ঢাকা ০১:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সৌদির হাতে পরমাণু প্রযুক্তি দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

অন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

মার্কিন কংগ্রেসের অনুমোদন না নিয়ে সৌদির আরবের কাছে পরমাণু প্রযুক্তি বিক্রি করতে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। খবর আলজাজিরা ও এনবিসি নিউজের।

কংগ্রেস কমিটির নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন আইন লঙ্ঘন করে পরমাণু প্রযুক্তি হস্তান্তর করতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

২৪ পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের নজরদারি এবং সংস্কার কমিটি। এতে ট্রাম্প সরকারের তৎপরতা তুলে ধরা হয়। সৌদিতে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরিতে মার্কিন কোম্পানিগুলোর প্রতি রিয়াদের আনুকূল্য লাভের আশায় এ সব তৎপরতা চালানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এতে পরমাণু অস্ত্র প্রযুক্তি বিস্তারের ঝুঁকি বেড়েছে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রযুক্তি দিয়ে সৌদি আরব ভবিষ্যতে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে পারে। এতে করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পরমাণু অস্ত্রের প্রতোযোগিতা শুরু হয়ে যাবে।

সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের আমলে পরমাণু প্রযুক্তি দেওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা। কারণ সৌদি যুবরাজের নির্দেশেই ইয়েমেন যুদ্ধ ও সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে।

খবরে বলা হয়, সৌদি আরবকে পরমাণু প্রযুক্তি দেয়ার উদ্যোগটি নিয়েছেন সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফিন। তদন্তকারীদের আশঙ্কা, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিষয়টি এখনও বিবেচনা করছেন।

বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের তদন্ত কমিটি গত মাস থেকে বলছে, বেশ কয়েকজন তথ্য ফাঁসকারী হুইশলব্লোয়ারর্স এ ব্যাপারে স্বার্থের সংঘাত নিয়ে হুঁশিয়ারি করেছে। যা মার্কিন আইনের লঙ্ঘন বলে মনে করা হচ্ছে।

এ সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে হোয়াইট হাউসের কাছে অনুরোধ করেছেন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের পর্যবেক্ষণ ও সংস্কারবিষয়ক কমিটির প্রধান ইলিজাহ কামিংস।

ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার প্রথম দুই মাসের মধ্যে তার জামাতা ও হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টা জারেড কুশনারের সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বৈঠক সম্পর্কে তথ্য চাওয়া হয়েছে।

কমিটির একটি প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবকে স্পর্শকাতর প্রযুক্তি হস্তান্তরে ব্যক্তিগত বাণিজ্যিক স্বার্থ আগ্রাসীভাবে কাজ করেছে।

‘সৌদি আরবে পারমাণবিক স্থাপনা পরিচালনা এবং তা নির্মাণের ঠিকাদারির মাধ্যমে শত শত কোটি ডলার পেতে এসব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ পদ্ধতির আশ্রয় নিয়েছে। সে ক্ষেত্রে এখনও স্পষ্টভাবেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে।

অনুচ্ছেদ ১২৩ চুক্তিগুলোতে ঐকমত্যে না পৌঁছালে যুক্তরাষ্ট্র কোনো দেশকে বৈধভাবে পরমাণু প্রযুক্তি হস্তান্তর করতে পারে না। এতে শান্তিপূর্ণ জ্বালানি ব্যবহারের নিশ্চয়তার কথা বলা হয়েছে।

প্রতিনিধি পরিষদের আশঙ্কা মার্কিন প্রযুক্তিকে পরমাণু অস্ত্র নির্মাণের দিকে নিয়ে যেতে পারে সৌদি আরব। বিশ্বের শীর্ষ তেল উৎপাদনকারী দেশটির সঙ্গে আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের উত্তেজনা ইতিমধ্যে চরম পর্যায়ে চলে গেছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগর সেন্ট্রাল স্কুলের পরীক্ষার ফল প্রকাশ ও পুরষ্কার বিতরণ

