লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
শরীরে অক্সিজেন পরিমাণ বাড়ানোর জন্য, অ্যালকালাইন জাতীয় খাবার ৮০% খাদ্য তালিকায় রাখলে তা রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, এই ধরনের খাবার শরীরকে সক্রিয় রাখার পক্ষেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া এই খাবার গুলো দেহের পিএইচ মাত্রা স্বাভাবিক রাখে এবং ভিটামিন ও মিনারেলসের শোষণে সহায়তা করে। অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণ করতে অ্যালকালাইন জাতীয় খাবার বেশি করে খেতে হবে। অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণে যা খাবেন:
পাতিলেবু
অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে খাদ্য তালিকায় যে-সমস্ত খাবার যোগ করতে পারেন, তার মধ্যে প্রথমেই থাকবে পাতিলেবু। পাতিলেবু অ্যাসিডিক হলেও তা শরীরের মধ্যে গিয়ে অ্যালকালাইন হয়ে যায়। এছাড়া এর ইলেকট্রোলাইটিক ধর্ম, ভিটামিন সি যা দ্রুত সর্দিকাশি, ফ্লু, হাইপারঅ্যাসিডিটি, বুক জ্বালা ইত্যাদির থেকে মুক্তি দেয়।
ব্রকোলি
সুপার ফুড ব্রকোলি বিভিন্ন রকম ফ্লু থেকে আপনাকে নিরাপদে রাখতে পারে। ব্রকোলি যেমন বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ঝরিয়ে দেহকে সুস্থ রাখে, তেমনি শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণেও এটি বেশ কার্যকরী।
বাদাম ও কিশমিশ
আমন্ড, কাজু ইত্যাদি বাদাম শরীরে অ্যালকালাইনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া কিশমিশে থাকা ভিটামিন এ, বি, সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রক্ত চলাচলকে নিয়ন্ত্রণ করে রক্তচাপের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে। এর ফলে হৃদরোগের সম্ভাবনা কমে। তাই যে কোন সময় খিদে পেলে ড্রাই ফ্রুটস স্ন্যাক্স হিসেবে খেতে পারেন, এতে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়বে।
অঙ্কুরিত ডাল বা কাঁচা ছোলা
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে শরীরে পুষ্টির যোগান দিতে কাঁচা ছোলা, অঙ্কুরিত ডাল জাতীয় খাদ্য খুবই উপকারী। এতে থাকা ফাইবার এনার্জি যোগায়। এছাড়া দেহের ক্ষতিকারক টক্সিন উপাদানগুলো বের করে দিয়ে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি মেটায়।
রসুন
সকালে উঠে খালি পেটে এক কোয়া কাঁচা রসুন খেলে রক্তচাপ কমা, শরীরের ব্যথা সহ অনেক সমস্যায় সমাধান হয়। আর এই করোনা পরিস্থিতিতে নিরাপদে থাকতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের যোগান পূরণে নিয়মিত রসুন খান।
মিষ্টি আলু
নিয়মিত মিষ্টি আলু খেলে শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমে, বাড়তি ওজনও কমে যায়। মিষ্টি আলু নানা প্রাকৃতিক খনিজে ভরপুর। এছাড়া এতে প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেনও রয়েছে, যা আমাদের শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে।
গ্রিন টি
গ্রিন টি-তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। ফলে গ্রিন টি শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে। এছাড়া গ্রিন টি মেটাবোলিজমের হার ঠিক রাখে বলে শরীরে অক্সিজেনের পর্যাপ্ত যোগান থাকে। মেদ কমিয়ে ফিট থাকতে চাইলেও গ্রিন টিকে ভরসা করতে পারেন।
তরমুজ
উচ্চ অ্যালকালাইন মাত্রা যুক্ত এই ফলের পিএইচ মান ৯। এতে অধিক পরিমাণে পানি এবং ফাইবার থাকার ফলে এটি ডাইইউরেটিক হিসেবে কাজ করে। তরমুজে প্রচুর পরিমাণে লাইকোপেন, বিটা-ক্যারোটিন ও ভিটামিন সি থাকে যা শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও এনার্জির যোগান দেয় এবং শরীরকে সক্রিয় রাখে।
টক দই
খাবার শেষে এক বাটি টক দই না হলে অনেকের চলে না। টক দই শরীরের পক্ষে খুব উপকারী। এটি পেটের সমস্যায় ঠিক করে। এছাড়া এক বাটি টক দই খাদ্য তালিকায় রাখলে তা শরীরে অক্সিজেনের পর্যাপ্ত যোগান দিতে সহায়তা করবে।
ক্যাপসিকাম
ক্যাপসিকামের পিএইচ মান ৮.৫। এটি পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখে। ক্যাপসিকামে থাকে উচ্চমাত্রায় ভিটামিন এ, যা দেহে রোগ, স্ট্রেসের হাত থেকে দেহকে মুক্ত রাখে। ফলে শরীর ঝরঝরে থাকে। অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে খাদ্য তালিকায় ক্যাপসিকাম নিয়ম করে রাখতে পারেন।
পালংশাক
পালংশাক একটি পুষ্টিকর শাক। এতে প্রচুর আয়রন থাকে বলে রক্তস্বল্পতার রোগীদের ক্ষেত্রে এটি প্রাকৃতিক ওষুধ বলে বিবেচ্য হয়। এছাড়া অনেকেই জানেন না, এতে থাকা অক্সিজেন রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতেও সাহায্য করে।
এছাড়াও অ্যাভোকাডো, পাকা কলা, বেরিজাতীয় ফল, খেজুর, গাজর, আপেল, খোবানি, আঙুর, আনারস, আম, পেঁপে, কিউই ইত্যাদিও অ্যালকালাইন জাতীয় খাবার এবং প্রত্যেকটিই পুষ্টিকর। ফলে এই ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতিতে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে খাদ্যতালিকায় এগুলো যোগ করুন এবং প্রচুর পানি পান করুন। তাহলে অনেকাংশে সুস্থ থাকবেন। উল্লিখিত অক্সিজেন সমৃদ্ধ খাবারগুলো আপনার রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করবে।