ঢাকা ০২:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিক্ষার্থীদের প্রেম ঠেকাতে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাণ্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠছে- এমন খবর জানতে পারে পশ্চিমবঙ্গের মালদহের একটি স্কুলের কর্তৃপক্ষ। এরপরই শিক্ষার্থীদের প্রেম ঠেকাতে সপ্তাহে তিন দিন ছাত্রদের এবং বাকি তিনদিন ছাত্রীদের ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনা ভারতজুড়ে ব্যাপক আলোচনায় এসেছে।

 

মালদহের হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচণ্ডী গিরিজাসুন্দরী বিদ্যামন্দির কর্তৃপক্ষ জানান, ছাত্রছাত্রীদের কিছু আচরণের জেরেই এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু স্কুলের ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের একাংশের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, আচরণ যেমনই হোক না কেন, এমন সিদ্ধান্ত কি স্কুল কর্তৃপক্ষ নিতে পারে? জেলা স্কুল পরিদর্শক জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি খোঁজ নেবেন। খবর আনন্দবাজারের।

বুলবুলচণ্ডী গিরিজাসুন্দরী বিদ্যামন্দিরে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। এর মধ্যে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত এটি শুধু ছাত্রদের স্কুল। তবে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ছাত্রীরাও পড়ে।

স্কুল সূত্রে জানা গেছে, একাদশ শ্রেণিতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ২০১। তার মধ্যে ছাত্রী ৪০। দ্বাদশ শ্রেণিতে ২২৬ জন পড়ুয়ার মধ্যে ছাত্রী ৩৫। স্কুলের শিক্ষকদের একাংশের দাবি, এই দুই ক্লাসে কাগজের টুকরো দেওয়া-নেওয়া চলছে বিস্তর।

অনেকের দাবি, মেয়েদের কমন রুমের সামনে ছাত্রদের লাইন বা স্কুলের মধ্যে হাতে হাত ধরে হেঁটে যাওয়াও নিয়মিত চোখে পড়ে। ফলে পড়াশোনা শিকেয় উঠেছে। স্কুলের এক শিক্ষিকা বলেন, ‘নিষেধ করলে ক্লাসের মধ্যে বিড়াল-কুকুরের ডাক ডাকে। এর প্রভাব নিচু ক্লাসের ছাত্রদের উপরেও পড়ছে’। ছাত্রদের ক্লাস সাসপেন্ড থেকে শুরু করে অভিভাবকদের ডেকেও নালিশ জানানো হয়েছে, কিছুতেই কিছু হয়নি।

অগত্যা ছাত্রছাত্রীদের আলাদা দিনে ক্লাসের ব্যবস্থা করেছে স্কুল। স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ পাণ্ডে বলেন, ‘পরীক্ষামূলকভাবে ছাত্রছাত্রীদের সপ্তাহে আলাদা দিনে ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কয়েক জন ছাত্রছাত্রীর আচরণের জন্যই এই ব্যবস্থা। তাছাড়া শুনেছি, মালদহের বেশ কিছু স্কুলেই এমনই ভাবে পাঠদান হচ্ছে।’

ছাত্রীদের বড় অংশ জানিয়েছে, ‘কিছু ছাত্র স্কুলের মধ্যে উত্যক্ত করত। স্কুল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে আমরা খুশি। পাশাপাশি তাদের প্রশ্ন, সপ্তাহে ৩ দিন ক্লাস হলে পাঠ্যক্রম শেষ হবে তো?’ রবীন্দ্রনাথবাবুর আশ্বাস, ‘বাড়তি ক্লাস নিয়ে পাঠ্যক্রম শেষ করা হবে’।

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্বাগত সেন বলেন, ‘ছেলেমেয়েরা তো একসঙ্গেই বেড়ে উঠবে। তাই ক্লাস বা দিন আলাদা করে সমস্যা সমাধানের পথ সঠিক নয় বলেই মনে হয়। কর্তৃপক্ষের উচিত পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলা’। মালদহ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) তাপস বিশ্বাস বলেন, ‘স্কুলে যাই ঘটুক, কো-এড ব্যবস্থায় ছাত্র ও ছাত্রীদের আলাদা করা যায় না। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে কৃষক ও উদ্যোক্তাদের দিনব্যাপী কর্মশালা

