জাতীয় ডেস্কঃ
আগামী জাতীয় নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়লে আহমদ। যে নির্বাচন বর্তমান সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়ার মত গণতান্ত্রিক দেশে ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন করার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেছেন, ‘আমরা সবাই একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই, যেখানে সব রাজনৈতিক দল থাকবে।’
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায়-মার্শা বার্নিকাটের সাম্প্রতিক এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে তোফায়েল আহমদের ওই বক্তব্য আসে।
হোটেল সোনারগাঁওয়ের ওই অনুষ্ঠানে ২৫তম ইউএস ট্রেড শোর উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অ্যাডভোকেসি সেন্টারের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক ম্যালকম ব্রুক উপস্থিত ছিলেন ওই অনুষ্ঠানে।
অনুষ্ঠানের পর তোফায়েলের বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বার্নিকাট সাংবাদিকদের বলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে শর্তগুলো কেবল ভোটের দিন নয়, সব সময়ই নিশ্চিত করতে হয়।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি নির্দলীয় সরকারের অধীনে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে আসছে।
আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল বলেন, ‘আমি জানি না, মন্তব্য করা আমার ঠিক হবে কি না। আমি আশা করব, আপনি (বার্নিকাট) এমন একটি ভূমিকা নেবেন, যাতে সব দল সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনে অনুষ্ঠেয় আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।’
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতায় রেখেই যে নির্বাচন হয়, সে কথাও তিনি মনে করিয়ে দেন।
তোফায়েল বলেন, নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশেও আগামী নির্বাচনের সময় বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকবে এবং কেবল দৈনন্দিন রুটিন কাজগুলো করবে। নির্বাচনের আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন।
সম্প্রতি বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করা ব্রিটিশ হাই কমিশনারকেও একই আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তাদের (যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য) অনুরোধ করব, তারা যেন সব দলকে আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে বলেন। এই নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তোফায়েল বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। সেখানেও গত নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এসেছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর তোফায়েলের বক্তব্যের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা। তবে তিনি সরাসরি কোনো উত্তর দেননি।
বার্নিকাট বলেন, ‘মন্ত্রী যা বলেছেন, তারপর আমি শুধু যোগ করতে চাই যে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের যে শর্তগুলো, সেগুলো আসালে সব সময় কার্যকর থাকতে হয়, কেবল ভোটের দিন নয়।’
তিনি বলেন, সবাই যাতে অংশ নিতে পারে, সবাই যাতে সভা, সমাবেশ, বৈঠক করতে পারে, সবাই যেন নির্বিঘ্নে তাদের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারে- সেটাও নিশ্চিত করতে হয়।
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সহযোগিতায় আমেরিকান চেম্বার অফ কমার্স ইন বাংলাদেশ-অ্যামচেম ১৯৯২ সাল থেকে বাংলাদেশে ইউএস ট্রেড শোর আয়োজন করে আসছে। সে সময় দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল মাত্র এক বিলিয়ন ডলার যা গত আড়াই দশকে বেড়ে হয়েছে সাত বিলিয়ন ডলার।