বিনোদন ডেস্কঃ
শিবাজি রাও গায়কোয়াড়। সকলের কাছে তিনি রজনীকান্ত। মূলত, তামিল ছবির অভিনেতা হলেও, মন জয় করেছেন সারা দেশের মানুষের। দক্ষিণী ছবির পাশাপাশি দাপটের সঙ্গে কাজ করেন বলিউডেও। ঝুলিতে রয়েছে পদ্মভূষণ ও পদ্মবিভূষণের মতো সম্মান। ৬৭ বছর বয়সী এই তারকা একাধারে অভিনেতা, প্রযোজক, স্ক্রিনপ্লে রাইটার ও সমাজসেবক।
প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজের দক্ষতা প্রমাণের পর, এবার পা রেখেছেন রাজনীতির আঙিনায়। ২০১৭-র শেষদিনে রাজনীতিতে নিজের ইনিংস শুরুর ঘোষণার পর নতুন বছরের শুরুতে ওয়েবসাইট ও অ্যাপ লঞ্চ করেছেন। নিজের দল গড়ে কীভাবে নতুন তামিলনাড়ু গড়ে তুলবেন, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন। এসবের মধ্যেই সিনেমা জগৎ থেকে তাঁর অবসর নেওয়ার জল্পনা শুরু হয়ে গেছে। তবে কি সত্যিই ৪৩ বছরের ফিল্ম ক্যারিয়ারকে বিদায় জানাতে চলেছেন রজনী?
অনেকেই মনে করছেন, এই জল্পনা সত্যি হতে চলেছে। অভিনয় ছাড়ার কারণগুলির মধ্যে অবশ্যই তাঁর রাজনীতিতে আগমনকে প্রধান কারণ হিসাবে ধরা যেতে পারে। একদিকে রাজনীতি আর অন্যদিকে অভিনয় জগৎ। দু’টির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা খুব একটা সহজ কাজ নয়। আর রজনীকান্ত নিজের স্বপ্নগুলি পূরণের জন্য বেশ কোমর বেঁধে নামছেন। তাঁর লক্ষ্য নতুন তামিলনাড়ু গড়া।
এই লক্ষ্যপূরণে সমর্থকদের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। রাজ্যের কোথায় কী সমস্যা চাপা পড়ে আছে, তা খুঁজে বের করার জন্য একটি দল তৈরির পরিল্পনাও করেছেন। সমস্যা সমাধানেরও চেষ্টা করা হবে বলে রজনী জানান।
১৯৯৬ সাল থেকে বহুবার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার সুযোগ এসেছে। প্রতিবারই তা এড়িয়ে গেছেন রজনীকান্ত। কিন্তু, রাজ্যে দক্ষ প্রশাসকের অভাব দেখা দেওয়ার পর রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। জয়ললিতার মৃত্যুর পর AIADMK- দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে এক বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, যা রজনীকান্তকে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে।
কয়েক দশক ধরে তামিলনাড়ু রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু ছিল পোয়েজ গার্ডেন। সেখান থেকে দলীয় ও প্রশাসনিক কাজকর্ম পরিচালনা করতেন জয়ললিতা। ২০১৭-র ৩১ ডিসেম্বরের পর আবারও পোয়েজ গার্ডেনে ফিরল তামিল রাজনীতির ব্যাটন।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচন তামিলনাড়ুতে। রজনীকান্ত জানিয়েছেন, তাঁর দল প্রতিটি কেন্দ্রেই লড়বে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করা নিয়ে স্পষ্ট কিছু না বললেও আশা জিইয়ে রেখেছেন রজনী। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সময়মতো সিদ্ধান্ত নেব।
তামিলনাড়ুর বর্তমান পরিস্থিতি রজনীর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা দেবে। তবে, নিজের জায়গা তৈরি করতে হলে তাঁকে ২০১৮ থেকেই পুরোদমে রাজনীতিতেই সময় দিতে হবে। সেক্ষেত্রে, ধরে নেওয়াই যায় অভিনয় জগৎকে বিদায় জানাবেন এই সুপারস্টার।
কয়েকদিন আগে নিজের ভক্তদের উদ্দেশে তিনি বলেন, অনেকদিন পর এবছর আমার দু’টি ছবি মুক্তি পেতে চলেছে। শুধুমাত্র ভগবানই জানেন, তারপর আমার জন্য কী অপেক্ষা করে আছে। এবছরই ভারতীয় সিনেমায় রজনীযুগের অবসান হয় কি না, তা জানতে পারা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।