ঢাকা ০৪:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারকে অবরোধের আওতায় আনতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

অন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো বর্বরতায় ক্ষিপ্ত হয়ে এবার মিয়ানমারের ওপর সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, গ্লোবাল ম্যাগনিৎস্কি আইনের আওতায় এ অবরোধ আরোপের কথা বিবেচনা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গ্লোবাল ম্যাগনিৎস্কি আইনের অধীনে বিশ্বের যেকোনো স্থানে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন ও দুর্নীতি কারীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ। এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়লে সেসব ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারে না, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পদ তারা ভোগ করলে তা ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
স্থানীয় সময় সোমবার ওয়াশিংটন থেকে জারি করা ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সম্প্রতি যা ঘটেছে, বিশেষ করে রোহিঙ্গাসহ অন্য সম্প্রদায় যে সহিংস ও ভীতিকর দুর্দশার শিকার হয়েছে, তাতে আমরা গভীর উদ্বেগ জানাচ্ছি। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘বেসরকারি গোষ্ঠী ও নজরদারি কমিটিসহ যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই নৃশংসতার জন্য দায়ী হলে তাদের নিশ্চিতভাবে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।’
আগামী মাসের শেষে আসিয়ানের এক সম্মেলনে যোগ দেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেসময় তিনি মিয়ানমারসহ আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোতে সফর করবেন। তার এই সফরের আগেই মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের তরফ থেকে মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে তাদের পরিকল্পনার কথা জানানো হলো। কয়েক মাস ধরে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নির্যাতন-নিপীড়ন চললেও এবারই প্রথম মিয়ানমারকে কড়া ভাষায় ‍হুঁশিয়ারি দিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু বারাক ওবামার আমলে মিয়ানমারের ওপর থেকে তুলে নেওয়া অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আবার বহালের মতো বড় কোনো পদক্ষেপের দিকে যাচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের ধীরগতির পদক্ষেপের সমালোচনা করছে আন্তর্জাতিক সমালোচকরা।
গত আগস্ট মাসে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনী বর্বর অভিযান শুরু করলে হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এখনো রোহিঙ্গারা আসছে। জাতিসংঘের হিসাবমতে, এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এ সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধে মিয়ানমারের প্রতি বিশ্বসম্প্রদায় আহ্বান জানালেও তাতে কান দেয়নি তারা। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ এই নির্যাতনকে ‘জাতিগত নিধন’ বলে চিহ্নিত করেছে জাতিসংঘ। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন চালানোর জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে দায়ী করেছেন। কিন্তু সেনাবাহিনীর দাবি, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক নয়, তারা বাঙালি। কিন্তু ইতিহাস বলছে, প্রায় সাড়ে ৭০০ বছর ধরে রোহিঙ্গা মুসলিমরা রাখাইনে বসবাস করছে। রয়টার্স।
ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের মাগফিরাত কামনায় মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির দোয়া মাহফিল

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারকে অবরোধের আওতায় আনতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় ০২:০৪:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর ২০১৭
অন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো বর্বরতায় ক্ষিপ্ত হয়ে এবার মিয়ানমারের ওপর সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, গ্লোবাল ম্যাগনিৎস্কি আইনের আওতায় এ অবরোধ আরোপের কথা বিবেচনা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গ্লোবাল ম্যাগনিৎস্কি আইনের অধীনে বিশ্বের যেকোনো স্থানে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন ও দুর্নীতি কারীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ। এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়লে সেসব ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারে না, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পদ তারা ভোগ করলে তা ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
স্থানীয় সময় সোমবার ওয়াশিংটন থেকে জারি করা ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সম্প্রতি যা ঘটেছে, বিশেষ করে রোহিঙ্গাসহ অন্য সম্প্রদায় যে সহিংস ও ভীতিকর দুর্দশার শিকার হয়েছে, তাতে আমরা গভীর উদ্বেগ জানাচ্ছি। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘বেসরকারি গোষ্ঠী ও নজরদারি কমিটিসহ যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই নৃশংসতার জন্য দায়ী হলে তাদের নিশ্চিতভাবে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।’
আগামী মাসের শেষে আসিয়ানের এক সম্মেলনে যোগ দেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেসময় তিনি মিয়ানমারসহ আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোতে সফর করবেন। তার এই সফরের আগেই মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের তরফ থেকে মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে তাদের পরিকল্পনার কথা জানানো হলো। কয়েক মাস ধরে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নির্যাতন-নিপীড়ন চললেও এবারই প্রথম মিয়ানমারকে কড়া ভাষায় ‍হুঁশিয়ারি দিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু বারাক ওবামার আমলে মিয়ানমারের ওপর থেকে তুলে নেওয়া অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আবার বহালের মতো বড় কোনো পদক্ষেপের দিকে যাচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের ধীরগতির পদক্ষেপের সমালোচনা করছে আন্তর্জাতিক সমালোচকরা।
গত আগস্ট মাসে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনী বর্বর অভিযান শুরু করলে হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এখনো রোহিঙ্গারা আসছে। জাতিসংঘের হিসাবমতে, এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এ সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধে মিয়ানমারের প্রতি বিশ্বসম্প্রদায় আহ্বান জানালেও তাতে কান দেয়নি তারা। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ এই নির্যাতনকে ‘জাতিগত নিধন’ বলে চিহ্নিত করেছে জাতিসংঘ। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন চালানোর জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে দায়ী করেছেন। কিন্তু সেনাবাহিনীর দাবি, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক নয়, তারা বাঙালি। কিন্তু ইতিহাস বলছে, প্রায় সাড়ে ৭০০ বছর ধরে রোহিঙ্গা মুসলিমরা রাখাইনে বসবাস করছে। রয়টার্স।