শিক্ষার্থীদের প্রেম ঠেকাতে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাণ্ড

আপডেট সময় ০৬:৩৪:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জুলাই ২০১৯
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠছে- এমন খবর জানতে পারে পশ্চিমবঙ্গের মালদহের একটি স্কুলের কর্তৃপক্ষ। এরপরই শিক্ষার্থীদের প্রেম ঠেকাতে সপ্তাহে তিন দিন ছাত্রদের এবং বাকি তিনদিন ছাত্রীদের ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনা ভারতজুড়ে ব্যাপক আলোচনায় এসেছে।

 

মালদহের হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচণ্ডী গিরিজাসুন্দরী বিদ্যামন্দির কর্তৃপক্ষ জানান, ছাত্রছাত্রীদের কিছু আচরণের জেরেই এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু স্কুলের ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের একাংশের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, আচরণ যেমনই হোক না কেন, এমন সিদ্ধান্ত কি স্কুল কর্তৃপক্ষ নিতে পারে? জেলা স্কুল পরিদর্শক জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি খোঁজ নেবেন। খবর আনন্দবাজারের।

বুলবুলচণ্ডী গিরিজাসুন্দরী বিদ্যামন্দিরে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। এর মধ্যে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত এটি শুধু ছাত্রদের স্কুল। তবে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ছাত্রীরাও পড়ে।

স্কুল সূত্রে জানা গেছে, একাদশ শ্রেণিতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ২০১। তার মধ্যে ছাত্রী ৪০। দ্বাদশ শ্রেণিতে ২২৬ জন পড়ুয়ার মধ্যে ছাত্রী ৩৫। স্কুলের শিক্ষকদের একাংশের দাবি, এই দুই ক্লাসে কাগজের টুকরো দেওয়া-নেওয়া চলছে বিস্তর।

অনেকের দাবি, মেয়েদের কমন রুমের সামনে ছাত্রদের লাইন বা স্কুলের মধ্যে হাতে হাত ধরে হেঁটে যাওয়াও নিয়মিত চোখে পড়ে। ফলে পড়াশোনা শিকেয় উঠেছে। স্কুলের এক শিক্ষিকা বলেন, ‘নিষেধ করলে ক্লাসের মধ্যে বিড়াল-কুকুরের ডাক ডাকে। এর প্রভাব নিচু ক্লাসের ছাত্রদের উপরেও পড়ছে’। ছাত্রদের ক্লাস সাসপেন্ড থেকে শুরু করে অভিভাবকদের ডেকেও নালিশ জানানো হয়েছে, কিছুতেই কিছু হয়নি।

অগত্যা ছাত্রছাত্রীদের আলাদা দিনে ক্লাসের ব্যবস্থা করেছে স্কুল। স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ পাণ্ডে বলেন, ‘পরীক্ষামূলকভাবে ছাত্রছাত্রীদের সপ্তাহে আলাদা দিনে ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কয়েক জন ছাত্রছাত্রীর আচরণের জন্যই এই ব্যবস্থা। তাছাড়া শুনেছি, মালদহের বেশ কিছু স্কুলেই এমনই ভাবে পাঠদান হচ্ছে।’

ছাত্রীদের বড় অংশ জানিয়েছে, ‘কিছু ছাত্র স্কুলের মধ্যে উত্যক্ত করত। স্কুল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে আমরা খুশি। পাশাপাশি তাদের প্রশ্ন, সপ্তাহে ৩ দিন ক্লাস হলে পাঠ্যক্রম শেষ হবে তো?’ রবীন্দ্রনাথবাবুর আশ্বাস, ‘বাড়তি ক্লাস নিয়ে পাঠ্যক্রম শেষ করা হবে’।

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্বাগত সেন বলেন, ‘ছেলেমেয়েরা তো একসঙ্গেই বেড়ে উঠবে। তাই ক্লাস বা দিন আলাদা করে সমস্যা সমাধানের পথ সঠিক নয় বলেই মনে হয়। কর্তৃপক্ষের উচিত পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলা’। মালদহ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) তাপস বিশ্বাস বলেন, ‘স্কুলে যাই ঘটুক, কো-এড ব্যবস্থায় ছাত্র ও ছাত্রীদের আলাদা করা যায় না। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।