে গুনেতে হয় চড়া ভাড়া। হাসপাতালটিতে চারটি অ্যাম্বুলেন্স থাকার পরও সেবা না পাওয়ায় হাসপাতালে আগত রোগী ও স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতাল কমপ্লেক্সের সামনে খোলা আকাশের নিচে প্রায় ১৫ বছর ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে দুইটি অ্যাম্বুলেন্স। অন্য একটি যান্ত্রিকক্রটি ও চালক না থাকা পড়ে থেকে বিকল হয়ে পড়ে। অ্যাম্বুলেন্স গুলো বিকল হওয়ায় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার রোগীরা। এরই মাঝে গত ১৭ মার্চ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা পরিচালনা ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় অবকাঠামো উন্নয়ন উপ-প্রকল্পের মাধ্যমে ২৭ লক্ষ ৬২ হাজার ৫শ’ টাকা মূল্যের একটি অ্যাম্বুলেন্স পায় হাসপাতল কতৃপক্ষ। কিন্তু প্রায় ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও কতৃপক্ষ এই হাসপাতালে কোন চালক নিয়োগ না দেওয়ায় এটিও অচল হয়ে পড়ার অশঙ্কায় রয়েছে স্থানীরা। স্থানীয়দের অভিযোগ রক্ষণাবেক্ষণ ও তত্বাবধানের অভাবেই গাড়ি গুলো চলাচলের সম্পুর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে করে স্বাস্থ্য সেবার কার্যক্রম মারাত্মক ভাবে ব্যাহতসহ ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, যান্ত্রিক ক্রটির কারণে ২০০৬ সালে বিকল হয়ে পড়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স। দীর্ঘ সময় অচল পড়ে থাকায় ইঞ্জিন স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। একইভাবে ২০১৩ সালে অচল হয়ে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে আরো একটি অ্যাম্বুলেন্স। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অ্যাম্বুলেন্স দুটির যন্ত্রাংশও চুরি করে একটি চক্র বিক্রি করে দিয়েছে। অপর একটি অ্যাম্বুলেন্সে প্রায় ৩ বছর থেকে চালক না থাকা ও দীর্ঘ সময় অচল পড়ে থাকায় ইঞ্জিন স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যায়। উপজেলায় প্রায় ১৫ লাখ লোকের বসবাস। তাদের দ্রুত চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স সচল থাকলেও চালক না থাকায় রোগীদের কোন কাজে আসছেনা। এতে করে উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের বসবাসরত প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষের মধ্যে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির হাজার হাজার লোকের ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা। প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসা শত শত রোগী চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের সবকয়টি অ্যাম্বুলেন্স অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকায় মুমূর্ষ রোগীদের চিকিৎসা কাজে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সগুলো কাজে আসছে না। এ সুযোগে রোগী পরিবহনে হাসপাতালের মূল ফটকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স। গুরুতর অসুস্থ রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদর ও ঢাকা নিতে হলে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া উপায় থাকে না।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজমুল আলম বলেন, এখানে বর্তমানে চার টি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি অচল হয়ে আছে। দীর্ঘ দিন থেকে হাসপাতালটিতে অ্যাম্বুলেন্সে চালকের পদটি শূণ্য রয়েছে। এর মধ্যে এই বছর আরো একটি অ্যাম্বুলেন্স এই হাসপাতে যুক্ত হয়েছে। এটি যাতে কোন ভাবে বিকল না হয় তার জন্য আউট সুর্স এর মাধ্যমে ড্রাইবার নিয়োগ দেওয়া হবে। বিকল হওয়া অ্যাম্বুলেন্স সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।