আন্তর্জাতিক :
মুসলিম বিশ্বের চলমান সমস্যা নিরসনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কুয়ালালামপুর সামিটের চেয়ারম্যান ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ।
মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম স্টার জানায়, মুসলিম বিশ্বের চলমান সমস্যা শনাক্ত এবং তা নিরসনের যৌক্তিক পথ খুঁজতে মুসলিম বিশ্বের নেতৃবৃন্দ চার দিনের কুয়ালালামপুর সামিট-১৯ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি সামিটের লক্ষ্য হচ্ছে ইসলামিক সভ্যতার পুনর্জাগরণের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
চলতি সম্মেলনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল প্যালেস্টাইন ইস্যু। প্যালেস্টাইনে ইসরাইলের দখলদারিত্ব মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অঙ্গীকার করে সম্মেলনে অংশ নেয়া প্রতিনিধিরা। এছাড়া বর্তমানে বিশ্বে অন্যতম নির্যাতিত রাখাইনের রোহিঙ্গা ইস্যু আলোচ্যসূচিতে থাকলেও তা নিয়ে দৃশ্যত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে কুয়ালালামপুরে প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এটি দ্বিতীয় সম্মেলন ছিল।
চলতি সম্মেলনে মুসলিম বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ সৌদি আরব, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তান অংশগ্রহণ করেনি। সৌদির দাবি ছিল, মুসলিম বিশ্বের সমস্যা ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) মাধ্যমে আলোচনা হওয়া উচিত। অন্যথায় কুয়ালালামপুর সামিটের কারণে ওআইসি’র প্রভাব শিথিল হয়ে যাবে।
এই প্রসঙ্গে সমাপনী বক্তব্যে মাহাথির বলেন, ‘‘কোনো দেশ কুয়ালালামপুর সামিটে অংশগ্রহণ করবে কিনা তা একান্তই তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। কারণ প্রথমত ইসলামে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু যদি এই সম্মেলন কোনো দেশের সরকারকে আকর্ষণ না করে, তাহলে অন্তত যেন তারা তাদের প্রতিনিধিদের সামিটে প্রেরণ করে।’’
চলতি সম্মেলনে বিতর্কিত ধর্মীয় বক্তা জাকির নায়েকও উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে যেকোনো জাতিগত বিদ্বেষমূলক মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে জাকির নায়েককে অনুরোধ করেন মাহাথির মোহাম্মদ।
সামিটের অন্যতম আয়োজক তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান তার ভাষণে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের মতো মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোর সমন্বয়ে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা তৈরির আহ্বান জানান। ওই সংগঠনটি মুসলিম বিশ্বের প্রায় দুই’শ কোটি মুসলিমের স্বার্থরক্ষায় নিয়োজিত থাকবে।
পাশাপাশি সিরিয়া থেকে আগত শরণার্থী বন্ধে তার দেশের কর্মকাণ্ডকে প্রকাশ্যে সমর্থন না দেয়ায় তিনি কিছুটা ক্ষোভও প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কর্মকাণ্ডে কেউ প্রকাশ্যে সমর্থন করেনি। কিন্তু অস্ত্রের প্রয়োজন হলে যথাসময়ে তা চলে আসে।’ ভবিষ্যতয়ে যেকোনো মুসলিম রাষ্ট্রের সমস্যায় সবাইকে সহযোগিতার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামিদ আল-থানি প্যালেস্টাইনে ইসরাইলের দখলদারিত্ব অবসানের পাশাপাশি উপসাগরে শান্ত পরিস্থিতি বজায় রাখার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।