জাতীয় ডেস্কঃ
রাশিয়ার সেন্টপিটার্সবুর্গে চলমান ইন্টারপার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) ১৩৭তম সম্মেলনে ‘ইমার্জেন্সি আইটেম’ হিসেবে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে সাধারণ আলোচনা হয়েছে। ‘মিয়ানমারে মানবিক সংকট এবং রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন নিরসনের প্রচেষ্টা বৃদ্ধি’ শিরোনামে রবিবার এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিনিধি দলের প্রধান ও জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে সাধারণ আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব উত্থাপন করলে ভোটাভুটিতে সর্বসম্মতিক্রমে সেটি গৃহীত হয়। এসময় বিশ্বনেতারা করতালির মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রস্তাবকে সমর্থন জানান বলে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফজলে রাব্বী মিয়া মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আগত রোহিঙ্গাদের বিষয়টি জোরলোভাবে তুলে ধরে এ সমস্যা মোকাবেলায় মিায়ানমার যেন কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয় সেজন্য আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্ব জনমত সৃষ্টি করতে আইপিইউভুক্ত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। এসময় ফজলে রাব্বী তার বক্তব্যে বলেন, ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৬ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশ করতে বাধ্য হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় মনোবল ও মহানুভবতার কারণে আমরা তাদের সাময়িক আশ্রয় দেয়াসহ খাবারের ব্যবস্থা করছি। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা ও সহযোগিতা করেছে। এই মানবিক বিপর্যয়ের স্থায়ী সমাধান মিয়ানমারকেই করতে হবে।
বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের প্রধান আরও বলেন, রাখাইন রাজ্যে ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, নারী ও শিশু হত্যাসহ যে অমানুষিক নির্যাতন করা হচ্ছে তা বিশ্ব মানবতাকে কেবল আহত করেনি, যা ঘটেছে তা মানবাধিকারের চরম লংঘন ও পরিকল্পিত জাতিগত নিধন। মিয়ানমারে মুসলিম নিধনকে একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা সকল রোহিঙ্গাকে মিায়ানমারে পূর্ণ নাগরিকের মর্যাদা দিয়ে নিঃশর্তভাবে নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে হবে। এসময় তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উত্থাপিত পাঁচ দফা প্রস্তাবনা এবং কফি আনান কমিশনের প্রতিবেদনের পূর্ণ বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ডেপুটি স্পিকার বঙ্গবন্ধুর উদ্বৃতি উল্লেখ করে বলেন, চারদশক আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘বাঙালি জাতি এমন একটি বৈশ্বিক কাঠামো উপহার দিতে চায় যেখানে সকল মানুষ শান্তিতে সহাবস্থান করবে। থাকবেনা কোন বৈষম্য, শোষণ বঞ্চনা, থাকবে না কোন অনাহার, দারিদ্র। থাকবে শুধু সামাজিক সাম্যাবস্থা।’ আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেলক্ষ্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন, তিনি তার মানবিক উদারতার কারণে আজ বিশ্বব্যাপী ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছেন।