খেলাধূলা ডেস্কঃ
কুশল মেন্ডিস ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার ব্যাটিং নৈপুণ্যে চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনটি হতাশায় কাটলো স্বাগতিক বাংলাদেশের। মেন্ডিসের ১৯৬ ও ডি সিলভার ১৭৩ রানের পর রোশন সিলভার অপরাজিত ৮৭ রানের সুবাদে ১৩৮ ওভারে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে ৫০৪ রান তুলে দিন শেষ করেছে সফরকারী শ্রীলংকা। বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে এটি শ্রীলংকার সপ্তম সর্বোচ্চ সংগ্রহ। তাই তৃতীয় দিন শেষে ৭ উইকেট হাতে নিয়ে মাত্র ৯ রানে পিছিয়ে লংকানরা। প্রথম ইনিংসে মোমিনুল হকের ১৭৬ রানের উপর ভর করে ৫১৩ রানে অলআউট হয়েছিলো বাংলাদেশ।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিনই ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে ১০৪ রানে অপরাজিত ছিলেন ডি সিলভা। অন্যপ্রান্তে সেঞ্চুরির স্বপ্ন নিয়ে নামের পাশে ৮৭ রান রেখে দিন শেষ করেন মেন্ডিস। এই দু’জনের দৃঢ়তায় ১ উইকেটে ১৮৭ রান তুলে দিন শেষ করেছিলো শ্রীলংকা। তারপরও ৯ উইকেট হাতে নিয়ে ৩২৬ রানে পিছিয়ে ছিলো লংকানরা।
নিজেদের সংগ্রহটা বাড়িয়ে বাংলাদেশকে টপকে যাবার লক্ষ্য নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করেন শ্রীলংকার দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান মেন্ডিস ও ডি সিলভা। তবে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিলো প্রথম সেশনেই শ্রীলংকার বেশক’টি উইকেট তুলে নেয়া। এমনটা আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে রেখেছিলেন এ টেস্টে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের হিরো মোমিনুল।
দিনের শুরুতে মোমিনুলের কথার বাস্তবতা ঘটাতে গিয়েও ব্যর্থ হলো বাংলাদেশ। দায়টা আবারো ফিল্ডারদের। আগের দিন দু’বার জীবন পাওয়া মেন্ডিস দিনের ১৬তম বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ক্যাচ দু’স্লিপের মাঝ দিয়ে চলে যায় বাউন্ডারি সীমানায়। তাই ভাগ্যকে ধন্যবাদ দিয়ে ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নেন মেন্ডিস।
অন্যপ্রান্তে ব্যাট হাতে অবিচল ছিলেন ডি সিলভাও। মেন্ডিসের চেয়ে আগে সেঞ্চুরি তুলে নিজের ইনিংসটা বড় করছিলেন তিনি। তাই ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মত দেড়শ রানও পেয়ে যান ডি সিলভা। তাই তিন শতাধিক রানও পেরিয়ে যায় শ্রীলংকা। তবে দলীয় ৩০৮ রানে মেন্ডিস-ডি সিলভার সন্ধিতে ফাটল ধরান বাংলাদেশের কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর। ডি সিলভাকে তুলে নিয়ে মধ্যাহৃ বিরতির পর বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন ফিজ। তাই ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে ১৭৩ রানে থেমে যান ডি সিলভা। তার ২২৯ বলের ইনিংসে ২১টি চার ও ১টি ছক্কা ছিলো। দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ায়, মেন্ডিসের সাথে ডি সিলভার জুটির রান ছিলো ৪৮২ বলে ৩০৮। যা বাংলাদেশের বিপক্ষে বড় ফরম্যাটে দ্বিতীয় উইকেটে এবং এই ভেন্যুতে সর্বোচ্চ রানের জুটির রেকর্ড।
ডি সিলভা ডাবল-সেঞ্চুরি মিস করলে, নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবলের পথে হাটতে থাকেন মেন্ডিস। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার উপরও ভর করে। জন্মবার্ষিকীর দিন সেঞ্চুরি উপহার পেয়ে, কষ্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় মেন্ডিসকে। ডাবল-সেঞ্চুরি থেকে ৪ রান দূরে থাকতে বাংলাদেশের বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুলের শিকার হন তিনি। ফিল্ডার হিসেবে মুশফিকুর রহিমকে ক্যাচ দিয়ে ১৯৬ রানে থামেন মেন্ডিস। ২২টি চার ও ২টি ছক্কায় নিজের নান্দনিক ইনিংসটি সাজান তিনি। চার নম্বরে নামা রোশন সিলভার সাথে তৃতীয় উইকেটে ১০৭ রান যোগ করেন মেন্ডিস।
দলীয় ৪১৫ রানে মেন্ডিসের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন রোশন ও অধিনায়ক দিনেশ চান্ডিমাল। এই জুটি ৮৯ রান তুলে দিন শেষে অবিচ্ছিন্নই থেকে যান। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ১৭৩ বলে ৮৭ রানে অপরাজিত থাকেন রোশন। তার ইনিংসে ৫টি চার ও ১টি ছক্কা ছিলো। দুই ম্যাচের ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ১৩ রান দূরে রোশন। অপরপ্রান্তে ৩৭ রানে অপরাজিত চান্ডিমাল। বাংলাদেশের পক্ষে ১টি করে উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজুর-মিরাজ ও তাইজুল। বাসস।