জাতীয় ডেস্কঃ
বাংলাদেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংবিধান অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষণগণনা। ওইদিন থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে অর্থাৎ ২২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে চার কমিশনার ও ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিবকে নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজই স্পিকারের কাছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আয়োজনের আইনি ও সাংবিধানিক দিকগুলো তুলে ধরে চিঠি পাঠাবে ইসি। আর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা নিয়ে আগামীকাল বুধবার বিকাল ৩টায় সংসদ সচিবালয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)। ইসির সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
গতকাল নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ ইত্তেফাককে বলেন, সংবিধান অনুসারে মঙ্গলবার থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হবে। আগামী একমাসের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। সেইভাবে প্রস্তুত হচ্ছে কমিশন।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল দায়িত্ব গ্রহণ করা বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের পাঁচ বছরের মেয়াদ এ বছরের ২৩ এপ্রিল শেষ হবে। আর সংবিধান অনুযায়ী মেয়াদ অবসানে পূর্ববর্তী নব্বই হতে ষাট দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ বিষয়ে সংবিধানের ১২৩ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ অবসানের কারণে উক্ত পদ শূন্য হইলে মেয়াদ-সমাপ্তির তারিখের পূর্ববর্তী নব্বই হইতে ষাট দিনের মধ্যে শূন্য পদ পূরণের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।’ আইনজ্ঞরা বলছেন, মেয়াদ পূরণের আগের ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে বলতে প্রথম ৩০ দিনকে বোঝাবে। নির্বাচন কমিশনও তাই মনে করে।
সংসদ সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিধান থাকায় সংসদের চলতি ১৯তম অধিবেশনের মধ্যেই এ নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ অধিবেশনটি চলার সিদ্ধান্ত রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, গতবারের মতো এবারও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সম্পন্ন হতে যাচ্ছে। সংসদে ক্ষমতাসীন দলের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে অন্যকোন দল থেকে প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ক্ষমতাসীন দল থেকে যাকে মনোনয়ন দেয়া হবে তিনিই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন। এ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হয় প্রকাশ্যে। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গোপনে অন্য দলের প্রার্থীকে ভোট সুযোগ সংসদ সদস্যদের (এ নির্বাচনের ভোটার) নেই।
সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কারো বয়স ৩৫ বছরের নিচে হলে, সংসদ সদস্য নির্বাচনের যোগ্য না হলে এবং সংবিধানের অধীন অভিশংসন দ্বারা রাষ্ট্রপতির পদ থেকে অপসারিত হলে তিনি অযোগ্য বিবেচিত হবেন। এছাড়া রাষ্ট্রপতি নির্বাচনী আইন অনুসারে সংসদ সদস্যরা প্রস্তাবক ও সমর্থক না হলে কেউ প্রার্থী হতে পারবেন না।