ঢাকা ০৬:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লকডাউন লম্বা হলো ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত

জাতীয় ডেস্কঃ

করোনার প্রকোপ কমাতে চলমান লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। সে হিসেবে আগামী ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত চলাচলের বিধিনিষেধ বহাল থাকবে। করোনার বিষয়ে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। লকডাউন বাড়ানোর প্রস্তাবনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন পাওয়ার পর প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় পরামর্শক কমিটি লকডাউনের মেয়াদ আরও সাতদিন বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। বৈজ্ঞানিকভাবেই ১৪ বা ১৫ দিন লকডাউন না হলে সংক্রমণের চেইনটা পুরোপুরি ভাঙা সম্ভব হয় না। সেই পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামী ২২ থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত আগের শর্ত মেনে লকডাউন চলবে।’

এর আগে সোমবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সচিবদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ফরহাদ হোসেন জানান, লকডাউনের সময় বাড়িয়ে সার সংক্ষেপ তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি সই করার পরে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের লকডাউন বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন।

সামনের ঈদকে সামনে রেখে দোকানপাট খুলে দেওয়ার ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের দাবির বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করাটা আমাদের উদ্দেশ্য, ব্যবসায়ীরা যাতে ঈদের ব্যবসাটা করতে পারে। সেটা মাথায় রেখেই এখন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে পরিস্থিতি কী হয় সেটা বিবেচনা করেই পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত হবে। আমরা মনে করছি আরও সাতদিন লকডাউন দিলে সংক্রমণটা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।’

এর আগে রবিবার রাতে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ৩১তম সভা থেকে লকডাউন বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়।

কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, পরে সপ্তাহ শেষ হওয়ার আগে সংক্রমণের হার বিবেচনা করে আবার সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। ধীরে ধীরে লকডাউন শেষ করার পূর্ব পরিকল্পনা তৈরি রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়।

করোনা পরিস্থিতি অবনতির কারণে গত ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত সরকার ঘোষিত আটদিনের লকডাউন চলছে সারা দেশে। দুদিন পর এই চলমান লকডাউনের সময় শেষ হওয়ার কথা।

জাতীয় কমিটি জানায়, তারা এর আগে সরকারকে কমপক্ষে দুই সপ্তাহের জন্য পূর্ণ লকডাউন ঘোষণার সুপারিশ করেছিল। সরকার এর মধ্যে এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করেছে। এতে তারা সন্তোষ প্রকাশ করে। যদিও বৈজ্ঞানিকভাবে দুই সপ্তাহের কম লকডাউনে কার্যকর ফলাফল আশা করা যায় না বলে মন্তব্য করেন তারা।

বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের অর্থনীতি সচল রাখার স্বার্থে শিল্প কলকারখানা খোলা রাখার বিষয়টিও কমিটি উপলব্ধি করে। তবে, বেসরকারি দপ্তর, ব্যাংক খোলা রাখা, ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল বাড়তে থাকা, ইফতার বাজারে অনাকাঙ্খিত ও অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত ভিড় লকডাউনের সাফল্যকে অনিশ্চিত করে। পাশাপাশি সভা সামাজিক সমতার বিষয়েও নীতি নির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। স্বাস্থ্য, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য জরুরি সেবা ছাড়া সব কিছু বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে, খোলা রাখা জরুরি সেবার তালিকা প্রকাশ করার জন্য কমিটি অনুরোধ করেছে। তা না হলে বিরূপ পরিস্থিতির আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।

উদাহরণ হিসেবে চলমান লকডাউন এ চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের ডিউটির জন্য চলাচলে বাধা ও অনাকাঙ্খিত ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়। কাঁচাবাজার খোলা জায়গায় বসানোর প্রস্তাব আবারও দেওয়া হয়।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দীর্ঘ ১৩ বছর পর দেশে ফিরছেন কায়কোবাদ: স্বাগত জানাতে মুরাদনগরে ব্যাপক প্রস্ততি

লকডাউন লম্বা হলো ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত

আপডেট সময় ০২:২৩:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১

জাতীয় ডেস্কঃ

করোনার প্রকোপ কমাতে চলমান লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। সে হিসেবে আগামী ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত চলাচলের বিধিনিষেধ বহাল থাকবে। করোনার বিষয়ে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। লকডাউন বাড়ানোর প্রস্তাবনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন পাওয়ার পর প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় পরামর্শক কমিটি লকডাউনের মেয়াদ আরও সাতদিন বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। বৈজ্ঞানিকভাবেই ১৪ বা ১৫ দিন লকডাউন না হলে সংক্রমণের চেইনটা পুরোপুরি ভাঙা সম্ভব হয় না। সেই পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামী ২২ থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত আগের শর্ত মেনে লকডাউন চলবে।’

এর আগে সোমবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সচিবদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ফরহাদ হোসেন জানান, লকডাউনের সময় বাড়িয়ে সার সংক্ষেপ তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি সই করার পরে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের লকডাউন বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন।

সামনের ঈদকে সামনে রেখে দোকানপাট খুলে দেওয়ার ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের দাবির বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করাটা আমাদের উদ্দেশ্য, ব্যবসায়ীরা যাতে ঈদের ব্যবসাটা করতে পারে। সেটা মাথায় রেখেই এখন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে পরিস্থিতি কী হয় সেটা বিবেচনা করেই পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত হবে। আমরা মনে করছি আরও সাতদিন লকডাউন দিলে সংক্রমণটা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।’

এর আগে রবিবার রাতে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ৩১তম সভা থেকে লকডাউন বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়।

কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, পরে সপ্তাহ শেষ হওয়ার আগে সংক্রমণের হার বিবেচনা করে আবার সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। ধীরে ধীরে লকডাউন শেষ করার পূর্ব পরিকল্পনা তৈরি রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়।

করোনা পরিস্থিতি অবনতির কারণে গত ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত সরকার ঘোষিত আটদিনের লকডাউন চলছে সারা দেশে। দুদিন পর এই চলমান লকডাউনের সময় শেষ হওয়ার কথা।

জাতীয় কমিটি জানায়, তারা এর আগে সরকারকে কমপক্ষে দুই সপ্তাহের জন্য পূর্ণ লকডাউন ঘোষণার সুপারিশ করেছিল। সরকার এর মধ্যে এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করেছে। এতে তারা সন্তোষ প্রকাশ করে। যদিও বৈজ্ঞানিকভাবে দুই সপ্তাহের কম লকডাউনে কার্যকর ফলাফল আশা করা যায় না বলে মন্তব্য করেন তারা।

বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের অর্থনীতি সচল রাখার স্বার্থে শিল্প কলকারখানা খোলা রাখার বিষয়টিও কমিটি উপলব্ধি করে। তবে, বেসরকারি দপ্তর, ব্যাংক খোলা রাখা, ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল বাড়তে থাকা, ইফতার বাজারে অনাকাঙ্খিত ও অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত ভিড় লকডাউনের সাফল্যকে অনিশ্চিত করে। পাশাপাশি সভা সামাজিক সমতার বিষয়েও নীতি নির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। স্বাস্থ্য, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য জরুরি সেবা ছাড়া সব কিছু বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে, খোলা রাখা জরুরি সেবার তালিকা প্রকাশ করার জন্য কমিটি অনুরোধ করেছে। তা না হলে বিরূপ পরিস্থিতির আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।

উদাহরণ হিসেবে চলমান লকডাউন এ চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের ডিউটির জন্য চলাচলে বাধা ও অনাকাঙ্খিত ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়। কাঁচাবাজার খোলা জায়গায় বসানোর প্রস্তাব আবারও দেওয়া হয়।