সৌদির হাতে পরমাণু প্রযুক্তি দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় ০৭:৩৭:০২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
অন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

মার্কিন কংগ্রেসের অনুমোদন না নিয়ে সৌদির আরবের কাছে পরমাণু প্রযুক্তি বিক্রি করতে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। খবর আলজাজিরা ও এনবিসি নিউজের।

কংগ্রেস কমিটির নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন আইন লঙ্ঘন করে পরমাণু প্রযুক্তি হস্তান্তর করতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

২৪ পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের নজরদারি এবং সংস্কার কমিটি। এতে ট্রাম্প সরকারের তৎপরতা তুলে ধরা হয়। সৌদিতে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরিতে মার্কিন কোম্পানিগুলোর প্রতি রিয়াদের আনুকূল্য লাভের আশায় এ সব তৎপরতা চালানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এতে পরমাণু অস্ত্র প্রযুক্তি বিস্তারের ঝুঁকি বেড়েছে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রযুক্তি দিয়ে সৌদি আরব ভবিষ্যতে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে পারে। এতে করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পরমাণু অস্ত্রের প্রতোযোগিতা শুরু হয়ে যাবে।

সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের আমলে পরমাণু প্রযুক্তি দেওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা। কারণ সৌদি যুবরাজের নির্দেশেই ইয়েমেন যুদ্ধ ও সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে।

খবরে বলা হয়, সৌদি আরবকে পরমাণু প্রযুক্তি দেয়ার উদ্যোগটি নিয়েছেন সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফিন। তদন্তকারীদের আশঙ্কা, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিষয়টি এখনও বিবেচনা করছেন।

বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের তদন্ত কমিটি গত মাস থেকে বলছে, বেশ কয়েকজন তথ্য ফাঁসকারী হুইশলব্লোয়ারর্স এ ব্যাপারে স্বার্থের সংঘাত নিয়ে হুঁশিয়ারি করেছে। যা মার্কিন আইনের লঙ্ঘন বলে মনে করা হচ্ছে।

এ সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে হোয়াইট হাউসের কাছে অনুরোধ করেছেন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের পর্যবেক্ষণ ও সংস্কারবিষয়ক কমিটির প্রধান ইলিজাহ কামিংস।

ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার প্রথম দুই মাসের মধ্যে তার জামাতা ও হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টা জারেড কুশনারের সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বৈঠক সম্পর্কে তথ্য চাওয়া হয়েছে।

কমিটির একটি প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবকে স্পর্শকাতর প্রযুক্তি হস্তান্তরে ব্যক্তিগত বাণিজ্যিক স্বার্থ আগ্রাসীভাবে কাজ করেছে।

‘সৌদি আরবে পারমাণবিক স্থাপনা পরিচালনা এবং তা নির্মাণের ঠিকাদারির মাধ্যমে শত শত কোটি ডলার পেতে এসব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ পদ্ধতির আশ্রয় নিয়েছে। সে ক্ষেত্রে এখনও স্পষ্টভাবেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে।

অনুচ্ছেদ ১২৩ চুক্তিগুলোতে ঐকমত্যে না পৌঁছালে যুক্তরাষ্ট্র কোনো দেশকে বৈধভাবে পরমাণু প্রযুক্তি হস্তান্তর করতে পারে না। এতে শান্তিপূর্ণ জ্বালানি ব্যবহারের নিশ্চয়তার কথা বলা হয়েছে।

প্রতিনিধি পরিষদের আশঙ্কা মার্কিন প্রযুক্তিকে পরমাণু অস্ত্র নির্মাণের দিকে নিয়ে যেতে পারে সৌদি আরব। বিশ্বের শীর্ষ তেল উৎপাদনকারী দেশটির সঙ্গে আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের উত্তেজনা ইতিমধ্যে চরম পর্যায়ে চলে গেছে।