অন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর বিমান হামলায় ১৯ শিশুসহ ৪২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছে সিরিয়ার মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা। রবিবার সিরিয়ার রাকা শহরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে রয়েছে ১৯ শিশুও।
রাকাকে আইএস জঙ্গিদের দখল থেকে মুক্ত করতে গত দু’মাস ধরে টানা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে সিরিয়া সরকার। তাদের সঙ্গে লড়াইয়ে নেমেছে আমেরিকার নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীও। সব পক্ষই জঙ্গিদমনের এই লড়াইয়ে সাধারণ মানুষের যাতে ক্ষতি না হয়, সে দিকে নজর রাখা হবে বলে জানালেও বাস্তবে যে তা হচ্ছে না বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।
সিরিয়ার ওই পর্যবেক্ষণ সংস্থা সূত্রের খবর, গত এক সপ্তাহ ধরে রাকার বেদু এলাকায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে যৌথ বাহিনী। তাতে প্রাণ গিয়েছে ১৬৭ জনের। তার মধ্যে সোমবারের হামলাতেই নিহত হয়েছে ৪২ জন। যৌথ বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওই এলাকায় দু’টি জঙ্গিঘাঁটিকে নিশানা করা হয়েছিল। অভিযানে দু’টি ড্রোন, দু’টি ভারি মেশিন গানও প্রচুর বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছিল।
মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব জিম ম্যাটিস সোমবারই বাগদাদে ‘আইএসের সময় ফুরিয়ে এসেছে‘ বলে উল্লেখ করেছিলেন। সিরিয়ার মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থার ডিরেক্টর রামি আবদেল রহমান জানান, প্রতি দিনই রাকায় আটকে থাকা বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবুও ওই এলাকায় এখনও ২৫ হাজার মানুষ আটকে রয়েছেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। নিজেদের সুবিধা মতো ওই মানুষগুলোকেই সেনাবাহিনীর সামনে ঢালের মতো ব্যবহার করছে আইএস জঙ্গিরা। দু’পক্ষের মাঝে পড়ে প্রাণ হারাচ্ছে তারা।
রামি বলেন, ‘রাকা অভিযানে বেশি সময় লাগার পেছনে এটাও একটা কারণ। মানুষের যাতে ক্ষতি না হয়, তা এক রকম নিশ্চিত করেই এগোতে হচ্ছে সেনাদের। মৃতের সংখ্যা বাড়ার আরও বড় কারণ হল, জনবহুল এলাকায় বিমান হামলা।’ তার মতে, যে সমস্ত এলাকায় জঙ্গি ঘাঁটি রয়েছে, তার আশপাশে রয়েছে জনবসতি। ফলে আকাশ থেকে হামলা চালালে তাতে সাধারণ মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়।
সিরিয়ার অন্য একটি সংস্থা জানাচ্ছে, ২০১৪ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত মার্কিন বিমান হামলার জেরে ইরাক ও সিরিয়ায় ৪৯০০ থেকে ৭৫০০ মানুষ নিহত হয়েছে। যৌথ বাহিনীর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬২৪ জন।