কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ
নওগাঁ জেলার সদর থানার সাহাপুর গ্রামের দীপু হোসেনকে লিবিয়ায় জিম্মি করে বাংলাদেশে তার স্বজনদের নিকট থেকে মোবাইল বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় চক্রের দুই সদস্যকে বুধবার ভোর রাতে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কুমিল্লা ডিবি পুলিশের একটি টিম জেলার চান্দিনা উপজেলা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করে।
বুধবার (১৮ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে তাদেরকে নওগাঁ জেলা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- জেলার চান্দিনা উপজেলার আটচাইল গ্রামের হিরণ মিয়ার ছেলে নাভিদ হাসান (২১) ও একই এলাকার আবু তাহেরের ছেলে বিকাশ এজেন্ট কামাল হোসেন (৩৮)। রাতে জেলা পুলিশের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
মামলার অভিযোগ ও ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁ জেলার সদর থানার সাহাপুর গ্রামের মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে দীপু হোসেন (২৭) গত ৮ বছর ধরে লিবিয়ায় রয়েছেন। গত ১৪ আগস্ট রাতে দীপু দেশে তার পরিবারকে ফোনে জানান, তিনি লিবিয়া প্রবাসী বাংলাদেশী জনৈক ইয়াসিন মিয়া ও কামাল মিয়ার মাধ্যমে রাতে সাগর পথে লিবিয়া থেকে ইতালি যাচ্ছেন। একই দিন দ্বিতীয় দফায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে দীপু হোসেন কান্নাকাটি করে তার পরিবারকে জানান, ওই দুই ব্যক্তিকে ৩০ হাজার মার্কিন ডলার দিতে হবে, নয়তো তাকে মেরে সাগরে ফেলে দেবে। পরে ইয়াসিন ও কামাল মিয়া দীপু হোসেনের পরিবারকে জানায়, দুই ঘন্টার মধ্যে ওই ডলারের সমপরিমাণ বাংলাদেশী মুদ্রায় ২৫ লাখ টাকা দিতে হবে এবং তারা টাকা পাঠানোর জন্য কয়েকটি বিকাশ নম্বর ও নগদ একাউন্ট নম্বর দেয়। এতে নিরুপায় হয়ে দীপু হোসেনের পরিবার গত ১৬ আগস্ট বিকালে অপহরণকারীদের প্রদত্ত দুইটি বিকাশ নম্বরে ৫০ হাজার টাকা পাঠায়। এ ঘটনায় নওগাঁ সদর থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করে দীপুর পরিবার।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া কুমিল্লা ডিবির এসআই পরিমল চন্দ্র দাস বুধবার রাতে জানান, নওগাঁ জেলা পুলিশের অনুরোধে কুমিল্লা পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় টাকা পাঠানোর একাধিক বিকাশ নম্বরের অবস্থান সনাক্ত করে মামলার এজাহারনামীয় আসামি নাভিদ হাসান ও বিকাশ এজেন্ট অর্থ প্রবাহে সহায়তাকারী কামাল হোসেনকে গ্রেফতারসহ বিকাশে প্রেরিত মুক্তিপণের ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের রাত ৮টায় নওগাঁ সদর থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।